Advertisement
E-Paper

রাতভর নিখোঁজ তরুণীর দেহ মিলল পুকুরে

আগরপাড়ার মহাজাতি নগরের ঘটনা। সায়নী শীল (১৮) নামে ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে তাঁকে। এ ক্ষেত্রে মহাজাতি নগরের এক তরুণের নাম জড়িয়েছে। বুধবার অনেক রাত পর্যন্ত তাঁর সঙ্গেই দেখা গিয়েছিল সায়নীকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০০:২৪
মৃতা সায়নী শীল

মৃতা সায়নী শীল

মামার বাড়ির পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে কালী ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। রাতে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। পরের দিন, বৃহস্পতিবার একটি পুকুর থেকে মিলল তাঁর দেহ। আগরপাড়ার মহাজাতি নগরের ঘটনা।

সায়নী শীল (১৮) নামে ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে তাঁকে। এ ক্ষেত্রে মহাজাতি নগরের এক তরুণের নাম জড়িয়েছে। বুধবার অনেক রাত পর্যন্ত তাঁর সঙ্গেই দেখা গিয়েছিল সায়নীকে। খড়দহ থানার পুলিশ ওই তরুণকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই তরুণের সঙ্গে ছিলেন তাঁর আরও চার বন্ধু। তাঁদেরও থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

এটি নিছক দুর্ঘটনা, না কি মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সায়নী কী করে পুকুরে পড়লেন, সেটাই এখন প্রশ্ন পুলিশের কাছে।

আরও পড়ুন: অচ্ছে দিন আসবে না, দাবি নকল মোদীর

সায়নীর বাড়ি সোদপুরের দেশবন্ধুনগরে। বাড়ির কাছেই একটি স্কুলে পড়তেন তিনি। তাঁর মা সুচিত্রা শীল জানান, গত মঙ্গলবার সায়নী মামার বাড়িতে যান। বুধবার সকালের মেয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। তখনই তিনি মা-কে জানিয়েছিলেন, রাতে বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যাবেন। আর তাঁর সঙ্গে মেয়ের কোনও যোগাযোগ হয়নি।

মঙ্গলবার সকালে আগরপাড়ার তিন নম্বর মহাজাতি নগরে মামার বাড়িতে যান সায়নী। বুধবার সন্ধ্যায় আত্মীয়দের জানান, এলাকারই তিন বান্ধবীর সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যাবেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে বেরোনোর কিছু ক্ষণ পরে সায়নী এক তরুণের সঙ্গে চলে যান বলে জানিয়েছেন ওই বান্ধবীরা।

আরও পড়ুন: মন্দির-মসজিদ নয়, বিতর্কিত জমিতে শিশুদের জন্য মাঠ চাইছে অযোধ্যা

যে তরুণের কথা বলা হচ্ছে, তাঁর বাড়িও মহাজাতি নগরে। সায়নীর পরিচিতেরা জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল ওই তরুণের। সায়নীর বাড়ি ও মামাবাড়ির লোকেরাও সে কথা জানতেন বলে সায়নীর বন্ধুদের দাবি। বুধবার অনেক রাত পর্যন্ত সায়নী বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করেন তাঁর পরিজনেরা। ওই বান্ধবীদের জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা জানান, প্রথমে তাঁদের সঙ্গে বেরোলেও পরে সেই তরুণের সঙ্গে চলে যান সায়নী।

সায়নীর বাড়ির লোকেরা বৃহস্পতিবার সকালে খড়দহ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এ দিন সকালেই আগরপাড়া রেল স্টেশন সংলগ্ন পাঁচ নম্বর রেলগেটের কাছে একটি পুকুরের পাড়ে এক জোড়া জুতো এবং একটি মোবাইল ফোন পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে তাঁর পরিবারের লোকেরা এসে সেগুলি সায়নীর বলে শনাক্ত করেন। খড়দহ থানার পুলিশ এসে সেগুলি নিয়ে যায়। দুপুরের পরে সায়নীর খোঁজে পুকুরে ডুবুরি নামানো হয়। তাঁরাই দেহটি তুলে আনেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন চোখে পড়েনি। পুকুরে পড়ে যাওয়ার পরে সায়নী জল গিলে ফেলেছেন বলেও মনে হয়নি পুলিশের। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে মৃত্যু হল সায়নীর? তিনি যদি পা হড়কে পুকুরে পড়ে গিয়ে থাকেন, তা হলে তাঁর দু’টি জুতো কী ভাবে পুকুরপাড়ে পড়ে রইল? তা হলে কি জুতো খুলে পুকুরের ধারে বসেছিলেন তিনি?

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত তরুণ দাবি করেছেন, রাতে তিনি এবং তাঁর আরও তিন বন্ধুর সঙ্গে বসে মদ্যপান করেছিলেন সায়নী। রাত দুটো নাগাদ তাঁরা সায়নীকে তাঁর মামাবাড়ির গলি পর্যন্ত পৌঁছেও দেন। ওই পুকুরপাড়ের কয়েক জন বাসিন্দা জানিয়েছেন, রাত দুটো পর্যন্ত কয়েক জনকে ওই পুকুরের ধারে দেখা গিয়েছিল। ওই তরুণদের বয়ান ঠিক হলে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি আরও বেশি রাতে আর কারও সঙ্গেও দেখা হয়েছিল সায়নীর? জেরায় ওই তরুণ পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ছাড়াও আরও কয়েক জনের সঙ্গে সেই রাতে সায়নীকে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল।

ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডি সি (‌জোন ২) আনন্দ রায় বলেন, ‘‘বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনুমানের ভিত্তিতে এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে পুরো ঘটনাটি পরিষ্কার হবে।’’ এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন একটাই, পুকুরে পড়ার আগেই সায়নীর মৃত্যু হয়েছিল, না কি জলে ডুবে?

Crime Violence Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy