Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মেট্রো চত্বরে বাস, বাড়ছে ঝুঁকি

টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশন থেকে বেরোতেই দেখা গেল, বাসের জন্য অপেক্ষারত দীর্ঘ লাইন ঠেলে বেরোতে হচ্ছে মেট্রোযাত্রীদের। দিনের এবং সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে মেট্রো ও বাসযাত্রীর মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও হয়ে যায়।

বিপদ: মেট্রো স্টেশন চত্বরে বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। নিজস্ব চিত্র

বিপদ: মেট্রো স্টেশন চত্বরে বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ০৪:০৭
Share: Save:

লম্বা লাইন সর্পিল গতিতে পৌঁছে গিয়েছে মেট্রোর মূল গেট পর্যন্ত। বাসের লাইন গিয়েছে মেট্রোর সামনের ফাঁকা চত্বর ছাড়িয়ে বড় রাস্তা পর্যন্ত। এক এক সময়ে ভিড় সামাল দিতে কিছু বাসকে রাস্তা থেকেই যাত্রী তুলে গন্তব্যে রওনা হতে হচ্ছে। অভিযোগ, বাসের লম্বা লাইনের জন্য রাস্তার অর্ধেক এবং মেট্রো চত্বরের অনেকটা অংশ চলে যাচ্ছে বাসের দখলে। যার জেরে দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলে দাবি যাত্রীদের একাংশের। এমনই পরিস্থিতি টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশন চত্বরের।

টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশন থেকে বেরোতেই দেখা গেল, বাসের জন্য অপেক্ষারত দীর্ঘ লাইন ঠেলে বেরোতে হচ্ছে মেট্রোযাত্রীদের। দিনের এবং সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে মেট্রো ও বাসযাত্রীর মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও হয়ে যায়। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘দেখুন, উল্টো দিকেই রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রামওয়েজ কোম্পানির ডিপো। তবু যে বাসগুলো কেন এ ভাবে দাঁড়াচ্ছে!’’

সমস্যাটা শুরু হয়েছিল মাঝেরহাট সেতু ভঙ্গের পরে। বেহালা, জোকা, ঠাকুরপুকুর রুটের যাত্রীদের জন্য টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের বাইরে থেকে সরকারি বাস চালু করেছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। তাতে বহু মানুষের সুবিধা হচ্ছে দেখে এখনও সেই সব বাস চালানো হচ্ছে। কিন্তু উল্টোদিকের ডিপোয় কেন দাঁড়াচ্ছে না? ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রামওয়েজ কোম্পানির এক কর্মী জানান, ফাঁকা জায়গা যা ছিল, তা বিক্রি করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে মেট্রো যাত্রীদের অসুবিধা হলেও কিছু করা যাচ্ছে না।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সংস্থা সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর খালি জায়গা ‘উদ্বৃত্ত’ জানিয়ে বেসরকারি সংস্থাকে বিক্রি করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, সেখানে বেসরকারি সংস্থার নির্মাণ হবে। বর্তমানে বাকি যেটুকু জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে সেখানে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে নষ্ট হওয়া বাস। যাত্রীদের দাবি, জমি যদি বিক্রি না হত, বর্তমানে চালু হওয়া বাসগুলি সেখানেই দাঁড়াত। তা হলে এই সমস্যা হত না। রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তাদের অবশ্য ভিন্ন মত। তাঁদের যুক্তি ‘‘মেট্রোর যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্যই ওখানে বাস দাঁড় করানো হয়। যাতে মেট্রো থেকে নেমে মানুষ বাস ধরতে পারেন।’’ তাঁদের দাবি, ট্রাম ডিপোয় বাস দাঁড়ালে মেট্রোযাত্রীদের রাস্তা পারাপার করতে হত। তাতে গাড়ি চলাচলের আরও সমস্যা হত। কারণ, মানুষ সাবওয়ে ব্যবহার করছেন না দেখে পুলিশ রাস্তা ঘিরে দিয়ে পারাপার বন্ধ করেছে।

প্রশ্ন উঠেছে মেট্রোর জায়গায় এ ভাবে কি বাসস্ট্যান্ড তৈরি হতে পারে? এ নিয়ে কি মেট্রোর সঙ্গে কথা হয়েছে? মেট্রোর জন-সংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়সারা উত্তর, ‘‘আমি বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।’’

কী বলছেন পরিবহণ কর্তারা? ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের অধিকর্তা নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, ‘‘জরুরিভিত্তিক পরিস্থিতিতে ওই বাসগুলি চালু হয়েছিল। যদি সেগুলি নিয়ে ট্র্যাফিকের সমস্যা হয় তখন বাসগুলি ডিপো থেকেই ছাড়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’ কী বলছে ট্র্যাফিক পুলিশ? এক ট্র্যাফিক কর্তার কথায়, ‘‘সমস্যা একটু হচ্ছেই। তবে ডিপোয় বাস সরালে যাত্রীদের রাস্তা পার হতে হবে। তাতেও তো ঝুঁকি থাকবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Metro Station Bus Depo WBTC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE