Advertisement
E-Paper

পাইলটদের চিন্তা বাড়াচ্ছে রাতপাখির আনাগোনা

দিনের বেলায় তা-ও একদল কর্মী বাজি ফাটিয়ে পাখি তাড়ানোর কাজ করেন।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০২:১৭
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

এত দিন চিন্তা ছিল মূলত চিল, বাজ নিয়ে। এ বার রাতের পাখিদের নিয়ে আশঙ্কায় কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কারণ, জুলাই মাসে কলকাতায় পাখির সঙ্গে বিমানের ধাক্কা লাগার যে দু’টি ঘটনা ঘটেছে, সে দু’টিই ঘটেছে হয় সূর্যাস্তের সময়ে বা তার পরে।

দিনের বেলায় তা-ও একদল কর্মী বাজি ফাটিয়ে পাখি তাড়ানোর কাজ করেন। কিন্তু সন্ধ্যায় যদি পেঁচা বা বাদুড় বিমানের সামনে চলে আসে, তাদের তাড়ানোর উপায় এখনও পর্যন্ত জানা নেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।

রাতের পাখিদের মধ্যে মূলত পেঁচা ও বাদুড়ই সমস্যার সৃষ্টি করছে। কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিমানবন্দরের ভিতরে এদের বাসা এবং খাবারের জোগান রয়েছে। সেই খাবারের জোগান আগে বন্ধ করতে হবে। তা হলে পেঁচা বা বাদুড়ের পাশাপাশি শেয়াল নিয়েও সমস্যা কমবে।’’ তবে এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতার প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কী ধরনের সমস্যা করছে পাখিরা?

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এখানে সকাল থেকে বিভিন্ন পাখির আনাগোনা লেগে থাকে। মূলত টেক-অফের সময়ে বিমানের ইঞ্জিনের সামনে চলে আসে পাখি। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন সেই পাখিকে টেনে নেয় ভিতরে। ফলে ইঞ্জিনের ভয়ানক ক্ষতি হয়। অনেক ক্ষেত্রে তা বন্ধও হয়ে যায়। একাধিক বার এমন ঘটেছে, পাখির ধাক্কার পরে বন্ধ ইঞ্জিন নিয়ে মুখ ঘুরিয়ে জরুরি অবতরণ করতে হয়েছে পাইলটকে। কখনও আবার ওড়ার মুখে পাখির ধাক্কায় ককপিটের সামনের কাচে চিড়ও ধরেছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মতে, সারা ভারতে পাখির সঙ্গে বিমানের ধাক্কা লাগার ঘটনা সব চেয়ে বেশি হয় কলকাতায়। তাই বছর

দেড়েক আগে বিমান মন্ত্রকের অধীনে গড়া হয় একটি বিশেষ কমিটি। ‘ন্যাশনাল বার্ড হ্যাজার্ডস’ নামে ওই কমিটি চুক্তি করে কোচির বাসিন্দা, পক্ষী বিশারদ এস এম সতীশনের সঙ্গে। ঠিক হয়, কলকাতাকে দিয়েই শুরু হবে কাজ।

মূলত বিমানবন্দরে পাখির গতিবিধির উপরে সমীক্ষার কাজ দেওয়া হয়েছে

সতীশনকে। কর্তৃপক্ষের দাবি, ভারতের কোনও বিমানবন্দরে এটিই প্রথম পাখি নিয়ে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা। সতীশন ফোনে বলেন, ‘‘জানুয়ারি থেকে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছি। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে এক বার সমীক্ষা হয়েছে। জুলাই-অগস্টে দ্বিতীয় বারের সমীক্ষা শেষে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি রিপোর্ট দেব।’’

বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে শহর থেকে বিমানের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। যাঁরা পাখি তাড়ানোর কাজ করেন, লকডাউনের প্রথম দিকে তাঁরা আসতে পারেননি। এখন নিয়মিত আসছেন।

কৌশিকবাবুর কথায়, ‘‘পাখি তাড়ানোর জন্য আগে বহু চেষ্টা করা হয়েছে। ‘জ়োন গান’ নামে একটি যন্ত্র বসানো হয়েছিল রানওয়ের পাশে। সেখান থেকে ১০ মিনিট অন্তর দুম দুম করে আওয়াজ হয়। মনে হয়, কেউ বন্দুক ছুড়ছে। পাখিরা প্রথম দিকে ভয় পেয়ে আসত না। কিন্তু পরে তারা দেখেছে, সেটি আদতে একটি যন্ত্র। এখন এসে জ়োন গানের উপরে বসে থাকছে।’’

কৌশিকবাবু জানান, গত এক বছরে পাখির সঙ্গে বিমানের ধাক্কার যতগুলি ঘটনা ঘটেছে, তার অর্ধেকই হয়েছে রাতে। কিন্তু রাতে পাখি তাড়ানোর কোনও উপায় জানা নেই তাঁদের। সতীশন কী বলেন, আপাতত তার উপরেই ভরসা রাখছেন কর্তৃপক্ষ।

Netaji Subhash Chandra Bose International Airport Pilots Bird
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy