পুজোর উদ্বোধন হয়েছিল মহালয়ার আগেই। প্রথমা থেকেই ভিড়টা ধীরে ধীরে বাড়ছিল। তখনই তীব্র যানজটের আশঙ্কা করেছিলেন এলাকাবাসী। তাঁদের সেই আশঙ্কা সত্যি করে সপ্তমী থেকে দশমী কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে রইল ভিআইপি রোডের গোলাঘাটা থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চল। যানজটে নাকাল হলেন নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে বিমান ধরতে যাওয়া লোকজন। পঞ্চমী থেকে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করার আশ্বাস দিলেও আখেরে ভিড়ে রাশ টানতে ব্যর্থ বিধাননগর কমিশনারেট।
ঘটনাস্থল শ্রীভূমি। মাত্র একটি পুজো ঘিরে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পুজো ঠিক মতো শুরুর আগেই। অথচ লক্ষাধিক লোকের ভিড়েও সুষ্ঠু ভাবে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে সফল হয়েছে বিধাননগরেরই প্রতিবেশী কলকাতা পুলিশ।
একটি মাত্র পুজোর ভিড় সামলাতে কেন ব্যর্থ বিধাননগর? সাধারণ মানুষের অভিযোগ, শ্রীভূমি এবং দমদম পার্কের পুজোগুলির ভিড়ের জন্য প্রতি বারই যানজট হয় যশোর রোড ও ভিআইপি রোডে। কিন্তু এ বার পুলিশের ট্র্যাফিক পরিকল্পনাতেই গলদ ছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল গাড়ি রাখার জায়গার অভাব।
যদিও বিধাননগর পুলিশের একাংশ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তাঁদের ট্র্যাফিক পরিকল্পনা ঠিকই ছিল। কিন্তু পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকে শ্রীভূমির ভিড় রেকর্ড ছাপিয়ে যায়। অনেকেই নির্ধারিত বিমান ধরতে পারেননি। আরও অভিযোগ, পুলিশি নজরদারি না থাকায় অনেকেই যেখানে খুশি গাড়ি রেখে শ্রীভূমির ‘বাহুবলী’ মণ্ডপ ও প্রতিমা দেখতে চলে গিয়েছিলেন। সার্ভিস রোড ধরে দর্শনার্থীদের যাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও অনেকে তা ব্যবহার না করে ভিআইপি রোড ধরেই যাতায়াত করেছেন। তার জন্যও আটকে পড়েছে গাড়ি। ভিআইপি রোড থেকে বাইপাস, হাডকো মোড় থেকে কাঁকুড়গাছি এবং সল্টলেকের প্রবেশপথগুলিতে ছিল গাড়ির দীর্ঘ লাইন।
পঞ্চমীর বিকেল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিধাননগরের পুলিশ মোতায়েন করা হলেও যান চলাচল পুরো স্বাভাবিক হয়নি। চালকেরা অভিযোগ করেছেন, যে সব গাড়ি উল্টোডাঙা থেকে লেক টাউনের দিকে গিয়েছে, তাদের লেক টাউনে ঢুকতে দেওয়া হলেও একই পথে ফিরতে দেয়নি পুলিশ। সেই কেষ্টপুর মোড় থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে আসতে হয়েছে। আবার বিমানবন্দর থেকে উল্টোডাঙা আসার সময়ে লেক টাউনের ভিতরে গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
যদিও বিধাননগর পুলিশের একাংশের দাবি, শ্রীভূমি এবং দমদম পার্কের পুজোগুলি ঘিরে মানুষের
ভিড় অনেক বেশি হয়েছে। তবুও পুলিশের সক্রিয়তায় পঞ্চমী থেকে যানজট কমেছে। সহযোগিতা করেছে কলকাতা পুলিশও। যদিও মাত্র একটি পুজো ঘিরে মানুষের এমন দুর্ভোগ কেন, তা নিয়ে শ্রীভূমির পুজোর অন্যতম কর্ণধার তথা বিধায়ক সুজিত বসুর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস-এর জবাব দেননি।