Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সে দিন তিন পানশালায় গিয়ে মদ্যপান করেছিলেন বিক্রম ও সোনিকা!

অবশেষে দুর্ঘটনার ন’দিন পরে, সোমবার বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের রক্তের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষা করতে পাঠাল পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার পরে বিক্রমের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

সাহেব বিবি গোলাম ছবিতে বিক্রম।

সাহেব বিবি গোলাম ছবিতে বিক্রম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৭ ০১:৩১
Share: Save:

অবশেষে দুর্ঘটনার ন’দিন পরে, সোমবার বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের রক্তের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষা করতে পাঠাল পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার পরে বিক্রমের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু তা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়নি। যদিও এত দিন পরে ওই নমুনা পরীক্ষা করে বিক্রম সে দিন নেশাগ্রস্ত ছিলেন কি না, তা কতটা বোঝা সম্ভব সে বিষয়ে সন্দিহান তদন্তকারীদের একাংশ।

এই দেরিকে গাফিলতি হিসেবে দেখছেন পুলিশের একাংশ। তাঁরা দায়ী করছেন ট্র্যাফিক পুলিশের ফ্যাটাল স্কোয়াড (এফএসটিপি)-কে। লালবাজার সূত্রে খবর, ঘটনার পরেই তদন্তভার এফএসটিপি-কে দেওয়া হয়। কিন্তু সে ভাবে অগ্রগতি না হওয়ায় ফের টালিগঞ্জ থানাকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। তার পরেই রক্তের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়।

তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ওই রাতে বিক্রম তিনটি পানশালায় গিয়েছিলেন। সেখানকার কর্মীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিন জায়গাতেই মদ্যপান করেছিলেন বিক্রম ও সোনিকা সিংহ চৌহান। তবে কতখানি মদ্যপান করেছিলেন বিক্রম, তা জানতে পারেননি তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীদের অন্য অংশের দাবি, পার্ক স্ট্রিটের এক পানশালায় বিক্রমের সঙ্গে দেখা হয় সোনিকার। সেখান থেকে তাঁরা যান অন্য একটি পানশালায়। পুলিশের দাবি, ওই পানশালা থেকে দু’জনে যান এজেসি বসু রোডের একটি তিন তারা হোটেলে। রাত আড়াইটে নাগাদ বিক্রম সেখানে থেকে সোনিকাকে নিয়ে বেরোন। এর পরেই ঘটে ওই দুর্ঘটনা। সোমবার তিনটি পানশালার ১৬ জন কর্মীকে জিজ্ঞসাবাদ করে পুলিশ।

এই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই বিক্রমের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। বিক্রমকে ডেকেও পাঠান তদন্তকারীরা। লালবাজার সূত্রে খবর, এ দিন টালিগঞ্জ থানায় হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও আসেননি তিনি। পুলিশের দাবি, দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে বিক্রম যে দাবি করেছেন, তার কয়েকটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

পুলিশ জানায়, ২৯ এপ্রিল ভোরে লেক মার্কেটের সামনে দুর্ঘটনা ঘটান বিক্রম। মৃত্যু হয় সোনিকার। আহত বিক্রম কয়েক দিন হাসপাতালে কাটিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আদালতে হাজির হয়ে জামিনও নিয়েছেন। তাঁর দাবি, তারা দত্ত রোড থেকে একটি গাড়ি দ্রুত গতিতে এসে তাঁকে চেপে দিয়েছিল। কিন্তু তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ওই রাস্তা ট্র্যাফিকের ভাষায় ‘ডেড লেন’। সেখান থেকে গাড়ি আসা অসম্ভব। ওই এলাকায় কোনও সিসিটিভি না থাকায় দুর্ঘটনার ছবি মিলছে না বলে পুলিশের দাবি। লালবাজারের এক কর্তা জানান, তদন্ত শেষের মুখে। যে সব রাস্তা দিয়ে ওই রাতে বিক্রমের গাড়ি ছুটেছিল, তার সিসিটিভির ফুটেজ দেখা হয়েছে। বিক্রমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা বাকি।

পুলিশ সূত্রে খবর, বিক্রমের গাড়ির ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি। বুধবার তা আসতে পারে। প্রাথমিক ভাবে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি পাননি। ঘটনার পরে গাড়ির এয়ারব্যাগ না খোলা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তা নিয়ে গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা তদন্ত করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bikram Chatterjee blood sample forensic examination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE