E-Paper

নতুন কৌশলে সাইবার জালিয়াতি, চালানো হচ্ছে বিদেশ থেকেও

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু শুল্ক দফতরের নাম করে নয়, ইদানীং ডাক বিভাগের নাম করেও সাইবার প্রতারণার ঘটনা ঘটছে শহরে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে লালবাজারের সাইবার বিভাগে।

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৭:৩৩

—প্রতীকী চিত্র।

অচেনা নম্বর থেকে ফোন। অপর প্রান্ত থেকে ভারী গলায় কেউ বলল, ‘‘কাস্টমস অফিসে আপনার নামে একটি পার্সেল ধরা পড়েছে। তাতে রয়েছে নিষিদ্ধ বস্তু। দু’ঘণ্টার মধ্যে আপনার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে।’’ তা হলে উপায়? ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তিই এ বার ‘সঙ্কট’ থেকে মুক্তির পথ বাতলে জানাল, গ্রেফতারি এড়াতে ওই তরুণীকে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য জানাতে হবে। সেই সব তথ্য না দিলে পরিণতি যে ভাল হবে না, এমন কথা বলে ভয়ও দেখাল সে।

দিন চারেক আগে এমনই একটি ফোন পেয়েছিলেন এক তরুণী। তবে, ফোন করা ব্যক্তি যে জালিয়াত, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি তাঁর। তাই সরাসরি লালবাজারের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী। সেখানকার সাইবার বিভাগের কর্তারাও তাঁকে আশ্বস্ত করে জানান, ওই ভাবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা যায় না। তরুণীকে সাইবার বিভাগে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন তাঁরা। ওই তরুণীর কথায়, ‘‘গোটা বিষয়টি এমন ভাবে হয়েছিল যে, ভয় পেয়ে অনেকেই হয়তো নিজের সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে দেবেন। আমিও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে কিছুটা সন্দেহ হওয়ায় সরাসরি লালবাজারের সাইবার বিভাগে ফোন করি।’’

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু শুল্ক দফতরের নাম করে নয়, ইদানীং ডাক বিভাগের নাম করেও সাইবার প্রতারণার ঘটনা ঘটছে শহরে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে লালবাজারের সাইবার বিভাগে। অনেকে আবার ফোন পেয়েই লালবাজারে মেল করে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন। কেউ কেউ আবার মেসেজ পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। মেসেজের প্রাপককে জানানো হচ্ছে, তাঁর নামে দামি একটি পার্সেল এসেছে। কিন্তু ঠিকানা ভুল থাকায় সেটি পৌঁছে দেওয়া যায়নি। ঠিকানা ‘আপডেট’ করার কথা বলে মেসেজের নীচে দেওয়া থাকছে লিঙ্ক। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে সাইবার প্রতারকদের হাতে। এই পদ্ধতিতে সাইবার প্রতারণার একাধিক ঘটনার অভিযোগ ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত হয়েছে লালবাজারে। লালবাজারের কর্তারা সাইবার অপরাধের নতুন এই কৌশল নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন।

সাইবার বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি লালবাজারের পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, এই কৌশলে প্রতারণার জন্য ‘প্রক্সি সার্ভার’ ব্যবহার করছে প্রতারক‌েরা। হংকংয়ে বসে এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা সংঘটিত করা হচ্ছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তবে, হংকংয়ের পাশাপাশি অন্যান্য দেশ থেকেও এই চক্র চালানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রতারকেরা নিজেদের ভৌগোলিক অবস্থান গোপন রাখতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। তাদের সন্ধান পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রতারণার এই নতুন ধরন নিয়ে তদন্ত করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন করার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cyber Crime Fraud Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy