কিডনি চক্রের হদিস পেতে বিহারের গয়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে কলকাতা পুলিশ। পাশাপাশি তদন্তের স্বার্থে মুকুন্দপুরের আর এন টেগোর হাসপাতাল থেকে প্রায় দে়ড় মাসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করবে পুলিশ।
গত ২৪ নভেম্বর আনন্দপুর থেকে চার জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। মাদক পাচারকারী হিসাবে প্রথমে তাদের গ্রেফতার করা হলেও পরে তাদের কাছে কিডনি পাচার চক্রের হদিস মেলে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে আশফাক আহমেদ কিডনি চক্রের মূল চাঁই। তার বা়ড়ি গয়ার ডুমুরিয়ায়। স্নাতক উত্তীর্ণ আশফাক তিন বছর আগে কাজের সূত্রে কলকাতার খিদিরপুরে ভাড়াবাড়িতে বসবাস
শুরু করে।
তদন্তকারীরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই মাদক পাচার চক্রের পাশাপাশি কিডনি পাচার চক্রেও জড়িত আশফাক। আনন্দপুরে ধৃতের কাছে প্রায় ৩১৬ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় চার লক্ষ টাকা। আশফাক ছাড়াও বাকি তিন ধৃত তেহরুল ইসলাম, বৈদ্যনাথ বর্মণ এবং জ্যোৎস্না বেগমের বাড়ি যথাক্রমে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ, রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর। আশফাককে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, মূলত গয়া থেকেই কিডনি পাচার চক্রের কাজ চলত। আশফাক পাচার চক্রের প্রধান ‘লিঙ্কম্যান’ হিসাবে কাজ করত।
আশফাক পুলিশকে জানিয়েছে, গত এক বছরে আর এন টেগোর হাসপাতালেই মোট পাঁচশো জন কিডনি দান করেছেন। তাই কিডনি পাচার চক্রে জড়িতদের হদিস পেতে ওই বেসরকারি হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘ঘটনার গুরুত্ব বুঝেই আর এন টেগোর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে গত এক মাসের যাবতীয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেতে আবেদন করব।’’
ধৃত চার জনের মধ্যে আশফাক ছা়ড়া বাকি তিন জন ছিল কিডনি দাতা। ওই তিন জনের বাড়ি উত্তর দিনাজপুর হলেও তারা কেন বিহার থেকে ঘুরপথে ট্রেনে হাওড়া এসেছিল সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এক গোয়েন্দার কথায়, ‘‘ওই তিন কিডনি দাতা বিহার থেকে ঘুরপথে আসায় আমাদের অনুমান, এই চক্র গয়া থেকেই কাজ করছে।’’