E-Paper

কাজের লোভ দেখিয়ে অপহরণের নালিশ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২০ দিন আগে আলমগীরকে মাছের ভেড়িতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিলিগুড়ি নিয়ে যায় তাঁরপরিচিত, বনগাঁর ভিড়ে গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:০৩

—প্রতীকী চিত্র।

কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এক ব্যক্তিকে বনগাঁ থেকে কোচবিহারে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগ উঠল। বনগাঁ থানার পুলিশ ও কোচবিহার জেলা পুলিশের যৌথ তৎপরতায় রবিবার আলমগীর মুন্সি নামে বনগাঁর হরিদাসপুরের ওই বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়েছে। বনগাঁ পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, “কোচবিহার পুলিশের সহযোগিতায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের ধরতে তল্লাশি চলছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২০ দিন আগে আলমগীরকে মাছের ভেড়িতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিলিগুড়ি নিয়ে যায় তাঁরপরিচিত, বনগাঁর ভিড়ে গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম মণ্ডল। সেখানে নিয়ে গিয়ে সাদ্দাম তাঁকে সুজন বর্মণ ও সুমন বর্মণ নামে দু’জনেরহাতে তুলে দেয়। তারাই আলমগীরকে পৌঁছে দেয় কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার রাজপুরগ্রামের বাসিন্দা একরামুল হকের বাড়িতে।

অভিযোগ, সেখানে কয়েক দিন কাজ করলেও মজুরি দেওয়া হয়নি। বাড়ি ফিরতে চাওয়ায় পরিস্থিতি বদলে যায়। আলমগীরের অভিযোগ, “এক সপ্তাহ পরে বাড়ি চলে যাব বলতেই একরামুল আমাকে ঘরে আটকে রাখে। ফোন কেড়ে নেয়। বলে, আগে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। পরে ৫ লক্ষে নামায়। টাকা না দিলে ছাড়া হবে না বলে।”

আলমগীর জানান, তিনি একরামুলের ফোন থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিবারের সদস্যেরা অনলাইনে কয়েক হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু তবুও মুক্তি মেলেনি। শেষমেশ আলমগীরের পরিবার বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

তদন্তে নামে পুলিশ। ফোন ট্র্যাকিং ও স্থানীয় সূত্রের সাহায্যে আলমগীর কোথায় আছে তা খুঁজে বের করা হয়। দিন চারেক আগেবনগাঁ পুলিশের একটি দল কোচবিহারে পৌঁছয়। কোতোয়ালি থানার পুলিশের সাহায্য নিয়ে চান্দামারির রাজপুর গ্রামে অভিযান চালিয়েএকরামুলের বাড়ি থেকে আলমগীরকে উদ্ধার করা হয়। তবে একরামুল পালিয়ে যায়।

বাড়ি ফিরেও আতঙ্ক কাটেনি আলমগীরের। তিনি বলেন, “সাদ্দামের কলাবাগানে আগে কাজ করতাম। আমাকে মাছের ভেড়িতে দিনে এক হাজার টাকা মজুরিতে কাজ দেবে বলে নিয়ে যায়। কিন্তু ওরা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আটকে রেখে মানসিক চাপ দিত।” শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছিল। ঠিক মতো খাবার দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আলমগীরের মেয়েমৌসুমী বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। এত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। পুলিশ না থাকলে বাবা হয়তো বাঁচতেন না।”

পুলিশ জানিয়েছে, অবৈধ আটক, প্রতারণা ও মুক্তিপণ তোলার অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। সাদ্দাম, সুজন, সুমন এবং মূল অভিযুক্ত একরামুল— সকলের বিরুদ্ধেই মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

কোচবিহার জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, “বনগাঁ পুলিশ আলমগীরকে উদ্ধারের জন্য আমাদের সহযোগিতা চেয়েছিল। আমরা তাদের সঙ্গে অভিযানেছিলাম। কিন্তু একরামুলকে পাওয়া যায়নি। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।” রাজপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, একরামুল অল্প সময়ের মধ্যে আর্থিক ভাবে অনেকটাই উন্নতি করেছে। মাঝেমধ্যে বাইরে যাতায়াত করত। তার কাছে বাইরের লোকেরও যাতায়াত আছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kidnap Bangaon Cooch Behar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy