Advertisement
১০ মে ২০২৪
Fisherman

বন্ধ সরকারি প্রকল্প, আর্থিক সঙ্কটে রাজ্যের মৎস্যজীবীরা

মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া মিলিয়ে রাজ্যে মোট সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ।

 উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া মিলিয়ে রাজ্যে মোট সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ।

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া মিলিয়ে রাজ্যে মোট সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ। প্রতীকী চিত্র

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:২৯
Share: Save:

ইলিশের প্রজননের জন্য বছরে দু’মাস সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই সময়ে মৎস্যজীবীদের সাহায্য করতে একটি বিশেষ সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের অর্থের জোগান দেওয়া হত। কিন্তু মৎস্যজীবীদের বড় ভরসা সেই ‘সঞ্চয় ও প্রাণ প্রকল্প’টি পাঁচ বছর ধরে বন্ধ। ফলে বিপাকে পড়েছেন প্রায় পাঁচ লক্ষ মৎস্যজীবী। করোনা-কালে লকডাউনের সময়ে সমুদ্রে না যেতে পেরে আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন অনেকে।

মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া মিলিয়ে রাজ্যে মোট সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ। বছরের অন্যান্য সময়ে ওই সমস্ত মৎস্যজীবী সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলেও ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন— এই সময়ে তাঁরা ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে পাড়ি জমাতে পারেন না। তার কারণ, সেটা ইলিশের প্রজননের সময়। মৎস্যবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রজননের সময়ে ইলিশ মাছ এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে। ওই দু’মাস যাতে নির্বিঘ্নে ইলিশের প্রজনন হতে পারে, তাই তখন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিষিদ্ধ। সেই সময়ে ওই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের থেকে আর্থিক সাহায্য পেতেন মৎস্যজীবীরা।

ওই প্রকল্প অনুযায়ী, প্রতি মৎস্য চাষি বছরের ১০ মাস রাজ্য মৎস্য দফতরে ৩০০ টাকা জমা করতেন (প্রতি মাসে ৩০ টাকা করে)। সেই সঙ্গে ওই মৎস্যজীবীর নামে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার জমা করত ৬০০ টাকা করে। কিন্তু পাঁচ বছর আগে ওই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে চরম আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন গরিব মৎস্যজীবীরা। কাকদ্বীপের বাসিন্দা, কার্তিক দাস নামে এক মৎস্যজীবী বলছেন, ‘‘লকডাউনের জন্য দীর্ঘ দিন আমরা ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে যেতে পারিনি। ওই প্রকল্পটি চালু থাকলে এই কঠিন সময়ে আমাদের কাজে লাগত।’’ আর এক মৎস্যজীবী শ্যামল দাসের কথায়, ‘‘করোনার মরসুমে ওই প্রকল্প চালু থাকা ভীষণই প্রয়োজন ছিল।’’ স্টেট ফিশারিজ় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘দু’মাসের ওই ব্যান পিরিয়ডে ওই প্রকল্পটি চালু থাকলে লক্ষ লক্ষ গরিব মৎস্যজীবী উপকৃত হতেন। প্রকল্পটি যাতে দ্রুত চালু করা যায়, সে জন্য মৎস্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’’

কেন বন্ধ এই ‘সঞ্চয় ও ত্রাণ প্রকল্প’? দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) জয়ন্তকুমার প্রধান বলছেন, ‘‘কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় ওই প্রকল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ তবে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের স্বার্থে ওই প্রকল্প যাতে অবিলম্বে চালু করা যায়, সে বিষয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছি। ওই প্রকল্পের বিকল্প আমরা কী ভাবে চালাতে পারি, তারও ভাবনাচিন্তা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

west bengal Fisherman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE