একটি নয়, কসবার হোটেলে দু’টি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। একটি ঘরে ছিলেন আদর্শ লোসাল্কা নিজে। অন্য ঘরে ছিলেন তাঁর দুই সঙ্গী। রবিবার এমনটাই দাবি করল আদর্শের পরিবার। বীরভূমের দুবরাজপুরের বাসিন্দা আদর্শ কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকতেন। শুক্রবার রাতে তাঁরা তিন জন কসবার হোটেলে উঠেছিলেন। গভীর রাতে দুই সঙ্গী বেরিয়ে যান। কিন্তু আদর্শ থেকে গিয়েছিলেন। পরের দিন ঘরের মেঝে থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আদর্শের জেঠু সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে কী আছে, তা তাঁরা জানতে পেরেছেন। সেখানে দেখা গিয়েছে, রাতে আদর্শ নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে সঙ্গীদের ঘরে ঢুকছেন। কিন্তু কেন তিনি ওই ঘরে গেলেন, বাকি দু’জনের সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক, এখনও স্পষ্ট নয়। পরিবারের কেউ সে ব্যাপারে আলোকপাত করতে পারেননি। আদর্শের মৃত্যুর খবরে দুবরাজপুরে শোকের ছায়া। তাঁর বিরুদ্ধে কারও আক্রোশ থাকতে পারে, কারও এই ধরনের শত্রুতা থাকতে পারে, ভাবতেও পারছেন না পরিবারের সদস্য এবং পরিচিতেরা। দেহ উদ্ধারের সময় আদর্শের পা বাঁধা ছিল বলেও জানিয়েছেন তাঁর জেঠু।
আরও পড়ুন:
আদর্শ কি খুনই হয়েছেন? সময় যত এগোচ্ছে, রহস্য তত জমাট বাঁধছে। আদর্শের নাকের নীচে জমাট বাঁধা ছিল রক্ত। এখনও তাঁর মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়নি। খোঁজ মেলেনি আদর্শের দুই সঙ্গীরও। জানা গিয়েছে, ফেরার যুবক নদিয়ার বাসিন্দা। তবে তরুণী কলকাতার। রবিবার সকালে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানান, শীঘ্রই যুবকের দুই সঙ্গীকে খুঁজে বার করা হবে। তদন্তের স্বার্থে কোনও তথ্য প্রকাশ করতে চাননি তিনি।
অনলাইন মাধ্যমে ঘর বুক করে হোটেলে উঠেছিলেন তিন জন। পাঁচতলায় ছিলেন। কী ভাবে আদর্শের মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়েও ধন্দে পুলিশ। তাঁর মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে সূত্রের খবর। তিনি বিবস্ত্র অবস্থায় হোটেলের ঘরের মেঝের উপর পড়ে ছিলেন। আদর্শের দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। ঘর থেকে আঘাতের কোনও অস্ত্র মেলেনি।
শনিবার রাতেই কসবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধদমন) রূপেশ কুমার। রবিবার কসবার সঙ্গে পার্ক স্ট্রিটের ঘটনাকে তুলনা করেছেন পুলিশ কমিশনার মনোজ। বলেন, ‘‘এই নিয়ে শহরে এটা দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে পার্ক স্ট্রিটে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছিল। আশা করছি, দ্রুত আমরা এর কিনারা করতে পারব। হোটেল মালিকেরা কী ভাবে সতর্ক থাকবেন, তা নিয়ে আমরা একটা গাইডলাইন প্রস্তুত করছি। তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।’’
হোটেলে পরিচয়পত্র দেখিয়েই ঢুকেছিলেন তিন জন। অর্থাৎ, নিখোঁজ যুবক এবং তরুণীর পরিচয়পত্রও কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে। তার মাধ্যমে দু’জনকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।