Advertisement
E-Paper

গাড়ি চুরি করে পালালেন অ্যাপ থেকে নিযুক্ত চালক! তদন্তে নেমে দেশ জুড়ে সক্রিয় চক্রের খোঁজ পেল কলকাতা পুলিশ

ঘটনার সূত্রপাত গত মে মাসে। একটি জনপ্রিয় অ্যাপের মাধ্যমে নিজের সদ্য কেনা স্করপিও গাড়ির জন্য চালক নিয়োগ করেছিলেন হরিদেবপুরের ঠাকুর রোডের বাসিন্দা রাজেশ। মোহিত কুমার নামে ওই চালক মে মাসের ২৯ তারিখে কাজে যোগ দেন। প্রথম দিন তিনেক সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু ২ জুন হঠাৎ রাজেশ দেখেন, তাঁর গাড়ি উধাও!

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ২০:৩৭
ধৃত চার যুবক।

ধৃত চার যুবক। ছবি: সংগৃহীত।

অ‍্যাপের মাধ‍্যমে নতুন গাড়ির চালক নিয়োগ করেছিলেন কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা রাজেশ সিংহ। আর তাতেই বিপত্তি! চাকরিতে যোগ দেওয়ার চার দিনের মাথায় চালক গাড়ি চুরি করে পালিয়ে যান। চলতি মাসের শুরুর সেই ঘটনার তদন্তে নেমে এ বার দিল্লি, বিহার-সহ দেশের একাধিক রাজ‍্যে গাড়ি চুরির সঙ্গে জড়িত চক্রের হদিশ পেল কলকাতা পুলিশ।

ঘটনার সূত্রপাত গত মে মাসে। একটি জনপ্রিয় অ্যাপের মাধ্যমে নিজের সদ্য কেনা স্করপিও গাড়ির জন্য চালক নিয়োগ করেছিলেন হরিদেবপুরের ঠাকুর রোডের বাসিন্দা রাজেশ। মোহিত কুমার নামে ওই চালক মে মাসের ২৯ তারিখে কাজে যোগ দেন। প্রথম দিন তিনেক সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু ২ জুন হঠাৎ রাজেশ দেখেন, তাঁর গাড়ি উধাও! খোঁজ মিলছে না চালকেরও। বার বার ফোন করে দেখা যায়, মোহিতের ফোন বন্ধ রয়েছে। এর পর গাড়িতে থাকা জিপিএসের অবস্থান খতিয়ে দেখে রাজেশ বুঝতে পারেন, কলকাতা থেকে তাঁর নতুন গাড়িটি চলে গিয়েছে সুদূর আসানসোলে! এর পরেই ভবানীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কলকাতার এক হোটেলে এসে উঠেছিলেন মোহিত। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানা যায়, ওই যুবক হোটেলে যা যা পরিচয়পত্র দেখিয়েছিলেন, তার সবই ভুয়ো। এমনকি ‘অভিযান’-এর জন্য একটি পৃথক সিমকার্ডও ব্যবহার করেছিলেন তিনি। শেষমেশ সিসিটিভি ফুটেজ এবং একটি ইউপিআই লেনদেনের সূত্র ধরে অভিযুক্ত চালকের বিষয়ে তথ্য পান তদন্তকারীরা। তদন্তে জানা যায়, ওই যুবক একা নন, গাড়ি চুরির এই চক্রে আরও অনেকে জড়িত। এর পরেই পৃথক দল তৈরি করে আসানসোল, জামশেদপুর-সহ একাধিক এলাকায় হানা দেন তদন্তকারীরা। গত ১০ ও ১১ জুন জামশেদপুরের গোলমুড়িতে একাধিক জায়গায় চিরুনি তল্লাশি চলে। শেষমেশ ১১ জুন ভোরে সিংভূম জেলার সিধগোড়া থানা এলাকা থেকে মোহিতকে গ্রেফতার করা হয়। মোহিতকে জেরায় প্রাপ্ত সূত্রের ভিত্তিতে একে একে ধরা পড়েন তুষার দত্ত ওরফে বুম্বা ওরফে রিটুন, অবিনাশ সিংহ এবং রঘুবীর কুমার। জানা যায়, জামশেদপুরের বাসিন্দা তুষারই ছিলেন গাড়ি চুরির মূল চক্রী। ১৬ জুন বারুইপুর থেকে ধরা পড়েন তিনি। ২ জুন গাড়ি চুরির পর এই তুষার ওরফে বুম্বার হাতেই গাড়িটি তুলে দিয়েছিলেন মোহিত। বুম্বা এর পর গাড়িটি অবিনাশের মারফত তৃতীয় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। অবিনাশকে টানা জেরা করে বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা রঘুবীরের খোঁজ পায় পুলিশ, যাঁর কাছে গাড়িটি বিক্রি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। শনিবার সকালে বারাউনি থেকে রঘুবীরও গ্রেফতার হন।

জেরায় রঘুবীর জানিয়েছেন, চোরাই গাড়ির ব্যবসা করতেন তিনি। চুরি হওয়া স্করপিও গাড়িটিও জলের দামে কিনেছিলেন তিনি। তার পর সুকৌশলে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর বদলে ফেলা হয়। শেষমেশ গাড়িটি বেচে দেওয়া হয় নেপাল সীমান্তের কাছে সীতামারি এলাকার এক গাড়ি ব্যবসায়ীর কাছে। এর পরেই সীতামারি পৌঁছোয় পুলিশের একটি দল। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে চুরি যাওয়া গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চক্র দেশ জুড়ে একাধিক গাড়ি চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত। দিল্লি, বিহার, ছত্তীসগঢ়-সহ নানা রাজ্যের পুলিশ তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে। এর আগে ওই যুবকেরা কী কী গাড়ি চুরি করেছেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেই গা়ড়িগুলিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

Car Theft Racket Kolkata Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy