Advertisement
E-Paper

বিপদ মাথায় নিয়ে চলছে পুর বাজার

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তুলনায় কম অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র, মাথার উপরে তারের জট, দোকানের ছাউনিতে প্লাস্টিকের ব্যবহারে বাজার যেন এক জতুগৃহ! বাজারের ভিতরেই স্টোভ জ্বালিয়ে চলছে চা-জলখাবার তৈরি। আগেও হচ্ছিল, অগ্নিকাণ্ডের পরেও চলছে। কোনও পরিবর্তন নেই। 

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৯
বিপদ: প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে বাজার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

বিপদ: প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে বাজার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

দিন কয়েক আগেই গড়িয়াহাট বাজার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বের এক বহুতলে ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। যে কোনও দিন তেমনই কিছু ঘটার আতঙ্কে দিন গুনছেন গড়িয়াহাট পুর বাজারের ব্যবসায়ীরাও।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তুলনায় কম অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র, মাথার উপরে তারের জট, দোকানের ছাউনিতে প্লাস্টিকের ব্যবহারে বাজার যেন এক জতুগৃহ! বাজারের ভিতরেই স্টোভ জ্বালিয়ে চলছে চা-জলখাবার তৈরি। আগেও হচ্ছিল, অগ্নিকাণ্ডের পরেও চলছে। কোনও পরিবর্তন নেই।

বাজার সূত্রের খবর, চারতলা ওই বাজারের উপরের তলায় রয়েছে পুরসভার কয়েকটি অফিস। বাকি তিনটি তলাই পুর বাজারের অন্তর্গত। প্রতি তলায় রয়েছে অসংখ্য দোকান। একতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেল, সিঁড়ির কাছে একটি বা খুব বেশি হলে দু’টি অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র ঝোলানো রয়েছে। ঘিঞ্জি দোকানের মাঝখান দিয়ে সরু করিডর। সেখান দিয়েই যাতায়াত করছেন ক্রেতারা। কোথাও কোথাও সেই অপরিসর করিডরেই দোকানের জিনিস বোঝাই করে রাখা রয়েছে।

সব থেকে খারাপ অবস্থা মাছবাজার ও আনাজ বাজারের। মাছবাজারে সিলিং থেকে বিপজ্জনক ভাবে বিদ্যুতের তার ঝুলছে। দমকল যতই নির্দেশ জারি করুক, তারের জট কোথাও থাকবে না। আদতে তা যে খাতায়কলমে তা এই মাছবাজার ঘুরলেই স্পষ্ট হয়। নিয়ম ভেঙে ঘিঞ্জি বাজারেই স্টোভ জ্বালিয়ে চা-জলখাবার তৈরি হচ্ছে। মাছবাজার ও আনাজ বাজারের চালায়প্লাস্টিকের আচ্ছাদনের উপর দিয়েই বিদ্যুতের তার চলে গিয়েছে। কোনও ভাবে আগুন লাগলে প্লাস্টিক থেকে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে বিদ্যুতের তারে। যার জেরে অঘটন ভয়াবহ আকার নিতে পারে। মানছেন ব্যবসায়ীরাও।

তবে কেন এই নিয়ম ভাঙার খেলা? উত্তর নেই ব্যবসায়ীদের কাছে। আর প্রশাসন ‘করছি-করব’র সেই টানাপড়েনে। সম্প্রতি গড়িয়াহাট মোড়ের বহুতলের মতো বড় আগুন লাগলে যে তা মোকাবিলা করার পরিকাঠামো এই বাজারের নেই, তা স্বীকার করছেন ব্যবসায়ীরা। গড়িয়াহাট মার্কেট কল্যাণ সমিতির সেক্রেটারি শ্যামলকান্তি দে বলেন, ‘‘আগুন লাগলে কী ভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তা নিয়ে কয়েক জন দোকানদারকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল, সে সব হয়নি।’’ অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্রও প্রয়োজনের তুলনায় কম, বলছেন বেশিরভাগ দোকানদার। তাঁদের বক্তব্য, এই বাজার পুরসভার অধীন। তাই এ নিয়ে নজর দেওয়ার কথা পুরসভারই। তাঁদের দাবি, গড়িয়াহাট বাজারের পুর প্রতিনিধিদের তাঁরা বহু বার এই সব সমস্যার কথা জানিয়েছেন।

কলকাতা পুরসভার তরফে গড়িয়াহাট বাজারের আধিকারিক সুব্রত দত্তের দাবি, ‘‘অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র এখন কম আছে। তবে ১০০টি অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র সম্প্রতি কেনা হয়েছে। সেগুলি দিন কয়েকের মধ্যেই বাজারের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হবে।’’ সুব্রতবাবু জানান, দোকানদারদেরও বলা হয়েছে, ছোট অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র কিনে নিজেদের কাছে রাখতে। যাতে ছোট আগুন লাগলে দ্রুত নিভিয়ে ফেলা যায়। আগুন নেভানোর প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে দোকানদারদের।

তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে সব দোকানের ছাউনি প্লাস্টিকের, সেগুলি সরিয়ে কী ব্যবস্থা করা যায়, এ নিয়ে পুর কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর সুর্দশনা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাজারের পরিকাঠামোর ত্রুটি পুর প্রশাসনের নজরে এনেছি। আশা করি, প্রশাসন সে দিকে নজর দেবে।’’

Gariahat Municipal Market Calamities Plastic
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy