Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দাম্পত্য বিবাদে কোলছাড়া শিশু

নিমতার প্রতাপগড়ের বাসিন্দা শোভন বণিক জানাচ্ছেন, ২০১৪ সালে ওই পাড়ারই বাসিন্দা সৌমিতার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। চার বছর পরে সন্তান হয় ওই দম্পতির।

ঠাকুরমার কোলে সেই শিশু। নিজস্ব চিত্র

ঠাকুরমার কোলে সেই শিশু। নিজস্ব চিত্র

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০২:৪৮
Share: Save:

অসুস্থ, ছ’মাসের শিশুকে ফেলে চলে গিয়েছেন মা! এমনই অভিযোগ এনে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন শিশুটির বাবা।

যদিও মায়ের পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, স্বামীর অত্যাচারেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়েছেন তাঁদের মেয়ে। বাবা-মায়ের কলহ এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে আনা একাধিক অভিযোগের মধ্যেই আপাতত ঠাকুরমার কাছে বড় হচ্ছে ছ’মাসের ওই শিশুকন্যা।

ঘটনাটি ঠিক কী?

নিমতার প্রতাপগড়ের বাসিন্দা শোভন বণিক জানাচ্ছেন, ২০১৪ সালে ওই পাড়ারই বাসিন্দা সৌমিতার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। চার বছর পরে সন্তান হয় ওই দম্পতির। কিন্তু জন্মের পর থেকেই শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, তার হৃদ্‌যন্ত্রে ফুটো রয়েছে!

সমস্যা এখানে নয়। শোভনবাবুর অভিযোগ, সারা ক্ষণ মোবাইল ব্যবহার নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর গোলমালের শুরু কয়েক বছর আগে। গোলমালের জেরে তিনি এক সময়ে স্ত্রীর মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করে দেন বলেও দাবি শোভনবাবুর।

তিনি বলেন, ‘‘গত বছর এক বার সৌমিতা বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে ফিরে আসে। গোলমালও মিটে যায়।’’ কিন্তু এরই মধ্যে গত মাসের ৩০ তারিখ সৌমিতার মা মেয়েকে একটি মোবাইল দিয়ে গেলে ফের শুরু হয় অশান্তি। শোভনবাবুর অভিযোগ, ১ জুন বাথরুমে যাওয়ার নাম করে সৌমিতা বাড়ি থেকে চলে যান। তাঁর আরও অভিযোগ, শ্বশুরবাড়িতে গেলেও স্ত্রীর সঙ্গে তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে তাঁদের অসুস্থ মেয়ে মায়ের দুধ ছাড়াই বড় হচ্ছে।

যদিও শোভনবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে সৌমিতার পরিবার স্বামী এবং শাশুড়ি সীমা বণিকের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের পাল্টা অভিযোগ এনেছেন। সৌমিতার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কুন্তল চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি নিজেকে বারাসত আদালতের আইনজীবী ও সৌমিতার কাকা পরিচয় দিয়ে জানান, সৌমিতা বা তাঁর মায়ের সঙ্গে তিনি কোনও কথা বলতে দেবেন না।

কুন্তলবাবুর পাল্টা অভিযোগ, শোভনবাবু এবং সীমাদেবী মিলে ভাইঝিকে মারধর করেছেন বলেই সৌমিতা চলে এসেছেন। কিন্তু অসুস্থ মেয়েকে কেন সৌমিতা নিজের কাছে রাখছেন না? কুন্তলবাবুর জবাব, ‘‘আমরা এখনই শিশুটিকে আনার প্রয়োজনবোধ করছি না।’’

শোভনবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যেটুকু মনোমালিন্য হয়, তা-ই হয়েছে।’’ বধূ নির্যাতনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শোভনবাবুদের পড়শি রূপা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘৩০ তারিখ গোলমাল হওয়ার সময়ে সৌমিতার শাশুড়ি আমাদের ডেকে এনেছিলেন। আমি এসে ওঁদের বোঝাই, বাচ্চাটির মুখের দিকে তাকিয়ে দু’জনেই যেন মাথা ঠান্ডা রাখে। সেই মুহূর্তে সব মিটে যায়।’’ গত কয়েক বছরে সৌমিতার উপরে কোনও নির্যাতন নজরে পড়েনি বলেও জানিয়েছেন রূপা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

marital dispute Parents baby
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE