কসবার হোটেলে যুবককে খুনের ঘটনায় ধৃত দু’জনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কী থেকে তাঁদের মধ্যে বচসা হল, কেনই বা যুবককে বিবস্ত্র করে তাঁর পা বেঁধে দেওয়া হল, পুলিশ এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে। সোমবার তাঁদের আদালতে হাজির করানো হবে। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতদের হেফাজতে চাইতে পারে কলকাতা পুলিশ।
কসবার হোটেলের পাঁচতলার ঘর থেকে শনিবার বীরভূমের দুবরাজপুরের বাসিন্দা আদর্শ লোসাল্কার দেহ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার রাতে দু’জন সঙ্গীর সঙ্গে হোটেলে ঢুকেছিলেন তিনি। তার মধ্যে এক জন তরুণীও ছিলেন। গভীর রাতে আদর্শের দুই সঙ্গী হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। পরের দিন ঘরের মেঝেতে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় যুবকের দেহ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে খুন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে মদ্যপান করেছিলেন আদর্শ। রবিবার তাঁর দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
ধৃত যুবক নদিয়ার এবং তরুণী কলকাতার বাসিন্দা। আদর্শের সঙ্গে তাঁদের কী সম্পর্ক, কী ভাবে যোগাযোগ হয়েছিল, কেন তাঁদের সঙ্গে আদর্শ রাতে হোটেলে গেলেন, এখনও স্পষ্ট নয়। দিন দিন কসবাকাণ্ডের রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, আদর্শকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তাঁর পেটে মদের গন্ধযুক্ত ২০০ গ্রাম আঠালো খাবার ছিল। পরিবারের দাবি, দু’টি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন আদর্শেরা। একটি ঘরে আদর্শ একা ছিলেন। অন্য ঘরে ছিলেন বাকি দু’জন। হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, গভীর রাতে যুবক বাকিদের ঘরে ঢুকছেন। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, একসঙ্গে মদ্যপান করেছিলেন তিন জন। তার পর কোনও কারণে কথাকাটাকাটি হয় তাঁদের মধ্যে। তার জেরেই কি খুন? না কি গোটা ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল? ধন্দে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে।
আদর্শ কলকাতার একটি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। কেন হোটেলে গেলেন, জানে না পরিবার। কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এই ঘটনার সঙ্গে কিছু দিন আগের পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডের মিল পেয়েছেন। তিনি জানান, হোটেল কর্তৃপক্ষ কী ভাবে আরও সতর্ক হবেন, সে বিষয়ে পুলিশ একটি গাইডলাইন তৈরি করছে। তা সব হোটেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।