প্রতীকী ছবি।
ভাড়া বাড়িয়ে, জরিমানার হুঁশিয়ারি দিয়েও অ্যাপ-ক্যাব চালকদের দিয়ে যে কাজ করানো যায়নি, সেটাই এখন করিয়ে নিচ্ছে শহরের ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই তাপমাত্রা! গরমের আঁচেই অ্যাপ-ক্যাবে এসি চালানো নিয়ে গত কয়েক দিনে সুর নরম চালকদের অনেকেরই।
চৈত্রের শুরু থেকে তাপমাত্রার পারদ বাড়তে শুরু করলেও এসি চালানোর প্রশ্নে অ্যাপ-ক্যাব চালকদের কোনও ভাবেই রাজি করানো যায়নি। বয়স্ক বা অসুস্থ যাত্রীদের গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত হলেও এসি ছাড়াই এত দিন যাতায়াত করতে হয়েছে তাঁদের। বহু অনুরোধ-উপরোধেও কাজ হয়নি। ভাড়া বাড়িয়ে, জরিমানার হুঁশিয়ারি দিয়েও অনড় অ্যাপ-ক্যাব চালকদের অবস্থান বদলানো যায়নি। ডিজ়েলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে প্রাপ্য ভাড়া থেকে সংস্থার কমিশন বাদ দিয়ে হাতে পাওয়া টাকার পরিমাণ নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না চালকেরা। এমনকি, অতিরিক্ত চাহিদার সময়ে যাত্রীর পকেট থেকে সার্জ গুনতে হলেও এসি নিয়ে অনমনীয় অবস্থান ছিল চালকদের। তাই এসি বন্ধ রেখে, জ্বালানি
বাঁচিয়ে বাড়তি লাভের চেষ্টা করে গিয়েছেন অ্যাপ-ক্যাব চালকেরা। কিন্তু গত কয়েক দিনে শহরের তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি সেই ছবিটা বদলে দিয়েছে। ফুটন্ত দুপুরে অ্যাপ-ক্যাবে উঠে ঠান্ডা হাওয়া খাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন যাত্রীরা। সোমবার দুপুরে ভবানীপুর থেকে সন্তোষপুরের সার্ভে পার্ক যেতে অ্যাপ-ক্যাবে উঠে এসি চলতে দেখেন মৈত্রেয়ী পাল। বিমানবন্দর, হাওড়া স্টেশন থেকে ফেরা যাত্রীদের একাংশেরও এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে গত কয়েক দিনে।
হঠাৎ এই মত বদলের কারণ? অ্যাপ-ক্যাব চালকেরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনের দুরন্ত গরম এবং শুষ্ক হাওয়ার দাপটে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, গাড়িতে দু’-তিন ঘণ্টার বেশি সময় কাটানো কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে তাঁদের পক্ষে। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাঁরাও। তাই হাঁসফাঁস করা গরমে নিজেরাই এসি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। সন্তোষ প্রসাদ নামে এক চালকের কথায়, ‘‘গরম এতটাই বেশি যে, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমে ট্রিপের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়লে তো আরও বড় ক্ষতি। তাই বাধ্য হয়ে এসি চালাচ্ছি।’’
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা তাদের কমিশনের হার কমালে চালকদের প্রাপ্য বাড়বে। তাতে এই সমস্যার খানিকটা সুরাহা হতে পারত।’’ এআইটিইউসি-র অ্যাপ-ক্যাব সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলুক অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি, তা হলে চালকেরা নিশ্চয়ই এসি চালাবেন। নির্দেশিকা কার্যকর না হওয়ার কারণেই সংঘাত বাড়ছে।’’
তবে যাত্রীদের একাংশের মতে, বাড়তি লাভের খোঁজেই চালকেরা এত দিন এমন আচরণ করেছেন। কিন্তু প্রবল গরমে যাত্রীদের মতো তাঁদেরও প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ায় এখন লাভের পথ ছেড়ে এসি চালাচ্ছেন চালকেরা। অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির অবশ্য দাবি, ভাড়ার মধ্যেই এসি-র খরচ ধরা থাকে। চালকদের অসহযোগিতাতেই এসি থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন যাত্রীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy