Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নিজেদের রিপোর্টেই কাঠগড়ায় পুরভবন

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের কোথায় কোথায় জঞ্জাল কিংবা জল জমে থাকছে, কোথায় মশার বংশবিস্তারের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তা নিয়মিত ঘুরে দেখেন পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা।

আঁতুড়: এ ভাবেই জঞ্জাল পড়ে রয়েছে পুরভবনের পাশে। নিজস্ব চিত্র

আঁতুড়: এ ভাবেই জঞ্জাল পড়ে রয়েছে পুরভবনের পাশে। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০২:২৮
Share: Save:

সারা শহরের ক্ষেত্রে যে নিয়ম খাটে, কলকাতা পুরসভার সদর দফতরের ক্ষেত্রে কি তা প্রযোজ্য নয়? প্রশ্নটা তুলে দিল খোদ পুরসভারই অভ্যন্তরীণ একটি রিপোর্ট। পুর স্বাস্থ্য দফতরের তৈরি করা ওই রিপোর্টই বলছে, পুরভবন ও তার আশপাশে মশার আঁতুড়ের পরিবেশ তৈরি হয়ে রয়েছে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের কোথায় কোথায় জঞ্জাল কিংবা জল জমে থাকছে, কোথায় মশার বংশবিস্তারের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তা নিয়মিত ঘুরে দেখেন পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। সেই অনুযায়ী ওয়ার্ড-ভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি হয়। সম্প্রতি ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে ২৬টি জায়গায় জমা জল, জঞ্জাল, বন্ধ নর্দমা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওই রিপোর্টে রয়েছে পাঁচ নম্বর এস এন ব্যানার্জি রোডের বাড়িটির কথাও। বলা হয়েছে, জঞ্জাল জমে, নর্দমা আটকে ওই বাড়িটি মশার সম্ভাব্য আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। সারা বছর ধরেই ওই এলাকায় ময়লা জমে থাকে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ওই বাড়িটিই কলকাতা পুরসভার সদর দফতর।

ওই রিপোর্ট পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরে জমা পড়ার পরে পুরভবন ও তার আশপাশের এলাকায় সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু সোমবারও দেখা গেল, পুরভবন সংলগ্ন ফুটপাত ভেসে যাচ্ছে নর্দমা উপচে পড়া নোংরা জলে। পথচারীদের যাতায়াত করার উপায় নেই। মশা ও মাছি ভনভন করছে দুপুরবেলাতেও। পুরভবনের পূর্ব দিকের ফুটপাত ঘেঁষে গাড়ি রাখার জায়গাটি দেখলে মনে হয়, সেখানে বহু দিন কোনও সাফাইকর্মীর পা পড়েনি। এ দিন দুপুরেও জল জমে ছিল পুরভবনের আনাচকানাচে।

সাধারণ কোনও নাগরিকের বাড়িতে গিয়ে মশার বংশবিস্তারের পরিবেশ দেখলে তাঁকে নোটিস ধরায় পুরসভা। জরিমানাও করা হয় অনেক ক্ষেত্রে। ওই জরিমানার টাকা এক লাফে অনেকটা বাড়ানোর জন্য বিধানসভায় বিলও পাশ করানো হয়েছে। পুরভবনের এই হালের জন্য কাকে নোটিস দেওয়া হবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন পুর স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারেরা। পুরসভা নিজে কবে সচেতন হবে, উঠেছে সেই প্রশ্নও। এক কর্তার প্রশ্ন, ‘‘আমরা নিজেরা নিয়ম না মেনে অন্যদের মানতে বললে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই মানুষের মনে প্রশ্ন উঠবে।’’

স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর গোপাল সাহার আবার দাবি, ওই রিপোর্টটি গত বছরের। গত বছর ওয়ার্ডের যে সমস্ত এলাকায় ধারাবাহিক ভাবে জঞ্জাল বা জল জমে ছিল, তার ভিত্তিতে ওই রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী গত জানুয়ারি থেকে ঘুরে ঘুরে প্রচারও চালানো হচ্ছে। পুরসভার নথি অবশ্য স্পষ্টই বলছে, রিপোর্টটি গত ৬ ফেব্রুয়ারি তৈরি হয়েছে। জমা পড়েছে সম্প্রতি। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় গোটা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে শুধু বলেছেন, ‘‘মেয়র সব ব্যাপারে মন্তব্য করেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE