Advertisement
E-Paper

‘দোষী’ আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অবমাননার মামলা! বিচারপতি মান্থাকে ঘিরে বিক্ষোভ-কাণ্ডে বলল কোর্ট

মঙ্গলবার মামলাটির শুনানি চলাকালীনই তাঁরা আইনজীবীদের চিহ্নিত করার জন্য আদালতের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠান। বিচারপতিরা মেনে নেন, যা হয়েছে, তা অত্যন্ত খারাপ ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:১৭
কোনও আইনজীবী যাতে অকারণে হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার কথা বলেছে হাই কোর্টের বেঞ্চ।

কোনও আইনজীবী যাতে অকারণে হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার কথা বলেছে হাই কোর্টের বেঞ্চ। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

বিশৃঙ্খলাকারী আইনজীবীদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিচার করা হবে বলে জানাল কলকাতা হাই কোর্টে। মঙ্গলবার হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে আইনজীবীদের বিক্ষোভের ঘটনার মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে। সেই বেঞ্চেই শুনানি চলাকালীন মঙ্গলবার এ বিষয়ে মন্তব্য করেন বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখব। কোন কোন আইনজীবী ওই দিনের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন, তা চিহ্নিত করা হবে। নির্দিষ্ট করে তাঁদের বিরুদ্ধেই আদালত অবমাননার মামলা করা হবে।’’

কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি মান্থার আদালত অবমাননা রুল জারির ঘটনায় মঙ্গলবার মামলা ওঠে হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে। তিন বিচারপতির ওই বেঞ্চের সদস্য হিসাবে রয়েছেন, বিচারপতি শিবজ্ঞানম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ। মঙ্গলবার মামলাটির শুনানি চলাকালীনই তাঁরা আইনজীবীদের চিহ্নিত করার জন্য আদালতের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠান। বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট করে কোনও আইনজীবীকে এখনও পর্যন্ত শনাক্ত করা হয়নি। ওই আইনজীবীদের শনাক্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হবে।’’ তবে একই বিচারপতিরা মেনে নেন, ‘‘যা হয়েছে খুবই খারাপ ঘটনা। সবাইকে চিহ্নিত করা দরকার। তবে সেই প্রক্রিয়ায় কোনও ভুল ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হন, তা -ও দেখতে হবে।’’

প্রসঙ্গত, সোমবার থেকেই হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আইনজীবীদের একাংশ। পরে বার কাউন্সিলের সদস্যদের একাংশ বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটেরও ডাক দেন। যার জের চলেছে সোমবারও। মান্থার এজলাসে উপস্থিত হননি রাজ্যের আইনজীবীদের অনেকেই। ফলে থমকে গিয়েছে বহু মামলার শুনানি।

উল্লেখ্য, বিচারপতি মান্থার বিচারাধীন রাজ্যের বেশ কয়েকটি মামলা। তার অনেকগুলি বেশ গুরুত্বপূর্ণও। এই পরিস্থিতিতে আদালত চত্বরে বিচারপতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোয় বিচারপ্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে গত মঙ্গলবার আদালত অবমাননার রুল জারি করেন বিচারপতি মান্থা। যার জেরে মামলা দায়ের হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৩ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।

কলকাতা হাই কোর্ট চত্বরে বিচারপতির বিরুদ্ধে আইনজীবীদের বিক্ষোভ এক সময় হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে ছিল। বিচারপতির নামে পড়েছিল পোস্টার। সেই পোস্টারে লেখা ছিল— ‘‘বিচারপতি মান্থা বিচারপ্রক্রিয়ার কলঙ্ক।’’ এমনকি বিচারপতির ছবির উপর লেখা ছিল ‘লজ্জা’। পরে বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটেরও ডাক দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার, এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন হাইকোর্টের কয়েক জন আইনজীবীই। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সপ্তাংশু বসুর মতো আইনজীবীরা আদালতকে বলেছিলেন, ‘‘যা হচ্ছে তা ভাল হচ্ছে না। বিষয়টি নিন্দনীয়। এ ব্যাপারে আদালত অবমাননার রুল জারি করে বিক্ষোভকারীদের কাছে জবাব চাওয়া উচিত।’’ এর পরই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাই কোর্টে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন বিচারপতি মান্থা। তাঁর বক্তব্য ছিল, তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছেন আইনজীবীদের একাংশ। যা সুষ্ঠু বিচারব্যবস্থার পরিপন্থী।

Calcutta High Court Justice Rajasekhar Mantha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy