ব্যাঙ্ক কর্মী পরিচয় দিয়ে প্রথমে গ্রাহককে ফোন করত তারা। এর পরে গ্রাহকের ঠিকানা, অ্যাকাউন্ট নম্বর গড়গড় করে বলে দিত। গ্রাহককে তারা জানাত, তাঁর এটিএম কার্ড ‘ড্রপ’ হয়ে গিয়েছে। কাউকে আবার বলত, এটিএমের সিস্টেম আপডেট করা হচ্ছে। কোনও গ্রাহককে আবার বলত, তাঁর এটিএম কার্ড ‘ব্লক’ হয়ে গিয়েছে।
ব্যাঙ্কের কর্মীর থেকে এমন সব ফোন পেয়ে স্বভাবতই ঘাবড়ে যেতেন ওই গ্রাহকেরা। সেই সুযোগে এটিএম কার্ড ঠিক করার জন্যে গ্রাহকের ১৬ অঙ্কের কার্ড নম্বর চাইতেন ফোনের ও পারের ওই যুবক। বিশ্বাস করে কার্ড নম্বরও দিয়ে দিতেন গ্রাহক। পিন নম্বর ছাড়া শুধু এটিএম কার্ড নম্বর নিয়েই টাকা হাতাত জালিয়াতেরা। গত মঙ্গলবার এমনই একটি চাঁইয়ের হদিস পায় পুলিশ। গ্রেফতার হয় পাঁচ যুবক। ধৃতদের নাম সৌমেন ওঝা, স্বপন সেনাপতি, তাপস দলুই, অসিত মাইতি ও মানিক পট্টনায়ক।
ঘটনার সূত্রপাত জুন মাসে। টালিগঞ্জ থানায় এক মহিলা অভিযোগ করেন, ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে তাঁকে এক যুবক ফোন করে এটিএম কার্ডের নম্বর জানতে চায়। পিন নম্বর ছাড়া কোনও ভাবেই টাকা তোলা যায় না বলে বিশ্বাস ছিল মহিলার। সে কারণে তিনি এটিএম কার্ডের নম্বর বলে দেন ওই যুবককে। পরদিনই বুঝতে পারেন, একই দিনে পাঁচ হাজার টাকা করে পাঁচ বার অর্থাৎ মোট ২৫ হাজার টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
মহিলার অভিযোগ পেয়ে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ বুঝতে পারে, শহরের মধ্যে থেকেই কেউ এই চক্র চালাচ্ছে। সোর্স মারফত পুলিশ আরও জানতে পারে, রিজেন্ট পার্কের নেহরু কলোনিতে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আসা কয়েক জন যুবক একটি অফিস খুলেছেন। তাঁদের গতিবিধি সন্দেহজনক। তাদের উপরে নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ। অবশেষে কিছু তথ্যপ্রমাণ হাতে আসায় মঙ্গলবার পাঁচ যুবককে ধরা হয়।
পুলিশ জেনেছে, একাধিক সিম কার্ড থেকে ফোন করত জালিয়াতেরা। এক জন গ্রাহককে ফোন করার পরে সেই সিম কার্ড পাল্টে ফেলত। এ ভাবে তারা কত জনের সঙ্গে জালিয়াতি করেছে, তা দেখছে পুলিশ। কী ভাবে তারা গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খুঁটিনাটি জানত, তা নিয়েও শুরু হয়েছে তদন্ত। ধৃতদের বুধবার আদালতে তোলা হলে ৩ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy