ফাইল চিত্র
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়নি, এমন রোগীরও এ বার প্যাথলজিক্যাল অটোপসি করা হল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার ওই দেহের পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত মৃতদেহেরও অটোপসি হয় সেখানে।
মরণোত্তর দেহদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ব্রজ রায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পরে শহরে প্রথম তাঁর দেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি করা হয় আর জি করে। তার পর থেকে এ দিন পর্যন্ত ওই হাসপাতালে করোনায় মৃত মোট ১০ জনের অটোপসি হয়েছে। হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সোমনাথ দাস বলেন, ‘‘শুধু করোনা নয়, অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতেরও অটোপসি হওয়া প্রয়োজন ছিল। করোনায় আক্রান্ত নন এমন যে রোগীর অটোপসি হয়েছে, তিনি রক্তের জটিল অসুখে ভুগছিলেন। এমন বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের আগে কখনও অটোপসি হয়েছে বলে জানা নেই।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, শ্রীরামপুরের বাসিন্দা সীতাংশু ভাদুড়ি (৬০) ‘মায়ালো ডিসপ্লাস্টিক সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত ছিলেন। গত বছর জানুয়ারিতে তাঁর ওই রোগ ধরা পড়ে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ‘মায়ালো ডিসপ্লাস্টিক সিন্ড্রোম’ হল রক্তের জটিল ও বিরল অসুখ। এতে রক্তে শ্বেতকণিকা, লোহিতকণিকা ও অণুচক্রিকায় ঘাটতি থাকে। যার ফলে রক্তে সংক্রমণ ছড়ায়, রক্ত
তঞ্চনের মারাত্মক সমস্যা থাকে এবং রোগী খুব দুর্বল হয়ে পড়েন। কয়েক দিন আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শিয়ালদহের বি আর সিংহ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ওই প্রাক্তন রেলকর্মীকে। রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়। ওই রোগীর পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ‘গণদর্পণের’ সঙ্গে যুক্ত সীতাংশুবাবু শ্রীরামপুরে মরণোত্তর দেহদান আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাই তাঁর মৃত্যুর পরে দেহদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গৌতম সরকার নামে তাঁর এক ঘনিষ্ঠের কথায়, ‘‘চিকিৎসা সংক্রান্ত পড়াশোনায় ব্যবহারের জন্যই দেহদান করতে চেয়েছিলাম। তখন অটোপসির প্রস্তাবে রাজি হই, কারণ সেটিও তো চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সহযোগিতা করবে।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ওই ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়াও অস্থিমজ্জার নমুনা বায়োপসি করার পাশপাশি সেটির জিনঘটিত পরীক্ষাও করা হবে। অন্য দিকে, গত ২৬ জুন এম আর বাঙুর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বারাসতের বাসিন্দা বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর। এ দিন তাঁর দেহের অটোপসি হয় আর জি করে। ‘গণদর্পণের’ সম্পাদক শ্যামল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অটোপসি অর্থাৎ রোগ নির্ণায়ক ময়না-তদন্তে রাজ্যের মানুষের কাছে সচেতনতার নতুন বার্তা যাবে। যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি ঘটাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy