Advertisement
E-Paper

বন্দরে কন্টেনার থেকে দস্তার বদলে মিলল বালি! ধৃত ৩

কন্টেনার ছিল দস্তা বোঝাই। কিন্তু বন্দরে তা খালি করার সময়ে দস্তার জায়গায় মিলল বালি! পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে কন্টেনার থেকে মাল পাচার করার একটি চক্রের সন্ধান মিলেছে। কন্টেনার থেকে প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকার দস্তা চুরি করে বালি রাখার ওই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৬ ২৩:২২

কন্টেনার ছিল দস্তা বোঝাই। কিন্তু বন্দরে তা খালি করার সময়ে দস্তার জায়গায় মিলল বালি!

পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে কন্টেনার থেকে মাল পাচার করার একটি চক্রের সন্ধান মিলেছে। কন্টেনার থেকে প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকার দস্তা চুরি করে বালি রাখার ওই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে উধাও হয়ে যাওয়া দস্তার বেশ কিছু অংশ। ধৃতদের নাম, বাবলু খান ওরফে আবু ইব্রাহিম, সৈইফ আহমেদ ওরফে সুরজ এবং সুরিন্দর মাহাতো। তিন জনকেই শনিবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের পুলিশ হেফাজত দেন।

পুলিশের দাবি, ধৃত বাবলু ওই কন্টেনারের মালিক। সেই চক্রের অন্যতম পাণ্ডা সৈইফ তার পরিচিত। আর হাওড়ার বাসিন্দা সুরিন্দরের গ্যারাজে ওই কন্টেনারটির সিল ভেঙে দস্তা চুরি করা হয়েছিল। তবে পশ্চিম বন্দর থানার পুলিশ জানিয়েছে, চক্রের মূল পাণ্ডা এখনও পলাতক।

পুলিশ জানিয়েছে, মধ্য কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা ইথিওপিয়ায় প্রায় ৫০ টন দস্তার নিরেট বাট সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছিল। সেই মতো ওই সংস্থার তরফে শুল্ক দফতরের অনুমোদিত একটি বেসরকারি ক্লিয়ারিং সংস্থাকে ওই মালটি ইথিওপিয়ায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। যারা একটি পরিবহণ সংস্থাকে ওই দস্তার বাট হাওড়ার গুদাম থেকে নেতাজি সুভাষ ডকে পৌঁছনোর ভার দেয়। দু’টি কন্টেনারে ২৫ মেট্রিক টন করে দস্তার বাট ছিল। এক-একটি কন্টেনারে থাকা দস্তার বাজার মূল্য অন্তত ৫৩ লক্ষ টাকা।

তদন্তকারীরা জানান, ২৪ মে রাতে দু’টি কন্টেনারই রওনা দেয় বন্দরের উদ্দেশে। একটি কন্টেনার পরদিন ডকে পৌঁছে গেলেও অন্যটি পৌঁছয় ২৭ মে। দেরিতে আসা কন্টেনারের সিল অক্ষতই ছিল। কিন্তু ৩০ মে সব পক্ষের সামনে কন্টেনার খোলা হলে দেখা যায়, প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকার দস্তার জায়গায় কন্টেনারে ভর্তি বালি।

লালবাজার সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে পশ্চিম বন্দর থানার পুলিশ দেখতে পায়, কন্টেনারের চালক উধাও। কন্টেনারের মালিক বাবলু খানের কথাতেও মেলে অনেক অসঙ্গতি। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘এর পাশাপাশি স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, বাবলুর এক সঙ্গী গার্ডেনরিচের বাসিন্দা সুরজ কিছু দিন ধরে বেপাত্তা। বাবলু এবং সুরজের বিরুদ্ধে এর আগে কন্টেনার থেকে মাল চুরি করার অভিযোগ থাকায় তাদের দিকে সন্দেহ বাড়ে। শুক্রবার বাবলুকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ভেঙে পড়ে সে।’’

আরও পড়ুন:

মাঝরাতে বাড়ি থেকে ডেকে ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুন মল্লিকবাজারে

পুলিশ জানায়, বাবলুর বাড়ি থেকে মেলে বেশ কিছু দস্তা। পরে হানা দেওয়া হয় সুরজের গার্ডেনরিচের বাড়িতে। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতারের পর ওই রাতে লিলুয়ার চামরাইলে একটি গ্যারাজ থেকে তদন্তকারীরা ধরেন সুরিন্দরকে। তার কাছেও বেশ কিছুটা দস্তা মেলে।

তদন্তকারীদের দাবি, শুল্ক দফতরের অনুমোদিত একটি বেসরকারি ক্লিয়ারিং সংস্থা যে বেসরকারি পরিবহণ সংস্থাকে ওই মালটি বন্দরে পৌঁছতে দিয়েছিল, তাদের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে বাবলুর। মূলত ওই পরিবহণ সংস্থার সঙ্গে যোগসাজস করে বাবলুর নির্দেশে কন্টেনার চালক চামরাইলের গ্যারাজে পৌঁছতেন মালবোঝাই কন্টেনার নিয়ে। সেখানে সুরিন্দর এবং তার দলবল কন্টেনারের সিল ভেঙে মাল অন্য জায়গায় নিয়ে যেত। পরে চোরাই মাল বেশি দামে বিক্রি করা হত। যার ভাগ পেতেন বাবলুরা। পুলিশের দাবি, দস্তা বোঝাই কন্টেনারটির সিল ভেঙে ২৪ তারিখ রাতেই মাল সরানো হয়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শুল্ক দফতরের অনুমোদিত ওই বেসরকারি ক্লিয়ারিং সংস্থা এবং বেসরকারি পরিবহণ সংস্থার ভূমিকা সন্দেহের বাইরে নয়। যে ভাবে কন্টেনার থেকে মাল চুরি করে ফের শুল্ক দফতরের সিল করা হয়েছিল, তা থেকে পরিষ্কার ওই চক্রের সঙ্গে অনেকেই জড়িত। কন্টেনারের চালক এবং চামরাইলের গ্যারাজের মালিককের খোঁজ মিললে অনেক তথ্য মিলবে বলে দাবি পুলিশের।

Kolkata Port Sand Zink Forgery
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy