প্রতীকী ছবি
সাঁতার জানতেন না আঠারো বছরের তরুণ। তবু মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের সঙ্গে গঙ্গায় স্নান করতে যেতেন। বৃহস্পতিবার সকালে কামারহাটিতে গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে মৃত্যু হল মহম্মদ সুহান নামে সেই তরুণের। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে স্রোতের টানে ভেসে যাওয়া আর এক যুবককে অবশ্য স্থানীয়েরা উদ্ধার করেছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, সুহান কামারহাটির আনোয়ারবাগানের বাসিন্দা। প্রাণে বেঁচে যাওয়া অপর যুবকের নাম মহম্মদ নিহাজ়। বিহারের বাসিন্দা নিহাজ় কামারহাটির মাদ্রাসায় থেকে পড়াশোনা করেন। এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ জনা পাঁচেক বন্ধুর সঙ্গে সুহান ও নিহাজ় পিটুরি ঘাটে স্নান করতে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষণ ধরে তাঁরা গঙ্গায় স্নান করছিলেন। সেই সময়ে আচমকা দেখা যায়, সুহান স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছেন। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে যান নিহাজ়। তাঁর কথায়, ‘‘জলের টান ছিল তীব্র। সুহানের হাত ধরে রাখতে পারছিলাম না। আমিও এক সময়ে ডুবে যাচ্ছিলাম।’’
দু’জনের অবস্থা দেখে বাকি বন্ধুরা চেঁচামেচি শুরু করেন। সেই সময়ে ওই ঘাটে বসে ছিলেন স্থানীয় যুবক শচীন মিশ্র-সহ কয়েক জন। শচীন বলেন, ‘‘চেঁচামেচি শুনে দেখি, দু’জন স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছেন। এক জন হাবুডুবু খাচ্ছেন। তৎক্ষণাৎ কয়েক জন জলে ঝাঁপ দিই। কোনওমতে এক জনকে টেনে নিয়ে এলেও অপর জন সেই যে ডুবে গেলেন, আর পাওয়া যায়নি।’’ খবর পেয়ে আসে কামারহাটি থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন সুহানের বাবা মহম্মদ জালালউদ্দিন। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে সাঁতার জানত না, তাই গঙ্গায় নামতে বারণ করতাম। তবু বন্ধুদের সঙ্গে গঙ্গায় চলে আসত। তাতেই সব শেষ হয়ে গেল।’’ পুলিশ জানাচ্ছে, ঘটনার পরে শচীন-সহ স্থানীয়েরা খুঁজতে শুরু করেন সুহানকে। অন্য দিকে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও খবর দেওয়া হয়। প্রায় ঘণ্টাখানেক খোঁজাখুঁজির পরে ঘাট থেকে কিছুটা দূরে উদ্ধার হয় সুহানের দেহ। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় কাউন্সিলর তথা কামারহাটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তুষার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘাটে প্রায়ই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। যাঁরা সাঁতার জানেন না, তাঁদের গঙ্গায় নামার বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। অভিভাবকদেরও নজর রাখতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy