নবান্নে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশ সফরের মধ্যেই নবান্নে যেতে চেয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অনুমতি দিলেন না স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা। আর তার পরেই তাঁকে নবান্নে যাওয়ার সুযোগ না দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। রাজ্য বিধানসভার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত কয়েক দিন কয়েকটি জায়গায় সফরে গিয়ে তিনি রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি এবং রাস্তাঘাটের বেহাল দশা দেখে তা জানাতে চেয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিবকে। কিন্তু সময় চাইলেও তাঁকে সুযোগ দেননি গোপালিকা। তবে শুভেন্দুর দফতরে একটি চিঠি পাঠিয়ে গোপালিকা জানিয়েছেন, আগামী শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে যে কোনও সময়ে নবান্নে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন শুভেন্দু। যদিও সেই চিঠি প্রকাশ্যে আসার আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলনেতা।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। এর পর থেকে তিনি কখনই রাজ্যের প্রধান সচিবালয় নবান্নে যাননি। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিজেপির ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচিতে যোগ দিলেও পথে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তার ঠিক এক বছর পরে বুধবার তিনি নবান্নে যেতে চেয়েছিলেন। অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবকে বুধবার সকালেই একটি চিঠি পাঠান। তবে তার কোনও উত্তর তিনি পাননি। এ নিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বিদেশ সফরের আগে মুখ্যমন্ত্রী কোনও মন্ত্রীকে রাজ্যের দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে যাননি। সেই হিসাবে আমরা ধরে নিতে পারি স্বরাষ্ট্রসচিব গোপালিকাই এখন রাজ্যের ‘অ্যাক্টিং চিফ মিনিস্টার’। তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য আমার দফতরের পক্ষে একটি চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছিল বিরোধী দলনেতা জনস্বার্থ বিষয় নিয়ে দেখা করতে চান। এর পরে আমার দফতর থেকে বার বার ফোনেও যোগাযোগ করা হয়েছিল।’’ তিনি যে শেষ পর্যন্ত নবান্নে যেতে পারেননি তা জানিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, তাঁর দফতর থেকে পাঠানো চিঠি সম্ভবত বিদেশ সফররত মুখ্যসচিবকে পাঠানো হয়। এর পরে তা মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দেওয়া হয় বলে দাবি করেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘বিদেশ থেকেই গোপালিকাবাবুকে তাড়াতাড়ি নবান্ন ছেড়ে পালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আমি বিকেল ৪টে থেকে ৫টার মধ্যে যেতে চেয়েছিলাম। ঠিক ৪টে নাগাদই নবান্ন থেকে পালিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। পরে আমার দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, দেখা করা সম্ভব হচ্ছে না।’’
কিন্তু কেন নবান্নে যেত চেয়েছিলেন শুভেন্দু? বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘গত সাত দিন আমি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি খুবই খারাপ। সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি উপচে গিয়েছে। পুজোর আগে শিশুদের নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ। ডেঙ্গি নিয়ে রাজ্যবাসীর উদ্বেগের কথাই বলতে যেতে চেয়েছিলাম।’’ একই সঙ্গে রাজ্যের রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কথাও তিনি বলতে চেয়েছিলেন বলে জানান শুভেন্দু। দাবি করেন, গ্রামীণ এলাকা তো বটেই পাশাপাশি পুরসভাগুলিতেও রাস্তাঘাটের অবস্থা অত্যন্ত বেহাল। শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি স্বরাষ্ট্রসচিবকে পুজোর আগে রাস্তাঘাট ঠিক করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে চেয়েছিলাম। আমি খুব কম সময় নিয়ে কথাগুলো বলতে চেয়েছিলাম। উপরে উঠতে না দিয়ে নীচে এসেও কথা বললে আমি সন্তুষ্ট হতাম।’’ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের আমলারা যে বিরোধীদের জনস্বার্থ বিষয়ক প্রস্তাবও শুনতে চান না তা দেখিয়ে দিল বুধবারের ঘটনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy