প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের সভায় অংশগ্রহণ করে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে সতর্ক করল উচ্চ আদালত। শুক্রবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ শুভেন্দুর উদ্দেশে বলেন, “ভবিষ্যতে যদি কোর্টের নির্দেশ অবমাননা করেন, তা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” শুভেন্দু আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছেন, এই অভিযোগ তুলে বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল রাজ্য।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের বিরুদ্ধে অবস্থানে বসতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের একাংশ। বুধবার বিচারপতি ঘোষ তাঁদের শর্তসাপেক্ষে ধর্নায় বসার অনুমতি দেন। আদালত জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্না চলতে পারে। তবে বিজেপির কোনও পদাধিকারী ওই কর্মসূচিতে থাকতে পারবেন না বলে জানায় আদালত।
বৃহস্পতিবার অবশ্য ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু। অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিকদের ধর্নামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দেশের সেনাকে অপমান করার অভিযোগ তোলেন তিনি। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য। শুভেন্দুর আইনজীবী আদালতে জানান, বিরোধী দলনেতা হাই কোর্টের নির্দেশের বিষয়টি জানতেন না। শুভেন্দু মঞ্চের উপর ওঠেননি বলেও জানান তাঁর আইনজীবী। তার পরে শুভেন্দুকে সতর্ক করেন বিচারপতি ঘোষ।
প্রাক্তন ওই সেনা আধিকারিকদের অভিযোগ ছিল, গত ১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রকাশ্যে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “২০০ লোক ছিল, আমাকে দেখে পালিয়ে গিয়েছে!” ওই মন্তব্যের বিরুদ্ধে তাঁরা ধর্না দিতে চেয়ে আবেদন করেন প্রাক্তন সেনা আধিকারিকেরা। কিন্তু পুলিশ তাঁদের সেই অনুমতি দেয়নি। এর পরেই প্রাক্তন সেনাকর্মী এন মোহন রাও কর্মসূচি করতে চেয়ে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ব্যক্তির কাছ থেকে ওই ধরনের মন্তব্য অপমানজনক। যা ভারতীয় সেনাবাহিনীর মর্যাদা, সম্মানে আঘাত করে।
বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার এবং বাংলা ভাষার অপমানের প্রতিবাদে গান্ধীমূর্তির সামনে নানা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। সেইমতো মঞ্চও বেঁধেছিল বাংলার শাসকদল। কিন্তু সেই প্রতিবাদমঞ্চ খুলে দেন জওয়ানেরা। সেনা দাবি করে, দু’দিনের অনুমতি থাকলেও ময়দান এলাকায় মঞ্চটি প্রায় এক মাস ধরে বাঁধা ছিল। অস্থায়ী ওই কাঠামো সরিয়ে দেওয়ার জন্য আয়োজকদের বেশ কয়েক বার জানানো হয়। কিন্তু তার পরও তা সরানো হয়নি বলে জানায় সেনা। তারা জানায়, কলকাতা পুলিশকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল। তার পরেই সেনা মঞ্চ সরানোর কাজ শুরু করে। যদিও মমতার দাবি ছিল, মঞ্চ সরানোর বিষয়ে কারও সঙ্গে কথা বলা হয়নি।