হরিদেবপুর থানা এলাকায় জলভর্তি টোটোয় বাইকের ধাক্কা মারার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল সুস্মিতা সর্দার নামে এক কিশোরীর। গত মঙ্গলবারের ওই ঘটনায় টোটোচালক এবং মোটরবাইক চালকের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করল হরিদেবপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর ধারাও যুক্ত করা হয়েছে।
গত সোমবার হরিদেবপুর থানা এলাকার জুলপিয়া রোড ধরে চক্রবেড়িয়ার দিকে যাওয়ার সময়ে সজনেবেড়িয়ার কাছে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। একটি মোটরবাইকে চেপে যাচ্ছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী সুস্মিতা। বাইকটি চালাচ্ছিলেন সোনু রজক নামে এক যুবক। এ ছাড়াও বাইকে সওয়ার ছিল রিয়া হালদার নামে আর এক কিশোরী। অভিযোগ, জলভর্তি টোটোটি ড্রাম নামানোর পরে আচমকা কোনও সঙ্কেত না দেখিয়ে ডান দিকে ঘুরতে যায়। সেই সময়ে বেপরোয়া ওই বাইকটি সোজা ধাক্কা মারে টোটোয়। তাতেই ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয় সুস্মিতার। গুরুতর আহত হয় বাকি দু’জন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে এসএসকেএম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই দুর্ঘটনায় সোনুর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। তিনি সুস্থ হলে পুলিশ তাঁকে ডেকে পাঠাবে। অন্য দিকে, টোটোটির চালক এক জন নাবালক। এক পুলিশকর্তা জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে এক জন নাবালক এবং অন্য জন জখম হওয়ায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি। নাবালক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে আবেদন জানানো হবে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার সময়ে টোটোটি কোনও ট্র্যাফিক বিধি না-মেনে চলছিল। তা ছাড়া, ওই রাস্তায় টোটো চলার কথাই নয়। অন্য দিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাইকটির গতিও ছিল অস্বাভাবিক রকমের বেশি। পুলিশের অনুমান, বাইকটির গতি সেই সময়ে ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। এ ছাড়া, বাইক-আরোহী কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। পাশাপাশি, একটি মোটরবাইকে তিন জন উঠেছিলেন, যা আইনবিরুদ্ধ।
এ দিকে, ওই রাস্তায় বেপরোয়া মোটরবাইকের উপদ্রব ঠেকাতে রাস্তার মাঝে হাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। এর জন্য পূর্ত দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। একই সঙ্গে ওই রাস্তার দু’পাশে ক্র্যাশ ব্যারিয়ার বসানো যায় কি না, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই রাস্তায় সিসি ক্যামেরার নজরদারি বাড়ানো যায় কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)