Advertisement
E-Paper

বাজির প্রতিবাদ করায় ক্যানসার আক্রান্তকে মারধর করলেন একদল যুবক

ওই রাতে ঠিক কী হয়েছিল? পুলিশ জানায়, কালীতলা এলাকার একটি ক্লাবের সামনে বড় পুকুর রয়েছে। পুকুরটির সামনের বাড়িতে সপরিবার থাকেন সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি, তিনি ক্যানসার আক্রান্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪৫
নিগৃহীত: বাড়িতে বসে ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন সন্দীপবাবু। শনিবার, বাঁশদ্রোণীর কালীতলায়। নিজস্ব চিত্র

নিগৃহীত: বাড়িতে বসে ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন সন্দীপবাবু। শনিবার, বাঁশদ্রোণীর কালীতলায়। নিজস্ব চিত্র

বিসর্জনে বাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করায় ক্যানসার আক্রান্ত এক ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারধরের অভিযোগ উঠল একদল যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার বাঁশদ্রোণীর কালীতলায়।

পুলিশ জানায়, প্রহৃত ব্যক্তির স্ত্রী ওই রাতেই স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযুক্তেরাও শনিবার পাল্টা মারধরের অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় একটি ক্লাবের কয়েকজনের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

ওই রাতে ঠিক কী হয়েছিল? পুলিশ জানায়, কালীতলা এলাকার একটি ক্লাবের সামনে বড় পুকুর রয়েছে। পুকুরটির সামনের বাড়িতে সপরিবার থাকেন সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি, তিনি ক্যানসার আক্রান্ত। তাঁর স্ত্রী ছন্দা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ প্রফুল্ল পার্ক এলাকার একটি ক্লাবের যুবকেরা জোরে মাইক বাজিয়ে ওই পুকুরে কালী প্রতিমা বিসর্জন দিতে আসেন। সেই সঙ্গে তাঁরা পরপর বাজি ফাটানোও শুরু করেন।’’

আরও পড়ুন: বাজির মতোই বেলাগাম চলল মাইকের তাণ্ডব

ছন্দাদেবী বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের মাইক বাজাতে ও বাজি ফাটাতে নিষেধ করেন। তিনি যুবকদের জানান, তাঁর স্বামী ক্যানসার আক্রান্ত। কিন্তু প্রফুল্ল পার্ক এলাকার ওই যুবকেরা মহিলার অনুরোধ রাখেননি। বরং আরও বাজি ফাটাতে থাকেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে দেখে ছন্দাদেবীর দুই ছেলে শুভম ও শৌর্য প্রতিবাদ জানাতে গেলে ওই যুবকেরা তাঁদের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। এর পরে সন্দীপবাবু, তাঁর দুই ছেলে ও স্ত্রীকে বাঁচাতে নীচে নেমে আসেন। সন্দীপবাবু এ দিন বলেন, ‘‘ওঁরা কিছুতেই আমার কথা শুনলেন না। উল্টে আমায় মারধর করে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলেন।’’ তাঁর ছেলেদের দাবি, ‘‘যাঁরা মারধর করেছেন, তাঁদের দলে এক সিভিক ভলান্টিয়ারও ছিলেন।’’

যে ক্লাবের সামনের পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হচ্ছিল, সেই ক্লাবের সদস্য পার্থ সেন এ দিন জানান, ছন্দাদেবীর চিৎকার শুনে তিনি ছুটে যান। সেই সময়ে তাঁর পা লক্ষ্য করে কয়েকজন ইট ছোড়েন। সেই আঘাতে তাঁর ডান পায়ের বুড়ো আঙুল থেঁতলে গিয়েছে। ছন্দাদেবী জানান, রাতেই তিনি, তাঁর দুই ছেলে ও পার্থবাবু এম আর বাঙুর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করান ও রিজেন্ট পার্ক থানায় অভিযোগ জানান।

এ দিকে প্রফুল্ল পার্ক এলাকার যে ক্লাবের ছেলেদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা এ দিন পাল্টা অভিযোগ করেছেন ছন্দাদেবীদের বিরুদ্ধে। তাঁরা কয়েকজন এ দিন জানান, তাঁদের পাড়ার ববি মণ্ডল নামে এক কিশোরকে ছন্দাদেবী প্রথমে চড় মারেন। তাতেই উত্তেজনা ছড়ায়। সুকুমার মণ্ডল নামে ওই ক্লাবের এক সদস্য বলেন, ‘‘যে পুকুরে বিসর্জন দিই, সেই পুকুর লাগোয়া ক্লাব কর্তৃপক্ষকে আমরা শুক্রবার সকালে গিয়ে টাকা দিয়ে আসি। কারণ, বিসর্জনের পরে ক্লাবের লোকজনই পুকুর পরিষ্কার করেন। সেই সময়ে আমাদের কেউ জানাননি যে সন্দীপবাবু ক্যানসার আক্রান্ত।’’

কিন্তু ছন্দাদেবী বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে তাঁর স্বামীর অসুস্থতার কথা জানানো সত্ত্বেও কেন ক্লাবের ছেলেরা নিজেদের বাজি ফাটানো থেকে বিরত রাখলেন না, সেই প্রশ্নের অবশ্য জবাব মেলেনি সুকুমার বা তাঁর সঙ্গীদের থেকে।

Crime Regent Park
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy