Advertisement
E-Paper

দিনেদুপুরে বাড়ি ঢুকে বৃদ্ধাকে মারধর করে লুঠ

বাড়ির মূল দরজা খোলাই ছিল। ভিতরে একা বৃদ্ধা গৃহকর্ত্রী। দুপুরের খাওয়া সেরে সবে নিজের ঘরে ঢুকেছেন তখন। অভিযোগ, আচমকাই পিছন থেকে তাঁকে ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয় দুই যুবক। কিছু বোঝার আগেই বুকে-পেটে এলোপাথাড়ি ঘুষি মারতে থাকে তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৪
লতিকা মিত্র

লতিকা মিত্র

বাড়ির মূল দরজা খোলাই ছিল। ভিতরে একা বৃদ্ধা গৃহকর্ত্রী। দুপুরের খাওয়া সেরে সবে নিজের ঘরে ঢুকেছেন তখন। অভিযোগ, আচমকাই পিছন থেকে তাঁকে ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয় দুই যুবক। কিছু বোঝার আগেই বুকে-পেটে এলোপাথাড়ি ঘুষি মারতে থাকে তারা। চিৎকারের চেষ্টা করলে উড়ে আসে প্রাণে মারার হুমকি। বালিশ দিয়ে তাঁর মুখ চাপা দেওয়ারও চেষ্টা চলে। এ সবে ভয়ে পেয়ে বৃদ্ধা খানিকটা কাবু হতেই তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় দেরাজের চাবি এবং হাতের সোনার চুড়ি। তার পরে দেরাজ থেকে কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় ওই দু’জন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এমনই ঘটনা ঘটেছে বেলেঘাটার কবি সুকান্ত সরণিতে। দুষ্কৃতী-হামলায় গুরুতর জখম হয়ে শিয়ালদহের বি আর সিংহ হাসপাতালে ভর্তি লতিকা মিত্র (৮৬) নামে ওই বৃদ্ধা।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, হামলার সময়ে সত্তর হাজার টাকার খোঁজ করছিল ওই দুই যুবক। পুলিশ জানায়, কিছু দিন আগে আত্মীয়ের বিয়ে উপলক্ষে ব্যাঙ্ক থেকে কিছু টাকা তোলা হয়েছিল ওই বাড়িতে। ফলে তদন্তকারীদের অনুমান, মিত্র পরিবারের অতি পরিচিত কারও থেকে সে টাকার কথা শুনে রীতিমতো ছক কষেই ওই বাড়িতে আসে দুষ্কৃতীরা।

পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুরে হামলার সময়ে বৃদ্ধার ছেলে তুহিনবাবু পোস্ট অফিসে গিয়েছিলেন। লতিকাদেবীর সঙ্গে বাড়িতে ছিলেন এক পরিচারিকা। দুপুর দু’টো নাগাদ খাবার তৈরি করে মূল দরজা না আটকেই চলে যান তিনিও। বৃদ্ধার অভিযোগ, আড়াইটে নাগাদ খাওয়া শেষ করে ঘরে ঢুকতেই অঘটন। তখনই বছর কুড়ি-পঁচিশের দুই দুষ্কৃতী ঘরে ঢুকে তাঁর উপরে হামলা চালিয়ে ৭০ হাজার টাকার খোঁজ করতে থাকে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই বাড়ির মূল তালার চারটি চাবি রয়েছে। তুহিনবাবুর কাছে একটি থাকে। বাকি তিনটি থাকে ওই পরিচারিকা, লতিকাদেবীর প্রতিবেশী বাসুদেববাবু এবং বৃদ্ধার এক আত্মীয়ের কাছে। সেই আত্মীয় আগে ওই বাড়িতেই থাকতেন। এখন অন্যত্র চলে গিয়েছেন। পুলিশ জেনেছে, ঘটনার দিন রাজ্যের বাইরে বেড়াতে গিয়েছিলেন ওই আত্মীয়। পুলিশ আরও জানায়, সকাল ও দুপুরে দু’বার কাজে আসেন ওই পরিচারিকা। এ দিন রান্না শেষ করে চলে যাওয়ার সময়ে মূল দরজা তালাবন্ধ করার কথা ছিল তাঁরই। কিন্তু পরিচারিকা তা করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কেন? পরিচারিকার দাবি, তুহিনবাবু তাড়াতাড়ি চলে আসবেন অনুমান করেই দরজা খোলা রেখে যান তিনি। তুহিনবাবুর অবশ্য পোস্ট অফিসের কাজ সেরে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ জেনেছে, দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে লতিকাদেবী বারান্দায় এসে প্রতিবেশীদের ডাকেন। বৃদ্ধার প্রতিবেশী বাসুদেব শূর শুক্রবার জানান, লতিকাদেবী বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ হামাগুড়ি দিয়ে বারান্দায় এসে তাঁর স্ত্রীকে ডাকেন। তাঁরাই গিয়ে উদ্ধার করেন আহত লতিকাদেবীকে। এর পরে খবর যায় পুলিশে। তদন্তকারীরা জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরেও তুহিনবাবু বাড়িতে ছিল না। পরে লুঠের কথা জানতে পেরে তিনি ফিরে এসে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, লতিকাদেবীর খুব পরিচিত কারও থেকে বাড়ির সমস্ত তথ্য নিয়েই সত্তর হাজার টাকার খোঁজে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। বেলেঘাটা থানার পুলিশ ও লালবাজারের ডাকাতি দমন শাখার গোয়েন্দারা ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

Booty Elderly lady Beat Anti Socials
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy