Advertisement
E-Paper

অটো চালকদের জন্য গাঁধীগিরির দাওয়াই কলকাতা পুলিশের

অটো চালানোর সময়ে যাত্রীদের কথাটা মাথায় রাখুন। মামুলি কিছু খুচরোর জন্য অযথা যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন না। অটোয় অতিরিক্ত যাত্রী তুলবেন না। কঠিন পরিস্থিতিতে মাথা গরম না করে পরিস্থিতিকে জয় করতে শিখুন। যাত্রীদের অনুমতি নিয়ে তবেই অটোয় গানবাজনা চালান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ২১:১০

অটো চালানোর সময়ে যাত্রীদের কথাটা মাথায় রাখুন। মামুলি কিছু খুচরোর জন্য অযথা যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন না। অটোয় অতিরিক্ত যাত্রী তুলবেন না। কঠিন পরিস্থিতিতে মাথা গরম না করে পরিস্থিতিকে জয় করতে শিখুন। যাত্রীদের অনুমতি নিয়ে তবেই অটোয় গানবাজনা চালান। শনিবার কলকাতা পুলিশের অটো-ওয়ার্কশপে এমনই বিভিন্ন টুকরো টুকরো কথাবার্তার মাধ্যমে অটোচালকদের এই কথাগুলিই বারবার মনে করালেন আয়োজকরা।

শনিবার সকালে জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ড এবং হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের উদ্যোগে মিনার্ভা থিয়েটারে আয়োজন করা হয়েছিল এক দিনের ‘অটো-রিকশা ড্রাইভারদের ওয়ার্কশপ’। অনুষ্ঠানে ওই দু’টি গার্ডের পুলিশকর্মীরা ছাড়াও হাজির ছিলেন টালা ট্রাফিক ট্রেনিং স্কুলের প্রশিক্ষক সার্জেন্ট রাজেশ ভান্ডারী, ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, মোটিভেশন স্পিকার ইন্দ্রজ্যোতি সেনগুপ্ত, প্রাক্তন নার্স গীতা দে প্রমুখ। এ ছাড়াও ছিলেন ১২ টি রুটের প্রায় ১৩০ জন অটোচালক। অনুষ্ঠানের প্রথমেই আয়োজকরা জানান, এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য কিন্তু অটোচালকদের সমালোচনা করা নয়। জোড়াবাগানের ট্রাফিক গার্ডের অফিসার-ইন-চার্জ অলোক সান্যাল বলেন, ‘‘বিভিন্ন সময়েই সাধারণ মানুষদের অনেক সাহায্য করেন অনেক অটোচালক। কিন্তু ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে দু’একজনের দুর্ব্যবহার সাধারণ মানুষের কাছে তাঁদের সম্বন্ধে খারাপ ধারণা করে দেয়।’’

অটোচালকরা যে সাধারণ মানুষদের থেকে আলাদা নন, তা মনে করিয়ে ইন্দ্রজ্যোতিবাবু বলেন, ‘‘অটো চালান বলে হীনমন্যতায় ভোগার কোনও কারণ নেই। কলকাতা শহরে সাধারণ যানবাহনের তুলনায় সবচেয়ে চলে অটোই। কাজেই দায়িত্ব আপনাদেরই সব থেকে বেশি।’’ তিনি জানান, মুম্বইয়ে এক সাধারণ অটোচালকের মেয়ে বছর কয়েক আগে চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পরীক্ষায় সর্বোচ্চ স্থান দখল করেছিল। সম্প্রতি বেলেঘাটা-উল্টোডাঙা রুটে সমর শেঠ নামে এক অটোচালক এক দুর্ঘটনাগ্রস্ত মা ও শিশুকে সঙ্গে সঙ্গে তুলে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করায় শিশুটি প্রাণে বেঁচে যায়। কাজেই অটোচালকের মধ্যেও যে সততা রয়েছে, কয়েক জনের সামান্য কিছু ঘটনায় তার উল্টো ছবি সমাজের কাছে তুলে ধরা ঠিক নয়। অটোচালকদের আনন্দ দিতে এবং মনোবল বাড়াতে হ্যান্ডবল পাস এবং মানব-শৃঙ্খল তৈরির মত বেশ কিছু কার্যকলাপও করেন তিনি। শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়ামের প্রশিক্ষণ দেন নার্স গীতা দে-ও।

অটো চালানোর সময়ে ট্রাফিক নিয়ম মানার পাশাপাশি নিজের এবং অটোর স্বাস্থ্যের প্রতিও নজর রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেই কথা তুলে ধরেন টালা ট্রাফিক ট্রেনিং স্কুলের প্রশিক্ষক সার্জেন্ট রাজেশ ভান্ডারী। তিনি বলেন, ‘‘শারীরিক বা মানসিক অবস্থা ঠিক না থাকা সত্ত্বেও অনেকে অটো নিয়ে কাজে বেরিয়ে পড়েন। দুর্ঘটনা ঘটলে আপনার সঙ্গে বিপদে পড়বেন যাত্রীরাও।’’ একই সঙ্গে দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়ির যন্ত্রপাতিও নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং নিজের যানটির যত্ন রাখাও উচিত বলে অটোচালকদের পরামর্শ দেন তিনি। প্রয়োজনে পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাও করতে বলেন।

কিন্তু যাদের উদ্দেশ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন, কি বলছেন সেই অটোচালকেরা? শিয়ালদহ-বড়বাজার রুটের অটোচালক সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, নিমতলা-মানিকতলা রুটের অটোচালক প্রদীপ সিংহের কথায়, ‘‘পরিস্থিতির চাপে আমাদের পক্ষ থেকেও অনেক সময় অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়ে যায়। চেষ্টা করব সমাজের কিছু কাজে যেন লাগতে পারি।’’

Auto workshop Kolkata police passenger Beliaghata Nimtala Gita Dey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy