—প্রতীকী ছবি।
বিচারাধীন এক বন্দির রহস্য-মৃত্যুতে পুলিশের বিরুদ্ধে মৃতের পরিবারের দায়ের করা খুনের অভিযোগ খারিজ করে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিল সিআইডি। যদিও সেই চূড়ান্ত রিপোর্টে লালবাজারের সাত জন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ওই বন্দির উপরে বলপ্রয়োগ এবং আইন না মেনে কাজ করার অভিযোগ (ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৬, ৩৫২ এবং ৩৪ ধারা) আনা হয়েছে। অভিযুক্ত সাত জন ঘটনার সময়ে সেন্ট্রাল লক-আপে কর্মরত ছিলেন। তবে, পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তা আদালতে গ্রাহ্য নয় বলেই ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। ওই চূড়ান্ত রিপোর্টে রেহাই দেওয়া হয়েছে লালবাজারের এক অফিসার-সহ চার জনকে, যাঁদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছিল। গত সপ্তাহে আলিপুর আদালতে সিআইডি-র তরফে ওই চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।
২০১৬-র ৬ নভেম্বর নিউ আলিপুর থানা একবালপুরের বাসিন্দা ফারদিন খানকে গ্রেফতার করে। এক রাত ওই থানার লক-আপেই ছিলেন তিনি। আদালতের নির্দেশে এর পরে ন’দিন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন ফারদিন। তালতলা থানার অন্য একটি মামলায় তাঁকে হেফাজতে নেয় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ছিনতাই দমন শাখা। ১৬ নভেম্বর রাতে ফারদিনকে রাখা হয় লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপে। কিন্তু পরদিন লালবাজার থেকে আদালত হয়ে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হলে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। ১৮ নভেম্বর রাতে সেখানে ফারদিন খান ওরফে ইজাজ নামে ওই বন্দির মৃত্যু হয়।
এর তিন দিন পরে ফারদিনের মা ইমতিয়াজ বেগম এবং এক বন্ধু লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের এক ওসি-সহ ১১ জন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ভবানীপুর থানায়। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও তাতে খুশি না হয়ে হাই কোর্টে সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা করেন ফারদিনের মা। হাই কোর্ট সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, আদালত তিন জন শিক্ষক-চিকিৎসককে নিয়ে কমিটি গড়ে দেয়, যাঁরা ফারদিনের ময়না তদন্তের রিপোর্ট ফের পর্যালোচনা করবেন।
সিআইডি তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার জেরেই ফারদিনের মৃত্যু হয়। দেহে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও সেগুলি মৃত্যুর কারণ নয়। সেন্ট্রাল লক-আপের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সেখানে পুলিশকর্মীরা লাঠি দিয়ে আঘাত করছেন ফারদিনকে। যদিও সেই মারের জন্য ফারদিনের মৃত্যু হয়নি বলেই বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই সাত পুলিশকর্মীকে শনাক্ত করা হয়। তাঁরা দোষ স্বীকার করেছেন বলে সিআইডি জানিয়েছে। আদালতে ওই চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে। এ বার ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy