Advertisement
E-Paper

সিঙ্গুরের নার্সের দেহের অধিকার কে নেবে! মেডিক্যাল কলেজের মর্গের সামনে বিজেপি-সিপিএম হাতাহাতি

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার নিয়ে আসা হয় নার্স দীপালি জানার দেহ। তাঁর দেহ পৌঁছোতেই বিজেপি এবং সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা সেখানে পৌঁছে যান। শুরু হয় বচসা, হাতাহাতি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৫ ১৭:৩৫
মেডিক্যাল কলেজের সামনে সিপিএম-বিজেপির সংঘর্ষ। নিজস্ব চিত্র।

মেডিক্যাল কলেজের সামনে সিপিএম-বিজেপির সংঘর্ষ। নিজস্ব চিত্র।

সিঙ্গুরের নার্সিংহোমের নার্স দীপালি জানার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সামনে উত্তেজনা ছড়াল। সেখানে পৌঁছে যান বিজেপি এবং সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা। দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল হইহট্টগোল চলে। মৃতদেহের অধিকার কারা নেবে, তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়। দু’পক্ষকেই সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। বেশ কিছু ক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। মর্গের দু’ধারে দু’দলের সমর্থকেরা জমায়েত করেছেন। গন্ডগোল আপাতত থেমে গিয়েছে। মৃতার বাবা-মাকে মর্গের সামনে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।

শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতাল থেকে শুক্রবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল নার্সের দেহ। তাঁর দেহ মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছোতেই বিজেপি এবং সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা সেখানে পৌঁছে যান। দেহ দখল নিয়ে শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের মধ্যে বচসা। সেই বচসা হাতাহাতিতে পৌঁছোয়। সিপিএমের অভিযোগ, নার্সের দেহ হাইজ্যাক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মর্গের সামনে যখন এই গন্ডগোল চলছে, সেখানে গাড়ির ভিতরে অসহায় ভাবে বসে থাকতে দেখা যায় নার্সের পরিবারের সদস্যদের।

বিজেপি এবং বামেরা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তৃণমূলকে রক্ষা করতে সাহায্য করছে দুই দল। বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা চাই মৃতার দেহের ময়নাতদন্ত হোক এমস বা কমান্ড হাসপাতালে। সিপিএম এখানে এসে তৃণমূলের হয়ে সেটা আটকাতে চাইছে। ওরা এই রাজনীতি দিল্লিতে গিয়ে করুক।’’ পাল্টা এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘‘তৃণমূলের হয়ে বিজেপি মৃতার পরিবারকে কিনতে নেমেছে। তৃণমূলের হিম্মত হচ্ছে না এখানে আসার, তাই বিজেপিকে পাঠিয়ে দিয়েছে।’’

মৃতার বাবার দাবি, শ্রীরামপুরে ময়নাতদন্ত করলে ভাল হত। কমান্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হোক বলেও দাবি তুলেছেন তিনি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তিনি ময়নাতদন্ত করাতে চান বলেও জানিয়েছেন। দু’পক্ষের বচসা স্তিমিত হওয়ার পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ বিজেপি নেতা তমোঘ্ন দাবি করেছেন, শুক্রবার মৃতার ময়নাতদন্ত হবে না। যে হেতু তাঁর পরিবার চাইছে এমস বা কম্যান্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করাতে তাই পরিবারের ইচ্ছামতো সেই প্রক্রিয়া বিজেপির তরফ থেকে করা হবে। তমোঘ্ন বলেন, ‘‘পরিবারের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। এর পর ওঁদের ইচ্ছামতো পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য আমাদের যা করার আমরা তাই করব।’’

বৃহস্পতিবারই মৃতার দেহ শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। সেখানে সিপিএম-বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়ায়। ‘বিচার চাই’ স্লোগানও ওঠে। পরে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সিঙ্গুরের নার্স দীপালি জানার মৃত্যু হয় গত বুধবার। মৃতার বাবার অভিযোগ, ওই দিন রাত ১১টা নাগাদ নার্সিংহোম থেকে ফোন করে আসতে বলা হয়। কেন আসতে বলা হচ্ছে, কারণ জানতে চাইলে তখন জানানো হয়, দীপালি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। এই খবর পেয়েই তাঁরা নার্সিহোমে পৌঁছোন। কিন্তু সেখানে দীপালিকে দেখতে পাননি। মৃতার বাবার আরও অভিযোগ, তাঁদের বলা হয় পুলিশ এসে দীপালির দেহ নিয়ে গিয়েছে। নার্সিংহোম আত্মহত্যার কথা বলছে ঠিকই, কিন্তু দীপালিকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তাঁর পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় নার্সিংহোমের মালিক এবং মৃতার প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দিন কয়েক আগে সিঙ্গুরের ওই নার্সিংহোমে নার্সের কাজে যোগ দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের দীপালি। তাঁর বাবা সুকুমার জানা জানান, বেঙ্গালুরু থেকে নার্সিং পড়ে বাড়ি ফিরেছিলেন দিন কয়েক আগে। এক বান্ধবীর সূত্র ধরে চাকরি পান সিঙ্গুরের বোড়াই তেমাথা এলাকায় এক নার্সিংহোমে। বুধবার রাতে সেই নার্সিংহোমের একটি ঘর থেকে পাওয়া যায় দীপালির ঝুলন্ত দেহ।

Singur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy