Advertisement
E-Paper

সাবধানি পা দমকলের

সেই আগুন নেভাতে গিয়ে দোকানের শাটার তুলেই ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন দমকলকর্মীরা। আচমকা বিস্ফোরণে ঝলসে যায় তাঁদের শরীর। সেই ঘটনার পরে আগুন নেভানোয় কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০২:০৮

এ যেন ঠেকে শেখা!

রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ মিডলটন রো-র একটি ব্যাঙ্কের দফতরে আগুন লেগেছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরে দমকলকর্মীরা দেখেন, সার্ভার রুমে আগুন লেগেছে। ঘরের ভিতরে আগুন এবং ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে চারপাশ। এই পরিস্থিতিতে হুড়োহুড়ি করে ঘরে ঢোকেননি দমকলকর্মীরা। বাইরে থেকে ভাল মতো জল ছিটোনোর পরেই ভিতরে ঢুকেছেন তাঁরা।

এ দিন দমকলকর্মীদের এমন আচরণে তাজ্জব বনে গিয়েছেন ঘটনাস্থলে হাজির থাকা অনেকেই। কিন্তু দমকলসূত্রে জানানো হচ্ছে, এমনটাই করা উচিত। তাড়াহুড়ো করতে গেলে ঠিক কী বিপদ হতে পারে, তা সম্প্রতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বড়বাজার এলাকার পর্তুগিজ চার্চ স্ট্রিটের একটি ঘটনা।

কী হয়েছিল সেখানে?

গত ১৭ মে পর্তুগিজ চার্চ স্ট্রিটের একটি রাসায়নিকের গুদামে আগুন লেগেছিল। সেই আগুন নেভাতে গিয়ে দোকানের শাটার তুলেই ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন দমকলকর্মীরা। আচমকা বিস্ফোরণে ঝলসে যায় তাঁদের শরীর। সেই ঘটনার পরে আগুন নেভানোয় কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। প্রাক্তন দমকলকর্তাদের অনেকেই জানিয়েছিলেন, আগুন নেভানোর কৌশলে গলদ থাকার ফলেই বিপত্তি ঘটেছিল। এক প্রাক্তন কর্তার কথায়, ‘‘ওই সময়ে ঘরের ভিতরে কোনও অক্সিজেন ছিল না। দমকলের পরিভাষায় যাকে বলে ‘ব্যাক ড্রট’। ওই অবস্থায় দরজা খুললে একেবারে অনেকটা অক্সিজেন ভিতরে ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটায়।’’ দমকলকর্তাদের মতে, ওই রকম অবস্থায় দরজা খোলার আগে প্রচুর জল ছিটোতে হয়।

এ দিন দমকলের সাবধানী মনোভাব দেখে অনেকেই তাই বলছেন, বিপদে পড়ে ঠেকে শিখেছেন ওঁরা। এই বুদ্ধি আগে প্রয়োগ করা হলে পর্তুগিজ স্ট্রিটে বিপদে পড়তে হতো না দমকলকর্মীদের।

এ দিন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছে সার্ভার রুম এবং পাশের দরজার তালা ভাঙেন কর্মীরা। কিন্তু তার পরেই তাঁদের তড়িঘড়ি ভিতরে ঢুকতে নিষেধ করেন দমকলের ভারপ্রাপ্ত অফিসার। তার বদলে জল ছিটোনো শুরু হয়। বেশ কিছু ক্ষণ এমন চলার পরে দমকলকর্মীরা ভিতরে ঢোকেন। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিল দমকলের চারটি ইঞ্জিন। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।

মিডলটন রো-র একটি দশতলা আবাসনের একতলায় ব্যাঙ্কটির অফিস। ছুটির দুপুরে আগুন লাগার ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। অনেকে ফ্ল্যাট ছেড়ে নীচে নেমে আসেন। ওই আবাসনের বাসিন্দা অনুপ অগ্রবাল বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে দেখেই আতঙ্ক ছড়িয়ে
পড়ে। দমকলকেও আমরাই খবর দিই।’’ ওই ব্যাঙ্কের সিনিয়র ম্যানেজার রাজ গুপ্ত জানান, ওই অফিস থেকে কোনও লেনদেন হয় না। এখানে মূলত ব্যাঙ্কের জোনাল এবং সার্কল অফিস। এখান থেকেই প্রায় চারশোটি শাখাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আগুনে সার্ভারে সংরক্ষিত সমস্ত তথ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।

কী ভাবে আগুন লাগল? দমকলের এক কর্তা জানান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ভাবে তাঁদের সন্দেহ।

Firefighters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy