Advertisement
E-Paper

কলকাতায় তৃণমূলের কোন্দল নামল রাস্তায়, শান্তনু-অতীন অনুগামীদের সংঘাত! সেনের দুয়ারে বিক্ষোভ, থানায় দু’পক্ষ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়। অতীনের অনুগামীদের দাবি, দলের এক প্রবীণ কর্মীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। সেখানে ছিলেন শান্তনুর স্ত্রী তথা ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাকলি সেনও। শান্তনু-অনুগামীদের পাল্টা দাবি, বিধায়কের অনুগামীরা তাঁদের তিন জনকে মারধর করেছেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ১৪:০৭
Clash between suspended TMC leader Santanu Sen and MLA Atin Ghosh\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s group, complaint lodged at police station

(বাঁ দিকে) শান্তনু সেন, অতীন ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা শহরে তৃণমূলের দুই নেতার অনুগামীদের কোন্দল নেমে এল রাস্তায়। বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় চলা সেই সংঘাত রাতে বড় আকার নেয়, যা নিয়ন্ত্রণে নামতে হয় পুলিশকে। উত্তর কলকাতার সিঁথি এলাকায় ডেপুটি মেয়র তথা কাশীপুর-বেলগাছিয়ার বিধায়ক অতীন ঘোষের অনুগামীদের সঙ্গে প্রাক্তন সাংসদ তথা নিলম্বিত (সাসপেন্ডেড) তৃণমূল নেতা শান্তনু সেনের অনুগামীদের কোন্দল এবং সংঘাতের বিভিন্ন ভিডিয়ো যে ভাবে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্বও।

কী হয়েছে বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত? প্রতিক্রিয়া জানার জন্য অতীনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি মোবাইলে পাঠানো বার্তারও। অতীন জবাব দিলে তা এই প্রতিবেদনে যুক্ত করা হবে। আর শান্তনুর বক্তব্য, ‘‘আমি এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলব না। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আমার প্রশাসনের উপর আস্থা রয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে বুধবার কী হয়েছিল, কারা এসেছিল।’’ সূত্রের খবর, অতীন-অনুগামীরাও থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শান্তনুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। যদিও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়। অতীন-অনুগামীদের দাবি, দলের এক প্রবীণ কর্মীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। সেখানে ছিলেন শান্তনুর স্ত্রী তথা ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাকলি সেনও। আবার শান্তনুর অনুগামীদের পাল্টা দাবি, বিধায়কের অনুগামীরা তাঁদের তিন জনকে মারধর করেছেন। শান্তনুর অনুগামীদের এ-ও অভিযোগ যে, ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লোক নিয়ে এসে সেনবাড়ির সামনে বুধবার রাতে হুজ্জুতি করা হয়েছে।

সমাজমাধ্যমে ওই ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শান্তুনুর বাড়ির সামনে একদল লোক বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। রয়েছেন বেশ কয়েক জন মহিলাও। সেখানেই স্লোগান শোনা যাচ্ছে, ‘‘লোকসভা ভোটে বিজেপি-কে জেতানোর প্রচার করেছিলে কেন? শান্তনু সেন জবাব দাও!’’ বিক্ষোভ সামাল দিতে শান্তনুর বাড়ির সামনে পৌঁছোয় সিঁথি থানার পুলিশ। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বেশি রাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কোনও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। তবে অতীন- অনুগামীদের অভিযোগ, শান্তনুর ‘বাহিনী’ ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন বিষয়ে নাক গলাচ্ছে। এটা হওয়ারই ছিল। পাল্টা সেনদম্পতির ঘনিষ্ঠদের দাবি, গত এক বছর ধরেই অতীনের অনুগামীরা পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করার চেষ্টা করছেন। প্রসঙ্গত, গত বছর আরজি কর-পর্বে শান্তনুকে দল থেকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। এখনও তিনি নিলম্বিত নেতা। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেও নানা ভাবে দূরত্ব রচনা করেছে দল।

কয়েক মাস আগে পুরসভার একটি অনুষ্ঠানে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সামনে কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছিলেন এই দুই নেতার গোষ্ঠীর লোকজন। তবে এ বারের ঘটনা অতীতের সব ঘটনা ছাপিয়ে গিয়েছে বলেই অভিমত দলের অনেকের। উল্লেখ্য, উত্তর কলকাতার তৃণমূলে সব যে ‘স্বাভাবিক’ নেই, তা নিয়ে দলের মধ্যেই আলোচনা রয়েছে। দলের একাংশের বক্তব্য, সে কারণেই কাউকে সভাপতি না-করে জেলা সংগঠনে কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঔপচারিক ভাবে চেয়ারম্যান হিসাবে রাখা হয়েছে প্রবীণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আবার গত দুই-আড়াই মাসে কোর কমিটি পরিচালনা নিয়েও সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ জমছে। ২১ জুলাই বার্ষিক সভার প্রস্তুতিতে যে ভাবে কোর কমিটিতে আলোচনা না-করে এবং সকলকে না-ডেকে বিভিন্ন কর্মসূচি হয়েছে, তা নিয়ে একান্ত আলোচনায় ক্ষোভ জানাচ্ছেন কেউ কেউ। তার মধ্যেই ঘোষ বনাম সেনগোষ্ঠীর সংঘাত নেমে এল রাস্তায়। নামতে হল পুলিশকে।

Santanu Sen Atin Ghosh TMC Inner Conflict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy