Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

সংক্রমণ কম, সেই স্বস্তিতেও থাকছে কাঁটা

গত বছরের জুন মাসের শুরুতে কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যত ছিল, এ বছর ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আক্রান্তের সংখ্যাটা তার কাছাকাছি।

গত দু’সপ্তাহে সংখ্যাটা যে ভাবে ওঠানামা করছে, তাতে বিপদ বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে ষোলো আনা।

গত দু’সপ্তাহে সংখ্যাটা যে ভাবে ওঠানামা করছে, তাতে বিপদ বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে ষোলো আনা। প্রতীকী চিত্র

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:২২
Share: Save:

সংক্রমিতের সংখ্যা কমছে। কিন্তু তাতে বিপদ কমছে কি?

বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে এই প্রশ্নই। তাঁরা বলছেন, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমছে ঠিকই, কিন্তু গত দু’সপ্তাহে সংখ্যাটা যে ভাবে ওঠানামা করছে, তাতে বিপদ বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে ষোলো আনা। জানুয়ারি থেকে আক্রান্তের সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে কমার পরেও গত কয়েক দিনে ফের বেড়ে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালে।

গত বছরের জুন মাসের শুরুতে কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যত ছিল, এ বছর ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আক্রান্তের সংখ্যাটা তার কাছাকাছি। কিন্তু, অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা সেই সময়ের থেকে এখন বেশি। অর্থাৎ, সুস্থতার হার জুন মাসের তুলনায় কম। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, অতিরিক্ত গা-ছাড়া মনোভাবই ফের বিপদ ডাকছে।

ব্যারাকপুর থেকে বারাসত, এমনকি, খাস কলকাতাতেও মাস্ক না পরাই কার্যত দস্তুর হয়ে গিয়েছে। গণপরিবহণেও এ নিয়ে নজরদারি নেই বলে অভিযোগ। এ দিকে, করোনার নতুন স্ট্রেন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। মহারাষ্ট্রে নতুন করে দুই জেলায় লকডাউন হয়েছে। কেরলে আক্রান্তের হারও চিন্তায় ফেলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে।

এরই মধ্যে এই রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের পরিসংখ্যান যে স্বস্তি এনেছিল, একটু সাবধানে চলাফেরা করলেই তা বজায় থাকবে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কারণ, গত মে মাসের পরে এই প্রথম কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা এক হাজারের কাছাকাছি রয়েছে। উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।

গত ১ অগস্ট কলকাতায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৪৮৫। কাছাকাছি ছিল উত্তর ২৪ পরগনাও। ১ সেপ্টেম্বরে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যায় উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়িয়ে গিয়েছিল কলকাতাকে। উত্তর ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ছিল ৪৮৭৬। আর কলকাতায় ৪৬৯০ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ওই সময়ে দেড় হাজারের কাছাকাছি ছিল।

পুজোর পরে অনেকটা বেড়ে গেলেও ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এই তিন জেলায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে। ১ ডিসেম্বর কলকাতায় অ্যাক্টিভ রোগী ছিলেন ৬২৯০ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৮৫৯ জন। কিন্তু ১ জানুয়ারি কলকাতায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬৯০ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় তা দু’হাজারের নীচে নেমে আসে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ওই সংখ্যা ছিল ২৫৩।

এর পরে আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকে তিন জেলাতেই। ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ১১০৮ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় তা নেমে যায় হাজারের নীচে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংখ্যাটা ছিল ২১৬। রাজ্যের এক স্বাস্থ্যকর্তা বলছেন, “এই তথ্য নিশ্চিত ভাবে স্বস্তির। কিন্তু, গত কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ১৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় নতুন করে আক্রান্ত হন ৪৪ জন। আগের কয়েক দিনেও সংখ্যাটা একই রকম ছিল। কিন্তু ১৮ ফেব্রুয়ারি আক্রান্ত হন ৭৯ জন। পরের কয়েক দিনেও আক্রান্তের সংখ্যা ঘোরাফেরা করেছে ৭০-এর আশপাশে। অন্য দিকে, উত্তর ২৪ পরগনাতেও গত দশ দিনে আক্রান্তের সংখ্যার হেরফের হয়েছে। কোনও দিন আক্রান্ত হচ্ছেন ৩৯ জন। আবার পরের দিনেই সেই সংখ্যা ৬০ ছাড়াচ্ছে। বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার সময় আসেনি। অসচেতন হলে ফের তার মাসুল দিতে হবে। তাই সব বিধি মেনে চলতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Coronavirus COVID 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE