টানা ঘণ্টা চারেকের বৃষ্টিতেই বারুইপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের আশপাশের অলিগলি জলে টইটম্বুর। আর যদি টানা দু’-এক দিন বৃষ্টি হয়, তা হলে হাসপাতালের আশপাশের রাস্তায় জমা সেই জল পৌঁছয় হাঁটু পর্যন্ত। রোগীকে ভর্তি করতে এসে নাজেহাল হন পরিজনেরা। শুধু বারুইপুরই নয়, সোনারপুর, ভাঙড়, ক্যানিং, জয়নগর, কুলতলি এলাকার বাসিন্দাদের কাছাকাছি একমাত্র সুপার স্পেশ্যালিটি সরকারি হাসপাতাল এটিই। বারুইপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকা ওই হাসপাতাল চত্বর-সহ আশপাশের এলাকা বর্ষায় মাস তিনেক প্রায় জলের নীচেই থাকে বলে অভিযোগ। বছরের পর বছর এই চিত্র দেখতে কার্যত অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন বাসিন্দারা। টানা বৃষ্টির পরে জল সরাতে চালু করা হয় পাম্প।
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, শুধু ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল এলাকা নয়, পুরসভার মোট ১৭টি ওয়ার্ডেরই ভূগর্ভস্থ নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল। পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চাননতলা, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাদারহাট, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সুবুদ্ধিপুর এলাকা অল্প বৃষ্টিতেই বানভাসি হয়। গত বছর অতিবৃষ্টির কারণে ১৭টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। কোথাও হাঁটুসমান জল জমেছিল, কোথাও কোমরসমান। সেই
জল সরতে সপ্তাহ পেরিয়ে যায় বলে অভিযোগ। নিকাশি ব্যবস্থা অবরুদ্ধ হওয়ায় খালপথে পুর এলাকার জল বাইরে বেরোতে পারে না। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ১০ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝখানের রাস্তায় গোলপুকুর থেকে বারুইপুর রেলগেট পর্যন্ত সংস্কারের কাজ হয়েছে। রাস্তা অনেক উঁচু করা হয়েছে। কিন্তু ওই রাস্তার আশপাশে সম্পূর্ণ নিকাশি পথ গড়ে তোলা হয়নি। তার কারণেও জল জমছে এলাকায়।
নিকাশির বেহাল অবস্থার অন্যতম কারণ জঞ্জাল বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। সারা বছরই যত্রতত্র এবং ভ্যাটের পাশে বর্জ্য পড়ে থাকে। এক দিকে ওই আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। উপদ্রব হয় মশার। বর্ষার সময়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। আবার, জমা জঞ্জাল থেকে প্লাস্টিক গিয়ে নিকাশি নালায় পড়ায় সেটিও আটকে যায়। জমা জলের মধ্যে জঞ্জাল পচতে থাকায় এক নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুর এলাকা ঘুরে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মুখেই শোনা গিয়েছে এই অভিযোগ।