Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Pink Ball Test

মাঠ থেকে টিভি, ২৭ সেকেন্ডের পার্থক্য, তাতেই চলছে লাখ লাখ টাকার ক্রিকেট বেটিং

কলকাতায় প্রথম গোলাপি বলের টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শনিবার খেলা চলাকালীন ইডেন গার্ডেন্সের এফ-১ এবং জি-১ ব্লক থেকে তিন জন যুবককে গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ২১:৩০
Share: Save:

মাত্র ২৭ সেকেন্ডের পার্থক্য। আর সেই সময়ের হেরফেরকে কাজে লাগিয়েই লাখ লাখ টাকার বেটিং চক্র চলছিল।

কলকাতায় প্রথম গোলাপি বলের টেস্ট ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শনিবার খেলা চলাকালীন ইডেন গার্ডেন্সের এফ-১ এবং জি-১ ব্লক থেকে তিন জন যুবককে গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের বাসিন্দা ওই তিন জনকে জেরা করে সদর স্ট্রিটের একটি হোটেল থেকে পাকড়াও করা হয় অন্য দুই যুবককে। রাজস্থানের ওই যুবকদের জেরা করেই জানা যায় ক্রিকেট বেটিং চালাচ্ছিল তারা।

কিন্তু কী ভাবে?

ধৃতদের জেরা করে জানা যায়, মাঠে যখন খেলা হয় এবং সেই খেলা সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে যখন টেলিভিশন বা মোবাইলে দেখা যায় তার মধ্যে একটা সময়ের ব্যবধান থাকে। সাতাশ থেকে তিরিশ সেকেন্ড পর্যন্ত সেই সময়ের পার্থক্য হয়। অর্থাৎ মাঠে যে দর্শক বসে আছেন তিনি যে সময় একটি বাউন্ডারি বা ব্যাটসম্যানের আউট দেখতে পান, তার থেকে একটু পরে টেলিভিশনের দর্শকরা দেখতে পান।

আরও পড়ুন: প্রথম বার একসঙ্গে সেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের ১৬২ বিধায়ক, শক্তি প্রদর্শন মহা-জোটের​

গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ওই সময়ের পার্থক্য কাজে লাগিয়ে ‘কেওয়াই এক্সচেঞ্জ’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে বেটিংয় করত। এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘বেটিং চক্রের এক দল লোক মাঠে থাকত। তারা সরাসরি দেখতে পাচ্ছিল, কোন বলে কত রান হচ্ছে। তাই ফলাফল জেনেই অ্যাপের মাধ্যমে বেটিংয়ের রেট নির্ধারণ করত তারা। আর যারা ওই অ্যাপের মাধ্যমে বেটিংয়ে টাকা লাগাচ্ছিল, তারা গোটা সম্প্রচারটা দেখত টিভিতে। ফলাফল জানার কারণে বেটিং চক্রের লোকেরা লাভবান হত বেশি। অন্য দিকে টাকা যারা লাগাত, তারা লাভের পরিমাণ পেত কম। এ ভাবেই গোটা জুয়াটার পদ্ধতিটাকে নিজেদের সুবিধা মতো নিয়ন্ত্রিত করে লাখ লাখ টাকা কামাচ্ছিল ওই চক্র।’’ মাঠের পাশাপাশি, গোটা লেনদেন সামলাতে আর একটা দল বসে থাকে হোটেলে। ল্যাপটপ মোবাইল নিয়ে তারা প্রতি সেকেন্ডের ওই বেটিং এর লেনদেন সামলায়। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলিধর শর্মা বলেন, ‘‘ইডেনে মাঠে বসে এ ধরনের বেটিংয়ের ঘটনা এই প্রথম।”

জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করেছে, তারা সারা দেশে বিভিন্ন ধরনের ক্রিকেট ম্যাচে এ ভাবেই দু’ভাগে ভাগ হয়ে মাঠে এবং হোটেলে বসে বেটিং চালাত। আইপিএলেও একই ভাবে বেটিং চালিয়েছে এই যুবকেরা। তদন্তকারীরা বলেন, ‘‘সম্প্রচারের ওই সময়ের ব্যবধানকে কাজে লাগিয়ে বেটিং প্রথম হাতেনাতে ধরেন দিল্লি পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার নীরজ কুমার। তিনি এক সময়ে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিকের দায়িত্বে ছিলেন।’’ তিনি ওই পদ্ধতির বেটিং ধরলেও পরবর্তীতে সারা দেশেই একই ভাবে বেটিং চালাচ্ছে বিভিন্ন ছোট ছোট দল।

আরও পড়ুন: আরও বেসুরো জ্যোতিরাদিত্য, টুইটার হ্যান্ডল থেকে মুছে ফেললেন কংগ্রেস পরিচয়

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এ বার থেকে ইডেনে ম্যাচ থাকলে বিশেষ নজরদারি করা হবে যাতে মাঠ থেকে এই ভাবে বেটিং চক্র না চলতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE