Advertisement
E-Paper

রাতের চড়া আলোয় বিপাকে রবীন্দ্র সরোবরের পাখিরা 

বছর দু’য়েক আগে রাতে ফ্লাড লাইট জ্বেলে ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল রবীন্দ্র সরোবর এলাকায়। যার বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত।

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১৭
রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে এমন চড়া আলো নিয়েই বিতর্ক। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে এমন চড়া আলো নিয়েই বিতর্ক। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

আলো নিয়ে ফের বিতর্ক রবীন্দ্র সরোবরে!

জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকা ছিল, রবীন্দ্র সরোবরের মতো একটি জাতীয় সরোবরে কোনও ভাবেই চড়া আলো লাগানো যাবে না। সেই কারণেই রাতে খেলার জন্য ফ্লাড লাইট জ্বালানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত। এ বার প্রাতর্ভ্রমণকারী-সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সরোবর চত্বরে প্রচুর আলো থাকায় পাখিদের সমস্যা হচ্ছে। আলো কমাতে পরিবেশকর্মীরা কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন।

বছর দু’য়েক আগে রাতে ফ্লাড লাইট জ্বেলে ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল রবীন্দ্র সরোবর এলাকায়। যার বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। ওই মামলার সূত্রেই রাতে আলো জ্বেলে খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এ ছাড়া, সরোবর চত্বরে আলোর তীব্রতা কমাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘চড়া আলো জ্বালালে পাখিদের যেমন সমস্যা হয়, ওই আলো সরোবরের জলে পড়লে জলজ প্রাণীদেরও খুব সমস্যা হয়। বৈদ্যুতিক আলো থেকে দূষণও ছড়ায়। সেই কারণে চড়া আলো ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।’’

কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কারণেই সরোবরে চড়া আলো লাগানো হয়েছে। দু’-একটি জায়গায় আলো একটু বেশি থাকতে পারে। লোকসভা নির্বাচনের পরেই এ ব্যাপারে পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তবে ইতিমধ্যেই পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকা মেনে রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে রাতে আলো জ্বালিয়ে খেলা বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া, সরোবর চত্বরে সপ্তাহের শেষে কেএমডিএ যে গানের অনুষ্ঠান করত, তা-ও বন্ধ করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িয়ে থাকায় সরোবর চত্বরে কোথায় আলো কম করা যায়, তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শহরের অনেক পার্কেই পাখিদের জন্য আলো কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পার্কগুলির মধ্যে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বর ও মোহরকুঞ্জও রয়েছে। কলকাতা পুরসভার অনেক পার্কেও আলো কমানো হয়েছে।

রবীন্দ্র সরোবরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হাইকোর্ট মনোনীত মনিটরিং কমিটির সদস্য সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই সরোবরের বাস্তুতন্ত্র ঠিক রাখতেই আলোর পরিমাণ কমানো প্রয়োজন। সৌন্দর্যায়নের জন্য সেখানে প্রচুর সংখ্যক ত্রিফলা আলো লাগানো হয়েছে। এত আলোর এখানে প্রয়োজন নেই।’’

কেএমডিএ সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবরে নানা ধরনের পাখি দেখা যায়। শীতকালে এখানে পরিযায়ী পাখিরাও আসে। বিরল প্রজাতির পাখিরও দেখা মিলেছে বলে পরিবেশকর্মী ও পাখিপ্রেমীরা জানিয়েছেন। পাখিপ্রেমী সুদীপ ঘোষের কথায়, ‘‘চড়া আলো থাকায় এলাকার লোকেরা অনেক সময়েই রাতে কোকিলের ডাক শুনতে পান। এই ঘটনা প্রমাণ করে, পাখিদের জীবনযাত্রা কী ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’’

Rabidra Sarovar Birds Night Lamp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy