Advertisement
E-Paper

একে চিনে রাখুন, শহরে একের পর এক চুরির মূল পাণ্ডা এই গুণধর

বেড়াতে যাওয়ার কয়েক দিন আগেই সদর দরজায় একটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে সেই ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন, শুক্রবার রাত ৩.৪২ মিনিট নাগাদ দুই যুবক হাজির হয় বাড়ির দরজায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:১৮
সন্তোষপুরে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া ছবি।

সন্তোষপুরে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া ছবি।

পুজোর ছুটিতে সপরিবারে সিকিমে বেড়াতে গিয়েছিলেন সার্ভে পার্কের বাসিন্দা সন্দীপন কুণ্ডু। ফেরার কথা ছিল রবিবার। কিন্তু, শুক্রবার সাত সকালে এক প্রতিবেশীর ফোন পেয়ে তাড়াহুড়ো করে ফিরতে হয় তাঁকে।

পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী সন্দীপন শনিবার দুপুরে বাড়ি ফিরে রীতিমতো তাজ্জব হয়ে যান। সন্তোষপুর অ্যাভিনিউয়ের একটি বহুতলের একতলায় তাঁর ফ্ল্যাট। ফিরে দেখেন, কোলাপসিবল থেকে কাঠের দরজা— সব কিছুরই তালা ভাঙা। ভিতরে স্টিলের আলমারি ভেঙে তছনছ করা হয়েছে। সোনার গয়না থেকে শুরু করে নগদ টাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি, সব গায়েব। এ দিন সন্দীপন বলেন, “ষষ্ঠীর দিন আমরা বেড়াতে যাই। শুক্রবার সকালে আমার এক প্রতিবেশী সুজয় দাশগুপ্ত আমাকে ফোন করে বলেন যে, আমার ঘরের দরজা খোলা, তালা ভাঙা। তখনই আমি তড়িঘড়ি বিমান ধরে কলকাতায় ফিরে আসি।” সন্দীপন সার্ভে পার্ক থানায় অভিযোগ করেছেন, প্রায় তিন লাখ টাকার সোনার গয়না চুরি গিয়েছে তাঁর।

বেড়াতে যাওয়ার কয়েক দিন আগেই সদর দরজায় একটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে সেই ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন, শুক্রবার রাত ৩.৪২ মিনিট নাগাদ দুই যুবক হাজির হয় বাড়ির দরজায়। তার পরেই তাদের চোখে পড়ে দরজার মাথায় লাগানো সিসি ক্যামেরা। সঙ্গে সঙ্গে তারা কাপড় দিয়ে নিজেদের মুখ ঢেকে নেয়। যুবকদের এক জন উপরে উঠে সিসি ক্যামেরার মুখও ঘুরিয়ে দেয়। অবশ্য সেই ফাঁকেই এক যুবকের মুখের ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। পুলিশকে সেই ফুটেজ ইতিমধ্যেই দিয়েছেন সন্দীপন। তিনি বলেন, ‘‘ঘরে বিছানার উপর খালি গয়নার বাক্সের পাশে একটি ছোট লোহার শাবল পড়ে ছিল।’’ সেটিও পুলিশকে দিয়েছেন তিনি। তদন্তকারীদের সন্দেহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও গ্যাং এই চুরির পিছনে রয়েছে। সার্ভে পার্ক এলাকায় আরও কয়েকটি বাড়িতে একই কায়দায় চুরি হয়েছে। তালা ভাঙতে ব্যবহার হয়েছে ওই শাবল।

সার্ভে পার্ক ছাড়াও পঞ্চসায়র এলাকাতেও ঠিক একই ভাবে ফাঁকা বাড়িতে চুরির অভিযোগ জানিয়েছেন বিথিকা দত্তগুপ্ত। তিনিও পুজোতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন তালা ভেঙে সব নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোরেরা।

আরও পড়ুন: বাইকে স্টান্টবাজি দেখাতে গিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে মৃত্যু কিশোরের

আরও পড়ুন: দুর্ঘটনা দেখেও পালিয়ে গিয়েছিলেন সিধুর স্ত্রী?

এ বছর পুজোর আগেই কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে লিফলেট ছাপিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেই সতর্কবার্তায় লেখা হয়েছিল, পুজো নিয়ে যখন মানুষ মেতে থাকেন, তখন চুরির সুযোগ পায় দুষ্কৃতীরা। সেই কারণে পুজোর মধ্যে বাড়ি ফাঁকা রেখে যেতে না করা হয়েছিল। কিন্তু সেই লিফলেট নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায়, শেষ পর্যন্ত তা বিলি করা হয়নি। গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “গোটা দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতায় পুজোর মধ্যে ফাঁকা বাড়িতে প্রায় সাত-আটটি চুরির ঘটনা ঘটেছে।” সন্দীপনের বাড়িতে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, শুক্রবার রাতে চুরির আগে দু’দিন ওই যুবকরা ভাল করে পরীক্ষা করে গিয়েছে গোটা এলাকা। ওই যুবকদের চিহ্নিত করতে পারলে গোটা গ্যাংটি ধরা পড়বে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

Crime Kolkata Police Burglary CCTV
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy