Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

কলকাতার দুর্গাপুজো নিয়ে নতুন বই। না, সেই বহু আলোচিত হেরিটেজ পুজোর চর্বিতচর্বণ নয়। সূচনা নিয়ে তর্কবিতর্ক নয়, বরং পরিণতি নিয়ে সূক্ষ্ম বিচার-বিশ্লেষণ। একুশ শতক গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মা যাহা হইয়া উঠিয়াছেন, তার উপরেই নানা সম্ভব-অসম্ভব দিক থেকে আলো ফেলা।

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৩৮

নাগরিক শিল্প পার্বণ: অন্য চোখে দেখা

কলকাতার দুর্গাপুজো নিয়ে নতুন বই। না, সেই বহু আলোচিত হেরিটেজ পুজোর চর্বিতচর্বণ নয়। সূচনা নিয়ে তর্কবিতর্ক নয়, বরং পরিণতি নিয়ে সূক্ষ্ম বিচার-বিশ্লেষণ। একুশ শতক গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মা যাহা হইয়া উঠিয়াছেন, তার উপরেই নানা সম্ভব-অসম্ভব দিক থেকে আলো ফেলা। হবে না-ই বা কেন, চারশো পাতায়, বড় আকারে, অজস্র ছবি সহ মুদ্রিত ইন দ্য নেম অব দ্য গডেস/ দ্য দুর্গা পুজাস অব কনটেম্পোরারি কোলকাতা (প্রাইমাস বুকস) বইটি যে শিল্প-ঐতিহাসিক তথা সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সের অধিকর্তা তপতী গুহঠাকুরতার এক দশকের পরিশ্রমের ফসল। দুর্গাপুজোয় ‘শিল্প’ বিষয়টিই তাঁর ভাবনার কেন্দ্রে। তাঁর মতে, একুশ শতকের গোড়া থেকেই মোড় ফিরল বাঙালির সেরা পার্বণের, নতুন মাত্রা পেল এই নাগরিক উৎসব। একদিকে প্রচার-স্পনসর-পুরস্কারের বন্যা, অন্য দিকে কারু ও চারুকলার বিচিত্র ও অপরিমেয় প্রকাশ। তাই বনেদি বাড়ির পুজো নয়, আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পুজো নয়, বারোয়ারি, বিশেষ করে ‘থিম’ পুজোর আশ্চর্য ও ধারাবাহিক রমরমার মধ্যেই তিনি এক নতুন শিল্পধারার ইতিহাস খুঁজেছেন। সারা শহর জুড়ে এক বিপুল প্রদর্শনীতে মা দুর্গা দর্শকের সামনে ধর্মের গণ্ডি ছাড়িয়ে বহু রূপে প্রকাশিত: ভক্তের মা, বিজ্ঞাপনের ব্র্যান্ড ইমেজ, আবার নাগরিক রসিকের কাছে দর্শনীয়, এমনকী সংগ্রহযোগ্য শিল্পকর্ম। কেমন ‘শিল্প’? প্রতিমা যাঁরা তৈরি করছেন, তাঁরা কি ‘শিল্পী’ পদবাচ্য? ৩০ সেপ্টেম্বর সাড়ে ৬টায় ম্যাক্সমুলার ভবনে বইটি প্রসঙ্গে এই সব প্রশ্ন নিয়েই আলোচনা করবেন তপতী গুহঠাকুরতা ও মানস রায়।

বইয়ে বকুলবাগানের পুজোয় পেশাদার শিল্পীদের ভাবনায় প্রতিমা তৈরির দীর্ঘ ঐতিহ্য গুরুত্ব দিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। এর সূচনা হয় থিম পুজোর আবির্ভাবের অনেক আগে। কিন্তু শিল্পীরা এই কাজকে নিজেদের অন্যান্য সৃষ্টির সঙ্গে একাসনে রাখতে কতটা আগ্রহী, প্রশ্ন আছে তা নিয়েও। এ বারে বকুলবাগানের প্রতিমার দায়িত্বে পদ্মশ্রী শিল্পী মানু পারেখ। সম্প্রতি কাজ দেখতে এসে বলছিলেন, ‘সিমেট্রি’ নিয়েই আমার এ বারের ভাবনা। ভবানীপুরের মৃৎশিল্পী অরুণ পালের স্টুডিয়োতে আরও অনেক বিখ্যাত পুজোর প্রতিমার পাশাপাশি গড়ে উঠছে তাঁর দুর্গা (মাঝের ছবিতে অরুণ পালের সঙ্গে মানু পারেখ)। ছো মুখোশের আঙ্গিকে এই মূর্তিতে রঙ ধরাতে তিনি আবার আসবেন মহালয়ার পর। ছবি: গোপী দে সরকার।

পুথির কথা

পুথি সহজপাঠ্য নয়, সহজপাচ্য তো নয়ই। তাই নিয়ে সাড়ে সাতশো পাতার বিশেষ সংখ্যা? কঠিন কাজ সন্দেহ নেই। আর সুবর্ণজয়ন্তীর মুখে সেটাই করে ফেলেছেন অনিল আচার্য, তাঁর ‘অনুষ্টুপ’ পত্রিকায় (অতিথি সম্পাদক অণিমা মুখোপাধ্যায় ও প্রণবকুমার সাহা)। পুথি চর্চার দিকদিগন্ত এখানে সযত্নে উন্মোচিত, লেখকতালিকায় নবীন-প্রবীণের সহাবস্থান। পুথিপাঠ, পুথির শিল্পকলা, পুথি সংগ্রহ ও সম্পাদনা, মুসলিম পুথি, নতুন গবেষণার (বিশেষত অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায়ের কৃত্তিবাসের আত্মবিবরণ প্রসঙ্গ) সঙ্গে আছে বহু দুর্লভ পুরনো লেখা, পুথি বিশেষজ্ঞদের জীবনী, গ্রন্থপঞ্জি, আরও কত কী। ২৯ সেপ্টেম্বর সাড়ে ৫টায় মহাবোধি সোসাইটি হল-এ সংখ্যাটির উদ্বোধন উপলক্ষে আছে পুথি নিয়ে আলোচনাও, সভামুখ্য রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী।

অমল অ্যালবাম

অসঙ্গতিকে বিদ্রুপ, নিন্দনীয়কে সমালোচনা, ক্ষমতাসীনদের হাস্যাস্পদ করা, জনমত গঠন সবই রয়েছে অমল চক্রবর্তীর কার্টুনে। ১৯৫০-এর দশক থেকে প্রায় ৬৫ বছর ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কার্টুন আঁকছেন তিনি। অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি, দৈনন্দিন জীবনযাপন নিয়ে আঁকলেও অমল চক্রবর্তীর কার্টুনের বিষয় মূলত রাজনীতি। কার্টুন দল-এর সম্পাদনায় সেই বিশাল সম্পদের খানিকটা নিয়ে প্রকাশিত হল অমল অ্যালবাম (লালমাটি)। রয়েছে শংকর’স উইকলি, আনন্দবাজার, যুগান্তর, অমৃতবাজার, সংবাদ প্রতিদিন, সন্দেশ প্রভৃতিতে প্রকাশিত কার্টুন।

শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেস

স্কুলপড়ুয়া বা জীবনে কোনও দিন স্কুলে যায়নি অথচ বিজ্ঞানমনস্ক ১০-১৭ বছরের যে কেউ এই সম্মেলনে স্বাগত। সঙ্গে শুধু আনতে হবে নিজেদের গবেষণাপত্র বা গবেষণালব্ধ নমুনা। ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের সহায়তায় দেশজুড়ে হয় জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেস। বইয়ে পড়া শিক্ষা ও বাস্তব সমস্যা সমাধানের ব্যবধান কমানোই এর উদ্দেশ্য। পশ্চিমবঙ্গে ১৯৯৩ থেকেই সায়েন্স কমিউনিকেটর্স ফোরাম সমন্বয়ের দায়িত্বে। জেলা পর্যায় থেকে রাজ্য পর্যায়। জেলার পর্ব প্রায় শেষ, এ বার ৩-৪ অক্টোবর লরেটো স্কুলে (এন্টালি) বসবে রাজ্য কংগ্রেস। বিষয়: আবহাওয়া ও জলবায়ুকে জানা।

সমালোচক

‘বুদ্ধদেব বসু শ্রেষ্ঠ সমালোচকদের একজন... বিষ্ণু দে’র সমালোচনায় অসামান্য পরিপুষ্টি, ব্যাপ্তি, গভীর চিন্তা... জীবনানন্দ কবিতার অন্তররহস্য উন্মোচন করতেন...’, কবিদের সৃষ্টিশীল কলমে সাহিত্য আলোচনা কী ভাবে অসামান্য হয়ে উঠত, বলছিলেন অলোক রায়। ১০ সেপ্টেম্বর তাঁর বক্তৃতা দিয়েই ‘সমালোচকের সান্নিধ্য’ অনুষ্ঠান শুরু করল সাহিত্য অকাদেমি। সাহিত্য আলোচনায় নিজের ভূমিকার কথা লুকিয়ে রেখে দুর্লভ বাচনে তিনি উন্মোচন করছিলেন বাংলা সাহিত্য-সমালোচনার নানা দিকবদল, নতুন মোড়ের কথা— নিছক ‘রিভিউ’ বঙ্কিমচন্দ্র-রবীন্দ্রনাথের হাতে কী ভাবে পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধের রূপ পেত। পরিসমাপ্তিতে বলছিলেন রামকুমার মুখোপাধ্যায়: ‘সমালোচক কোনও সাধারণ পাঠক নন, প্রস্তুত দীক্ষিত পাঠক, নৈর্ব্যক্তিক ভাবে চিনিয়ে দেন সাহিত্যপাঠের চাবিকাঠি।’

যোগসূত্র

প্রতিবেশী সংস্কৃতির প্রতি মনস্কতা আমাদের প্রকৃত ভারতীয় করে তোলে। ছবি-করিয়ে জোশি যোশেফ কেরলের মানুষ, দীর্ঘকাল কলকাতার নাগরিক। তিনি ছবি করেছেন ওড়িশার বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার নীরদ মহাপাত্রকে নিয়ে (সঙ্গের ছবি), যিনি ‘মায়ামৃগ’ করে ঋদ্ধ করেছেন ভারতীয় সিনেমাকে। নীরদ কবিও, তাঁর ছবিতে দর্শন-রাজনীতি হাত ধরাধরি করে চলে। ছবিটি দেখা যাবে ২৯ সেপ্টেম্বর নন্দনে সন্ধে ৬টায়, ‘ফিল্ম মেমোয়ার্স: মাস্টারস অব ইন্ডিয়ান সিনেমা’ অনুষ্ঠানে। নীরদ যাঁর ‘ভুবন সোম’ দেখে প্রাণিত হয়েছিলেন, থাকছে সেই মৃণাল সেনকে নিয়েও নৃপেন গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি। দু’টিই ফিল্মস ডিভিশনের ছবি, তাদের ও নন্দনের যৌথ উদ্যোগে এ আয়োজন। অন্য দিকে বিশিষ্ট মরাঠি নাট্যকার মহেশ এলকুঞ্চওয়ারের ‘ফ্লাওয়ার অব ব্লাড’ অবলম্বনে অধীতী মঞ্চস্থ করছে ‘রক্তপুষ্প’ (শান্তা গোখলের ইংরেজি অনুবাদ থেকে শর্মিলা মৈত্রের বঙ্গানুবাদ)। নাট্যগোষ্ঠীর মুখ্য দুই অভিনেতা দেবাশিস ও অরুণিতা রায়চৌধুরী বহু দিন ধরে বঙ্গরঙ্গমঞ্চে উল্লেখযোগ্য কাজ করে চলেছেন। ৩ অক্টোবর অ্যাকাডেমিতে সকাল সাড়ে দশটায় দেবাশিসের নির্দেশনায় তাঁদের প্রথম অভিনয়।

বঙ্গের শিল্পধারা

অবিভক্ত বাংলায় কত বিচিত্র ধরনের কাঁথা তৈরি করতেন মেয়েরা। কালের প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে এই সূচিশিল্প। কাঁকুড়গাছির জনজাতি সংগ্রহালয়ে নৌকা সংগ্রহের সঙ্গেই গড়ে তোলা হয়েছে বাংলার কাঁথা এবং পুতুল (সঙ্গের ছবি) নিয়ে একটি সংগ্রহ। আজ দুপুর ১ টায় ‘বঙ্গের শিল্প: জনগোষ্ঠীগত ঐতিহ্যের পুনর্মূল্যায়ন’ নামের এই সংগ্রহশালার উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। প্রকাশিত হবে বই বঙ্গের কাঁথা। ৩০ তারিখ পর্যন্ত এখানে কাষ্ঠ শিল্প, কাঁথা শিল্প এবং পুতুল তৈরির কর্মশিবির হবে। প্রদর্শনী ১২-৭টা। অন্য দিকে সম্প্রতি ছিটকালিকাপুরে লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের উদ্যোগে ছিল দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রসমীক্ষক-গবেষকদের নিয়ে একটি আলোচনাসভা। লোকগ্রামের লালন মঞ্চে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশিত হল মুহম্মদ আয়ুব হোসেনের বই মহিলা কথকদের কেচ্ছা এবং রূপকথা।

নবীন দল

‘প্যাশনেট অভিনেতা সবাই...’, নিজেদের নাট্যগোষ্ঠী ‘ক্যাথারসিস’ সম্পর্কে বলছিলেন অনীশ কয়াল। তিনি আর অনমিত্র সাহা মিলে তৈরি করেছেন এই নাট্যদল, তাঁরা সকলেই পার্ক সার্কাস ডন বস্‌কো স্কুলের। আবেগের নিবৃত্তি তাঁদের শিল্পের অভিপ্রায়, তারুণ্যের আত্মবিশ্বাস তাঁদের ধমনীতে। নতুন নাটক লিখে ফেলেছেন অনীশ, ঋভু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ঋভুই নির্দেশক, নাটকের নাম ‘আনটাইটেল্‌ড’। এক অভিনেতার অভিনয় আর তাঁর জীবন নিয়ে, তাঁর মানসিক টানাপড়েনের ওপরই দাঁড়িয়ে আছে গোটা নাটকটা। ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায় তপন থিয়েটারে প্রথম অভিনয়। কলকাতা রমরমা আয়োজিত দু’দিন ব্যাপী নাট্যোৎসবে।

পুজোর মুখে

জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ ছিলেন একাধারে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শী। গীতরচনা ও সুর সংযোজনায় দক্ষ ছিলেন গোপাল দাশগুপ্ত। দক্ষিণামোহন ঠাকুর ছিলেন একাধিক তারযন্ত্রের জাদুকর। তিনগুণীর ত্রিবেণী-সঙ্গমে সমৃদ্ধ হয়েছিল আকাশবাণীর রম্যগীতি। এর জন্য কলম ধরেছিলেন প্রেমেন্দ্র মিত্র, বনফুল। মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র বা সবিতা চৌধুরীর কণ্ঠে সে সব গান আজও অমলিন। রম্যগীতির সেই নস্টালজিয়াকে ফিরিয়ে আনছে আকাশবাণী। তিনটি কম্প্যাক্ট ডিস্কে। ৩ অক্টোবর নজরুল মঞ্চে বিকেল পাঁচটায় উদ্বোধন। অন্য দিকে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি ও পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের উদ্যোগে আকাদেমি-রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণে শারদ বই পার্বণ চলবে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত (২-৮টা)। গোটা চল্লিশ স্টলে বিপুল ছাড়ে মিলবে বহু প্রকাশকের বই।

মাতৃরূপেণ

সুমিত, শান্তনু, সুমন— তিন শিক্ষানবিশ চিত্রসাংবাদিকের সঙ্গে পরিচয় হইল বনমালী সরকার স্ট্রিটে। এক্ষণে গলিতে-গলিতে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের আসিবার বিরাম নাই। রাজধানীর এক সাংবাদিক বলিলেন— ‘লাস্ট ফরটিএইট আওয়ার্স আই অ্যাম হিয়ার। ইট ইজ সো অ্যামেজিং। আপনাদের এই কুমোরটুলিতে জীবন যেন ফুটছে।’ একই সুর তিন তরুণের, ‘ভাগ্যিস এসেছিলাম। যে-সব ঠাকুর ছোট থেকে বিখ্যাত প্যান্ডেলে দেখেছি, সেগুলো প্রায় সবই এখানে তৈরি হচ্ছে!’ মস্কো হইতে আসিয়াছেন জয়া লিস্টাভিনোভা, ভারতের ‘মোস্ট গরজাস অ্যান্ড কালারফুল ফেস্টিভাল’ সম্পর্কে গবেষণা করিতে। মৃৎপাত্রে ধূমায়িত চা সেবন করিতে করিতে যাহা বলিলেন তাহার মর্মার্থ, ‘আমি জীবনে এমন কিছু এক্সপিরিয়েন্স করব ভাবিনি। কাঠের সরু-সরু পেন্সিলের মতো জিনিস দিয়ে নাক-কান-চোখ-মুখ আঁকা হচ্ছে। আর তোমরা এখনও ছেলেমেয়েদের খুব হেল্‌দি পছন্দ কর। মূর্তির হাত-পা সব গোল-গোল। ইউরোপ খালি স্লিম হতে চায়। বাট্ আমি ভীষণ ভীষণ চার্জড এই ওয়ার্কশপ দেখে। মনে হচ্ছে এক্ষুনি একটা ইন্টারন্যাশনাল ডকু-ফিল্ম বানাই।’ বুঝ লোক, কেন মা দুর্গা জগজ্জননী!

আলোকিত

বৈষ্ণব ধর্ম্মের অভ্যুত্থানে বঙ্গীয় সাহিত্যজগতে এক যুগান্তর উপস্থিত হইল।... এই সময় হইতেই প্রকৃত প্রস্তাবে বাঙ্গালা ভাষার গৌরবের যুগ আরম্ভ হইল।’ লিখছেন মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী (১৮৬০-১৯৩০), ‘সাহিত্য-সভা’র সভাপতির অভিভাষণে: ‘বাস্তবিকই বাঙ্গালা সাহিত্যের বর্ত্তমান উন্নতির আলোচনা করিলে গৌরবে আমাদের বক্ষ স্ফীত হয়।... ফারসী, গ্রীক্, ফ্রেঞ্চ, সংস্কৃত প্রভৃতি ভাষা হইতে বিবিধ গ্রন্থসমূহ বঙ্গভাষায় অনূদিত হইয়া সাহিত্যের শ্রীবৃদ্ধি করিতেছে।’ এমন রচনা থেকে মননশীল মণীন্দ্রচন্দ্রকে চেনা যায়। তাঁর প্রদত্ত জমিতেই ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ’ ভবন নির্মাণ। তাঁর আর্থিক সাহায্যেই হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ গ্রন্থ রচনা। তাঁর উদ্যোগেই রবীন্দ্র-সভাপতিত্বে ঐতিহাসিক সাহিত্য সম্মিলন কাশিমবাজার রাজবাড়িতে। তাঁর চিন্তাচর্চাজনিত রচনা বাংলা সাহিত্যের সম্পদ, সেগুলি আজ দুর্লভ। তাঁর পাঁচটি অভিভাষণ অমরনাথ করণ সংকলন করলেন গ্রন্থাকারে— মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর অগ্রন্থিত রচনা (সূত্রধর)। ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়িতে (৬৭ই বিডন িস্ট্রট) ১ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ৬টায় গ্রন্থটি প্রকাশ করবেন মণীন্দ্রচন্দ্রের পৌত্র সোমেন্দ্রচন্দ্র নন্দী। সূত্রধরের আয়োজনে মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী স্মারক বক্তৃতা দেবেন দেবাশিস বসু, বিষয়: ‘শহর কলকাতার পথ-নাম’। সভাপতি অলোক রায়। নিত্যনতুন নামাবলি কী ভাবে মুছে দেয় ইতিহাস, সে কথা জানা দরকার বইকী।

শচীন-স্মরণ

শুধুমাত্র সুরের জন্য, ত্রিপুরার রাজকুমার রাজত্ব ছাড়লেন। গড়ে তুললেন গানের নতুন সাম্রাজ্য। শিল্পী শচীনদেব বর্মনের সংগীতজীবনকে এ ভাবেই নাটকের আঙ্গিকে উপস্থাপন করতে চলেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র, শচীনকর্তার জন্মদিনে। সেই উপস্থাপনার অঙ্গ পুত্র রাহুলদেবের উত্থানও। সঙ্গে মীরাদেব বর্মন ও তাঁর সঙ্গীত। যিনি এক জনের স্ত্রী আর এক জনের মা। এ সব মিলিয়েই দেবজ্যোতির পরিকল্পনায় মঞ্চস্থ হতে চলেছে ‘স্টোরি অব বর্মনস’: শচীনদেবের জন্মদিনে তাঁর শ্রদ্ধার্ঘ্য। ‘কার্টেন রেজার্স’-এর উদ্যোগে ১ অক্টোবর সন্ধে ছ’টায় কলামন্দিরে অনুষ্ঠান। দেবজ্যোতি কাজ শুরু করেন সলিল চৌধুরীর সহকারী হিসেবে। বেশ কিছু বাংলা ও হিন্দি ছবিতে আর ডি-র সঙ্গেও কাজ করেছেন। পরে ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা। ‘দহন’ থেকে শুরু করে ‘অসুখ’, ‘উৎসব’, ‘বাড়িওয়ালি’, ‘তিতলি’, ‘শুভ মহরৎ’ বা ‘রেনকোট’ দেবজ্যোতিকে দিয়েছে সর্বভারতীয় পরিচয়। সুমন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ ‘তিস্তাপারের বৃত্তান্ত’ ‘মেফিস্টো’, ‘রাজা লিয়ার’ নাটকে, আর ‘চতুরঙ্গ’, ‘শেষের কবিতা’ ছবিতে। তাঁর ঝুলিতে ৫০০-রও বেশি বিজ্ঞাপনের গান। অন্য দিকে ২ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে পাঁচটায় আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠান ‘শচীন সুরে সোনালি’। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী সোনালি রায় ‘গাইড’, ‘অভিমান’, ‘মিলি’, ‘চুপকে চুপকে’ সহ বিভিন্ন ছবির গানকে নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করবেন।

kolkatar karcha karcha short brief news short story kolkata short story
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy