আর জি কর হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলিতে দালাল-চক্র কী ভাবে কাজ করে, তা বেআব্রু হয়ে গেল বৃহস্পতিবার। হাসপাতালের কর্মী, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও দালালদের যোগসাজশের কথা আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টের পেলেন না কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন এক রোগীর পরিজনেরা।
গত ৬ ডিসেম্বর ছেলের হাড়ের চিকিৎসার জন্য আর জি করের বহির্বিভাগে যান কেষ্টপুরের জয়িতা বিশ্বাস। তাঁর ছেলে, বছর আঠাশের দেবজ্যোতির কাঁধের হাড় সরে গিয়েছিল। অস্থি-চিকিৎসক এমআরআই করাতে বলেন। পরীক্ষা করাতে হাসপাতাল চত্বরের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ছেলেকে নিয়ে যান জয়িতা। সেখানে বলা হয়, মাস দুয়েকের আগে তারিখ পাওয়া সম্ভব নয়। পরে এক পরিচিতের কাছে এ নিয়ে আক্ষেপ করেন জয়িতা। ওই ব্যক্তি জামশেদ আলম নামে এক জনের ফোন নম্বর দেন। জামশেদের সূত্রে অরিন্দম দাস নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে জয়িতার আলাপ হয়।
অরিন্দম নিজেকে হাসপাতালের ‘ওপিডি সুপারভাইজার’ বলে পরিচয় দেয়। শনিবার দেবজ্যোতি ও জয়িতাকে ওপিডি ভবনে আসতে বলে সে। জয়িতার কথায়, ‘‘ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে এমআরআইয়ের ব্যবস্থা হয়ে গেল। কিন্তু ওরা ২৭০০ টাকা চেয়েছিল।’’ টাকা দিতে দেবজ্যোতি রাজি হননি। জয়িতা জানান, রসিদ কেটে ফেলায় পরীক্ষা হয়ে যায়। কিন্তু টাকা না দিলে রিপোর্ট মিলবে না বলে জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের হেল্প ডেস্কের কর্মীদের পরামর্শে দালাল-চক্রের অন্যতম সদস্য জামশেদকে টাকার টোপ দিয়ে ডেকে পাঠান জয়িতা। জামশেদ এলে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে সুপার মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ করেছেন জয়িতা। এই ঘটনায় অপর অভিযুক্ত অরিন্দমকে ফোনে ধরা হলে সে প্রথমে বারবার বয়ান বদলায় এবং শেষে অভিযোগ অস্বীকার করে।
জয়িতা বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় এ ধরনের চক্র চলছে কী ভাবে? বহু মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন।’’ অভিযোগকারিণী আর জি করের চিকিৎসক শঙ্কর মজুমদারের আত্মীয়। এ দিন ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে মুষ্টিমেয় কয়েক জনের জন্য রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’’
অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘শহরের বাইরে রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy