Advertisement
E-Paper

নতুন বিপর্যয়ে আরও হতাশ আগের ঘরছাড়ারা

খবরটা শোনার পর থেকেই অসহায় বোধ করছেন একদা দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা অমর্ত্য সেন। এখন স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকেন গড়িয়ার ভাড়া বাড়িতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৫৫
সম্বল: ফাটল ধরা বাড়ি ছেড়ে আসার আগে রিকশায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলছেন বৌবাজারের মদন দত্ত লেনের এক বাসিন্দা। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

সম্বল: ফাটল ধরা বাড়ি ছেড়ে আসার আগে রিকশায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলছেন বৌবাজারের মদন দত্ত লেনের এক বাসিন্দা। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

শিকড়ের টান ভুলতে পারেন না তাঁরা। তাই খবরটা শোনার পর থেকেই অসহায় বোধ করছেন একদা দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা অমর্ত্য সেন। এখন স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকেন গড়িয়ার ভাড়া বাড়িতে। তবে, দুর্গা পিতুরি লেনের পৈতৃক ভিটেতে ফেরার আশা ছাড়েননি।

সেই বৌবাজার। সেই বাড়িতে ফাটল। এবং আবারও গৃহহীন বেশ কিছু আতঙ্কিত মানুষ। যে আতঙ্কের শরিক অমর্ত্যের খুড়তুতো ভাই অরিজিৎ সেন, বিশ্বজিৎ ঠাকুরেরাও। ২০১৯ সালে দুর্গা পিতুরি লেন ও সেকরাপাড়া লেনের একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছিল। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় গত মে মাসে। ঘরছাড়া হন বহু মানুষ। এ বার মদন দত্ত লেন এবং বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের কিছু বাড়ি ও দোকানে ফাটল ধরেছে। স্থানীয় ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে জানান, ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত হাজারখানেক মানুষকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে।

২০১৯-এর অঘটনের পরে হোটেল থেকে দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িতে ফিরলেও আতঙ্কে চলতি বছরেই বাড়ি ছাড়েন অমর্ত্য। কিন্তু ফের ফিরতে চান পৈতৃক ভিটেতে। শুক্রবার বললেন, ‘‘খুব অসহায় ও হতাশ লাগছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর জন্য খারাপ লাগছে।”

গত মে মাসে অমর্ত্যদের দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িতে ফের ফাটল ধরে। তখন সেই বাড়িতে ছিলেন তাঁর কাকিমা ও এক পিসি। কাকার ছেলে অরিজিৎ কর্মসূত্রে পটনায় থাকেন। সেই ঘটনার পরে তাঁর মা আশা সেন ও পিসি কানন হালদার হোটেলে ছিলেন। এখন বেলেঘাটার ভাড়া বাড়িতে আছেন। ভাড়া দেয় মেট্রো। এ দিন পটনা থেকে অরিজিৎ বললেন, ‘‘টিভি দেখে ঘটনাটি জানতে পেরেছেন মা। ক্ষতিগ্রস্তদের কথা ভেবে খুব খারাপ লাগছে।” অরিজিৎ জানান, মেট্রো কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন, বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বাড়ির অনেকটা ভাঙা হয়েছে।

পুজোয় এসেছিলেন। সপ্তমীতে নিজেদের ভাঙা পড়া ভিটেতেই চন্দন-হলুদ-সিঁদুরের ফোঁটা দিয়েছেন। কালীপুজোয় আবার আসবেন। অরিজিৎ বললেন, ‘‘কালীপুজোর দিন বেলেঘাটার ভাড়া বাড়িতে কুলবিগ্রহের পুজোর পরে দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িতে প্রদীপ জ্বালাব।”

দুর্গা পিতুরি লেনের ১৯ নম্বর বাড়ির কয়েকটি পরিবার এখন রয়েছে বেলেঘাটার ভাড়া বাড়িতে। তাঁদেরই এক জন বিশ্বজিৎ ঠাকুর জানালেন, ভাড়া দেয় মেট্রোই। প্রতিদিন বেলেঘাটা থেকে শিয়ালদহে আসেন। তার পরে হেঁটে বৌবাজারের পুরনো পাড়া দিয়ে চাঁদনি চকের কর্মক্ষেত্রে পৌঁছন। বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘আবার পুরনো পাড়ায় ফিরে আসতে চাই। বেলেঘাটা থেকে কাজের জায়গায় আসতে খুব সমস্যা হচ্ছে।”

কাউন্সিলর জানান, সকলেই ফিরে আসতে চান। কিন্তু প্রশ্ন হল, কবে ফিরতে পারবেন? তাঁর কথায়, ‘‘এ নিয়ে তিন বার বাড়িতে ফাটল ধরার ঘটনা ঘটল। মেট্রো কর্তৃপক্ষ আগে এটা বন্ধ করুন। তার পরে তো বাসিন্দাদের ঘরে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হবে।”

Bowbazar Building Cracked East West Metro
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy