Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
State news

অর্চনাকে খুন করে বিষ খেল বলরাম..! পিছনে কি অন্য কোনও সম্পর্ক..?

উল্টোডাঙা থেকে নিখোঁজ অর্চনা পালংদার হত্যাকাণ্ডে উঠে আসছে একের পর একনতুন তথ্য। শনিবার নোনাডাঙার খালের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি পুরুষদেহটি যেঅর্চনার প্রেমিক বলরাম কেশরীরতদন্তকারীরা সে বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত।

অর্চনা পালংদার এবং বলরাম কেশরী। —ফাইল চিত্র।

অর্চনা পালংদার এবং বলরাম কেশরী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:১০
Share: Save:

উল্টোডাঙা থেকে নিখোঁজ অর্চনা পালংদার হত্যাকাণ্ডে উঠে আসছে একের পর একনতুন তথ্য। শনিবার নোনাডাঙার খালের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি পুরুষদেহটি যেঅর্চনার প্রেমিক বলরাম কেশরীরতদন্তকারীরা সে বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত।ওই দেহটিতে বিষের অস্তিত্বও মিলেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মৃতের পাকস্থলীতে বিষ পাওয়া গিয়েছে। দেহে অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই।তদন্তকারীদের অনুমান, ওই ব্যক্তি বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।

সেক্ষেত্রে নিউমার্কেটের হোটেল কর্মী ধৃত আশিস যাদবের বয়ানের সত্যতা খুঁজে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কারণ আশিস গ্রেফতার হওয়ার পর জেরায় দাবি করেছিলেন, তিনি বলরাম এবং অর্চনাকে হোটেলের ২ নম্বর ঘরে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। আশিসের দাবি, দু’জনকে দেখে মনে হয়েছিল, বলরাম অর্চনাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল। তারপর সে নিজেও আত্মহত্যা করে। এক তদন্তকারী বলেন,“আশিসকে জেরা করেই আমরা নোনাডাঙা থেকে বস্তাবন্দি দেহটি উদ্ধার করি।” পুলিশকে আশিস জানিয়েছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে একটি অ্যাপ ক্যাবের ডিকিতে চাপিয়ে দুটি দেহ বস্তায় ভরে খালের পাশে নিয়ে যায় সে। পুলিশ সেই অ্যাপ ক্যাবের চালকেরও খোঁজ করছে।

আরও পড়ুন: মালিক জানতেন না! ঝুঁকি নিয়ে কেন দেহ লোপাট করলেন অস্থায়ী কর্মীরা?

অন্যদিকে শনিবার বলরামের পরিবারকে খবর দেওয়া হলেও, বলরামের স্ত্রী রবিবার এসে পৌঁছতে পারেননি। সোমবার তিনি এসে দেহ সনাক্ত করবেন।তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। এক আধিকারিক বলেন,“বলরামের স্ত্রী অর্চনার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিল। কারণ বলরাম এবং অর্চনা দূর সম্পর্কের আত্মীয়। এ বিষয় নিয়ে বলরামের স্ত্রীর সঙ্গে অর্চনার ফোনে কথাও হয়েছিল।” সে কারণে বলরামের স্ত্রীকেও জেরা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন: বিদেশি লগ্নির টোপ, কলকাতায় সক্রিয় ‘কর্পোরেট প্রতারণা চক্র’

তবে গোটা তদন্তে পুলিশ হোঁচট খাচ্ছে দুটি বিষয়ে। প্রথমত, আটলান্টিকা হোটেলের মালিক অর্জুন কপূর পুলিশকে জানিয়েছেন, আশিস তাঁদের কর্মী নন। পুলিশ জানতে পেরেছে, আশিস ওই হোটেলে থাকতেন। সেই সূত্রেই হোটেলের টুকটাক কাজও করে দিতেন। সেই অস্থায়ী কর্মী আশিস, যাঁর বাবা পুরসভার কর্মী, তিনি হঠাৎ দেহ পাচারের মত কাজের ঝুঁকি নিলেন কেন? হোটেলের মালিকের দাবি, তাঁরা গোটা বিষয়টি আদৌ জানতেন না। অথচ আশিস জেরায় দাবি করেছেন, হোটেলের ‘বদনাম’ হবে বলেই তিনি দেহ লোপাট করেন। কিন্তু আশিস কার নির্দেশে এই কাজ করেছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। হোটেলের ম্যানেজার জয়দেব এবং কর্মী যদুর হদিশ এখনও পাননি তদন্তকারীরা। তাদের নাগাল পেলে এই রহস্য কিছুটা কাটবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

অন্যদিকে, তদন্তকারীদের দ্বিতীয় প্রশ্ন, বলরাম কেন খুন করলেন অর্চনাকে। কেনই বা নিজেও আত্মহত্যা করলেন? আর সেখানেই প্রশ্ন উঠছে, অর্চনা কী বলরাম ছাড়াও অন্য কারও সঙ্গে নতুন কোনও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন? সেই সম্ভবনা জোরাল হচ্ছে তদন্তকারীদের মনে। তাঁদের সন্দেহ, বলরামের সঙ্গেও কোনও টানাপড়েন চলছিল অর্চনার। আর তার জেরেই খুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE