E-Paper

ধৃতের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ধন্দ, দেরি জাদুঘরে গুলি-কাণ্ডের বিচারে

২০২২ সালের ৬ অগস্ট সিআইএসএফ ব্যারাকে ওড়িশার বাসিন্দা অক্ষয় একে-৪৭ থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালান বলে অভিযোগ। গুলিতে নিহত হন অক্ষয়ের সহকর্মী, ওড়িশার বাসিন্দা রঞ্জিত ষড়ঙ্গী। জখম হন আর এক জওয়ান সুবীর ঘোষ।

মিলন হালদার

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ০৭:১৫
অক্ষয় মিশ্র।

অক্ষয় মিশ্র। —ফাইল চিত্র।

কলকাতার ভারতীয় জাদুঘর চত্বরে গুলি চালানোর ঘটনায় ধৃত সিআইএসএফ জওয়ান অক্ষয়কুমার মিশ্রের বিরুদ্ধে মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ১১ অগস্ট। তিন বছর আগে, ২০২২ সালের ৬ অগস্ট সিআইএসএফ ব্যারাকে ওড়িশার বাসিন্দা অক্ষয় একে-৪৭ থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালান বলে অভিযোগ। গুলিতে নিহত হন অক্ষয়ের সহকর্মী, ওড়িশার বাসিন্দা রঞ্জিত ষড়ঙ্গী। জখম হন আর এক জওয়ান সুবীর ঘোষ। এই মামলায় সাক্ষী রয়েছেন ৬৮ জন। এখন ছ’নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। ইতিমধ্যেই সাক্ষ্য দিয়েছেন সুবীর ঘোষ।

কলকাতা হাই কোর্ট ঘুরে অক্ষয়ের মামলা এখন চলছে কলকাতা নগর দায়রা আদালতের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শ্রুতিরূপা ঘোষের এজলাসে। অভিযুক্তের আগে থেকেই মানসিক সমস্যা ছিল। চলছিল চিকিৎসাও। পুলিশি তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছিল।

আদালত সূত্রের খবর, মানসিক সমস্যার কারণে অক্ষয় বিচারের মুখোমুখি হওয়ার মতো অবস্থায় নেই— এই আর্জি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। হাই কোর্টের গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড অক্ষয়ের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জানায়, বিচারের মুখোমুখি হওয়ার মতো অবস্থা রয়েছে তাঁর। অক্ষয়ের আইনজীবী না থাকায় তাঁর মামলা লড়ছেন লিগাল এড সার্ভিসের আইনজীবীরা। তাঁদের মধ্যে এক জন বলেন, ‘‘আদালতে আমরা অক্ষয়ের সঙ্গে কথা বলার সময়ে তিনি শুনছেন কিনা, তা বুঝতে পারতাম না। কোনও প্রতিক্রিয়া থাকত না। তাই আমরা ২০২৩ সালে ফের তাঁর মানসিক অবস্থা যাচাই করার জন্য কোর্টে আর্জি জানাই। আদালত ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রির চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে দেয়। ওই বোর্ড রিপোর্ট দেয়, অবসাদে ভুগলেও বিচারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য অক্ষয় উপযুক্ত অবস্থায় রয়েছেন।’’

মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল বলছেন, ‘‘যাঁরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কাজ করেন, এমন ঘটনা এড়াতে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যেরও নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। কারও মানসিক সমস্যা হলে যে তিনি আর কোনও দিন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন না, এমন বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি সুস্থ হওয়ার পরে এই বিষয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে, বোর্ডের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত হিসাবে মানা উচিত।’’

আদালত সূত্রের খবর, ২০২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর অক্ষয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির খুন, খুনের চেষ্টা, অস্ত্র ছিনতাই, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, ‘‘আমরা চাই, এই মামলার বিচার দ্রুত শেষ হোক। কিন্তু নানা কারণে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে।’’ বিচার ভবনের মুখ্য সরকারি আইনজীবী দীপঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ‘‘অক্ষয়ের আইনজীবীরা বিভিন্ন রকম আর্জি জানিয়েমামলার নিষ্পত্তিতে দেরি করতে চাইছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Indian Museum Mental Health

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy