মোটা বেতনের চাকরির খোঁজ করেছিলেন অনেক দিন ধরেই। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। তার মধ্যেই ফেসবুক থেকে মেলে এক চাকরির খোঁজ। তখনও বুঝতে পারেননি, চাকরি নয়, আসলে প্রতারণার নতুন ছকে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। যদিও শেষপর্যন্ত সেই ফাঁদে পা না-দিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন টালিগঞ্জের বাসিন্দা অরুণ মুখোপাধ্যায়।
৫৭ বছর বয়সি অরুণ ফেসবুক থেকে চাকরির খোঁজ পেয়ে যোগাযোগ করেন। কথা হয় ফোনেও। তবে তার আড়ালে ছিল প্রতারকেরা। অরুণের বয়ান অনুযায়ী, ফোন করে তাঁর যাবতীয় নথি চাওয়া হয়। সেই নথি দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা ডেকে পাঠানো হয় অরুণকে। সেখানেই তাঁর থেকে যাবতীয় নথি সংগ্রহ করা হয়। জানানো হয়, ‘ম্যাডাম’ আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন! কে এই ম্যাডাম তা জানানো হয়নি। যদিও পরে ‘ম্যাডাম’ পরিচয় দিয়ে এক জন ফোন করে চাকরি পাকা হওয়ার কথা জানান অরুণকে।
যদিও চাকরি পেতে গেলে হেপাটাইটিস এবং এইচআইভি পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথাও বলা হয় অরুণকে। সন্দেহ হওয়ায় তিনি জানান, তাঁর কাছে এত টাকা নেই, যে এই সব পরীক্ষা করাবেন। আর কী ধরনের চাকরি যে তার জন্য এইচআইভি-র মতো পরীক্ষার প্রয়োজন? তিনি চাকরি চান না। তখনই তাঁর ফাইল থানায় পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে জানান অরুণ। ঘটনাটি গত ২২ নভেম্বরের।
আরও পড়ুন:
হুমকির পরেও চুপচাপই ছিলেন অরুণ। কোনও পদক্ষেপ করেননি। তবে বৃহস্পতিবার আবারও একটি ফোন পান অরুণ। ফোনের ও প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি জানান, তাঁর সব ফাইল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে টালিগঞ্জ থানায়। জারি হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানাও। আধঘণ্টার মধ্যে টালিগঞ্জ থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করতে তাঁর বাড়ি যাচ্ছে। তবে পুলিশি ঝামেলা থেকে বাঁচার উপায় রয়েছে। যদি নির্দিষ্ট এক অ্যাকাউন্টে সাড়ে সাত হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন, রেহাই মিলবে। হুমকির পরেও বিচলিত না-হয়ে থানায় যোগাযোগ করেন অরুণ পুলিশকে গোটা ঘটনা জানান। অভিযোগও দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে টালিগঞ্জ থানার পুলিশ।