Advertisement
E-Paper

বিধায়কের ‘বাধা’, কাজ বন্ধ আবাসনে

সম্প্রতি আবাসনের মধ্যে অসামাজিক কাজ বেড়ে যাওয়ায় ও আবাসনের জমি দখল হয়ে বাজার, দোকান তৈরি হওয়ায় আবাসিকেরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। শেষে তাঁদের দাবি মেনে গোটা এলাকায় সীমানা পাঁচিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্ত্রীয় পূর্ত দফতর। বরাদ্দ হয় প্রায় ৪ কোটি টাকা।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৭ ১২:৩০
এই আবাসনে সীমানা পাঁচিল দেওয়া ঘিরেই অশান্তি। নিজস্ব চিত্র

এই আবাসনে সীমানা পাঁচিল দেওয়া ঘিরেই অশান্তি। নিজস্ব চিত্র

মোট জায়গা ৬৪ একর। কিন্তু কোনও সীমানা পাঁচিল নেই! এর ফলে জবরদখলই শুধু নয়, সকাল থেকে বসে বহিরাগতদের জুয়ার আড্ডা। চলে সাট্টার প্যাড। সন্ধ্যা হলেই শুরু হয়ে যায় অসামাজিক কাজকর্ম। বাসিন্দাদের অভিযোগ তেমনই। আতঙ্কিত আবাসিকদের নিরাপত্তা বাড়াতে সীমানা পাঁচিল দিতে শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতর। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক দলবল নিয়ে বাধা দেওয়ায় কাজ বন্ধ করে ফিরে যেতে হয়েছে দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের।

এমনই ঘটেছে হাওড়ার জগাছায়, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী আবাসনে। যা ওই এলাকায় সরকারি প্রেস কোয়ার্টার্স বলে পরিচিত। রাজ্যের সব থেকে বড় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ওই আবাসনে চারতলা ফ্ল্যাট রয়েছে দেড় হাজার। থাকেন প্রায় তিন হাজার সরকারি কর্মচারী। বসবাসকারীদের মধ্যে যেমন সরকারি প্রেসের কর্মীরা আছেন, তেমনই রয়েছে ডাক, বিএসএফ, সিআইএসএফ, সিআরপিএফের মতো আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের পরিবার।

সম্প্রতি আবাসনের মধ্যে অসামাজিক কাজ বেড়ে যাওয়ায় ও আবাসনের জমি দখল হয়ে বাজার, দোকান তৈরি হওয়ায় আবাসিকেরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। শেষে তাঁদের দাবি মেনে গোটা এলাকায় সীমানা পাঁচিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্ত্রীয় পূর্ত দফতর। বরাদ্দ হয় প্রায় ৪ কোটি টাকা।

কিন্তু ওই দফতরের অভিযোগ, আবাসনের দক্ষিণ প্রান্তে পাঁচিল দেওয়ার ভিত খোঁড়ার পরেই দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে কাজ বন্ধ করে দেন শিবপুর কেন্দ্রের বিধায়ক জটু লাহিড়ী। তিনি দাবি তোলেন, পাঁচ ফুট জায়গা ছেড়ে‌ পাঁচিল দিতে হবে এবং দ্বিতীয়ত, আবাসনের ভিতরে যে সব রাস্তা এলাকার বাসিন্দারা এত দিন ধরে ব্যবহার করে আসছেন, সেই রাস্তাগুলি ছেড়ে পাঁচিল দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কমলেশ কুমার বলেন, ‘‘বিধায়ক বাধা দেওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিনি যে দু’টি শর্ত দিয়েছেন, মানা সম্ভব নয়। আমাদের জমিতে কী করব, সেই সিদ্ধান্ত নেব আমরাই।’’ অভিযোগ মানতে চাননি জটুবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমি বাধা দিইনি। শুধু বলেছি এলাকার বাসিন্দাদের অসুবিধা করে পাঁচিল করা যাবে না। এত বছর ধরে এক পাড়া থেকে অন্য পাড়ায় যেতে হলে মানুষ প্রেস কোয়ার্টার্সের ভিতর দিয়ে যেতেন। ওই পাঁচিল হলে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই রাস্তা ছেড়ে পাঁচিল দিতে হবে।’’

যদিও কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরের বক্তব্য, এ ভাবে পাঁচিল দেওয়া যায় না। তাই পুরো প্রকল্পটাই বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া পথ নেই। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ আবাসনের বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, দখলদার ও বেআইনি কারবারিদের কথা শুনে বিধায়ক এ কাজ করছেন। বাসিন্দা বাবলু তলাপাত্র বলেন, ‘‘পাঁচিল দিলে বহিরাগতদের ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে। তাঁরাই এই কাজে বাধা দিচ্ছেন।’’

যদিও এই বাধাকে গুরুত্বই দিতে রাজি নন আবাসনের বাসিন্দা, কেন্দ্রীয় শ্রমিক কর্মচারী কো-অর্ডিনেশন কমিটির হাওড়ার দায়িত্বে থাকা সাধারণ সম্পাদক অমিত দে। তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি আমাদের কিছু ইঞ্জিনিয়ারের অপদার্থতার জন্যই কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁদের আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।’’

Building Crime Corruption আবাসন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy