—প্রতীকী ছবি।
সোনাগাছির যৌনকর্মীদের দুর্গাপুজোর অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে পুলিশ, পুরসভা ও দমকলকে বৈঠকে বসার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক ওই নির্দেশ দিয়ে জানান, ৩ অগস্ট যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে কলকাতা পুলিশের নর্থ ডিভিশনের সহকারী কমিশনার (২), দমকলের উত্তর কলকাতা ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত অফিসার ও পুরসভার ২ নম্বর বরোর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে বৈঠক করতে হবে। বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হবে, তা আদালতকে ৯ অগস্ট, মামলার পরবর্তী শুনানিতে জানাতে হবে।
বছর কয়েক আগে সোনাগাছিতে দুর্গাপুজো শুরু করেন যৌনকর্মীরা। সেই থেকেই ফি বছর পুজোর অনুমতি নিয়ে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়। আগে প্রতি বার আদালতের নির্দেশে অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। এ বারও অনুমতি নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে ওই সংগঠন। এ দিন শুনানির শুরুতেই বিচারপতি রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদারের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, ‘‘কেন বারবার অনুমতি চাইতে আদালতে আসতে হবে ওই সংগঠনকে।’’ বেলা দু’টোয় ফের মামলার শুনানি ধার্য করেন তিনি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, যৌনপল্লির ভিতরে একটি মন্দিরে পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যৌনকর্মীরা এ বছর নীলমণি মিত্র স্ট্রিট ও মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের সংযোগস্থলের কাছে পুজো করতে চাইছেন। অভ্রতোষবাবু এ দিন আদালতে জানান, পুলিশ ও পুর-কর্তৃপক্ষের মতে সরু রাস্তায় পুজো হলে নাগরিক-দুর্ভোগ বাড়বে। তাই আপত্তি করা হয়েছে। কমপক্ষে ১২ ফুট জায়গা ছাড় দেওয়া না হলে অনুমতি দেওয়া যায় না। তা শুনে বিচারপতি বসাক মন্তব্য করেন, ‘‘শহরের বহু জায়গায় ১২ ফুট ছাড় না দিয়ে পুজো হয়। সেই সব পুজোর তালিকা চেয়ে পাঠাব?’’ দুর্বারের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী ও সোমনাথ রায়চৌধুরী দাবি জানান, যে রাস্তায় পুজো করা হবে, তা ৩৭ ফুট চওড়া। তাই পুলিশ বা পুর-কর্তৃপক্ষের আপত্তির প্রশ্ন ওঠে না।
প্রশাসনের একাংশ বলছেন, পুজোর সময় যৌনপল্লির ভিতরে মণ্ডপ তৈরি করা হলে ভিড় হবে। তার ফলে সমস্যা তৈরি হতে পারে। গোলমাল, অশান্তি এবং তার জেরে বিপদের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই রাস্তায় পুজো করার অনুমতি দিতে চাইছেন না পুলিশ ও পুর-প্রশাসনের কর্তারা। যদিও আদালতের বাইরে অর্পিতাদেবীর যুক্তি, পুজোর সময় কলকাতার কোনও রাস্তা ফাঁকা থাকে না। যদি সেই যুক্তি দেখানো হয় তা হলে তো কলকাতার অর্ধেক নামী পুজোর অনুমতি বাতিল হওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy