প্রতীকী ছবি।
তাঁর ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম নয়, স্বামীর রেখে যাওয়া ফ্ল্যাট। ছেলে-বৌমার সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়ে সেই ফ্ল্যাটেই ফিরে এলেন ৭৩ বছরের বৃদ্ধা।
বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়নি ঠিকই। কিন্তু অভিযোগ, ছেলে-বৌমার দুর্ব্যবহারের সামনে প্রাথমিক ভাবে ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন বাগুইআটির অশ্বিনীনগরের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা। মা-ছেলের মধ্যে গত এক বছর মামলা চলেছে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট ওই মামলার রায় দিয়ে বাগুইআটি থানাকে নির্দেশ দিয়েছিল, বৃদ্ধাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাড়িতে ঢুকিয়ে, ছেলে-বৌকে সেখান থেকে বার করে দিতে হবে। বুধবার সেই নির্দেশ কার্যকর করে বৃদ্ধাকে তাঁর ফ্ল্যাটে পৌঁছে দিল পুলিশ। ঘটনা নিয়ে অবশ্য কোনও পক্ষই মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বাগুইআটি থানা সূত্রের খবর, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই ছেলের সংসারে ব্রাত্য হতে শুরু করেছিলেন বৃদ্ধা মা। স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁর পেনশনও পেতেন।
ছেলের রোজগারের উপরে নির্ভরশীল ছিলেন না। কিন্তু অভিযোগ, তা সত্ত্বেও নানা ভাবে বৃদ্ধাকে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছিল। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘ছেলের বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই বৃদ্ধার সংসারে অশান্তি শুরু হয়। তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।’’ পুলিশ
জানাচ্ছে, ২০১৫ সালে বৃদ্ধা কীটনাশক খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ছেলে এক দিন মাত্র তাঁকে দেখতে গিয়েছিল। ছেলে অবশ্য মায়ের অভিযোগ
মানতে চায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর পরে এক দিন বৃদ্ধার হেঁশেল আলাদা হয়ে যায়। পুত্রবধূ এবং বৃদ্ধার রান্নার সময়ও ছিল আলাদ। বৃদ্ধা পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর রান্নার সময়ে পুত্রবধূ বাড়ির পরিচারিকাকে রান্নাঘরে ঢুকিয়ে বাধা সৃষ্টি করত। শেষে বৃদ্ধা বাধ্য হয়ে বারান্দায় তাঁর রান্নার ব্যবস্থা করেন।
বাগুইআটি থানার আইসি কল্লোল ঘোষ জানান, বৃদ্ধার প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বেশির ভাগ সময়ে তাঁকে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খাইয়েছেন। আইসি বলেন, ‘‘আমরা আদালতের রায় মেনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছেলেকে বাড়ি ছাড়ার নোটিস দিয়েছিলাম। এ দিন বৃদ্ধাকে ফ্ল্যাটে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ওঁর ছেলেও বাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন। আদালতকে নির্দেশ কার্যকর করার রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’
স্থানীয়েরা জানান, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বৃদ্ধা আত্মীয়দের বাড়িতেই থাকতেন। গত বছর কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন তিনি। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে আমাদের মনে হয়েছিল, দুর্ব্যবহারের সামনে তিনি হেরে যেতে চাননি। এ দিন বেলেঘাটায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তিনি অশ্বিনীনগরে পৌঁছন। আমরা তাঁকে ফ্ল্যাটে ঢুকিয়ে দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy