Advertisement
E-Paper

হিন্দু হস্টেলে মা-কুকুরের মৃত্যু, বিতর্ক

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শৌর্যদীপ মুখোপাধ্যায় এই ঘটনার জন্য ফেসবুকে সরাসরি দায়ী করেছেন অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র আরিয়ান অগ্রহারিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৩১
হিন্দু হস্টেল।—ফাইল চিত্র।

হিন্দু হস্টেল।—ফাইল চিত্র।

পুজোর ছুটির মধ্যে হিন্দু হস্টেলে সদ্য মা-হওয়া একটি কুকুরের মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক ছড়াল। বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে অভিযোগও জানানো হয়েছে।

অভিযোগ, এক আবাসিক ছাত্রের অবহেলায় মৃত্যু হয়েছে জুলি নামে কুকুরটির। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শৌর্যদীপ মুখোপাধ্যায় এই ঘটনার জন্য ফেসবুকে সরাসরি দায়ী করেছেন অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র আরিয়ান অগ্রহারিকে। শৌর্যদীপের অভিযোগ, জুলিকে হস্টেলের ঘরে বন্ধ করে বাড়ি চলে যান আরিয়ান। পরে ঘর থেকে উদ্ধার হয় জুলির দেহ। মৃত্যুর আগে সে দু’টি বাচ্চার জন্ম দেয়। মৃত্যুর সময়ে আরও দু’টি বাচ্চা জুলির গর্ভে ছিল বলে শৌর্যদীপের দাবি।

আরিয়ান বুধবার জানিয়েছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে জুলিকে প্রেসিডেন্সিতে আহত অবস্থায় আনা হয়েছিল। নিরাপদ আশ্রয় ও সুরক্ষার জন্য প্রেসিডেন্সির ‘অ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র সদস্যেরা তাকে হিন্দু হস্টেলে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে জুলির দায়িত্ব কে নেবে, সেই খোঁজ শুরু হলে এগিয়ে আসেন আরিয়ান। যে ঘরে জুলি থাকত সেখানে আরিয়ান ছাড়া আরও তিন আবাসিক থাকেন।

তবে জুলি গর্ভবতী ছিল কি না, সে বিষয়ে ঠিক তথ্য তাঁর কাছে ছিল না বলেই দাবি করেছেন আরিয়ান। তাঁর বক্তব্য, পশুচিকিৎসকও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। জুলিকে দেখে তিনি সেপ্টেম্বরে কিছু ওষুধ খাওয়াতে বলেছিলেন। সেই ওষুধ আরিয়ান খাওয়ান। ২ অক্টোবর দিন সাতেকের ছুটিতে পুরুলিয়ার বাড়িতে যান আরিয়ান। তাঁর দাবি, পশুচিকিৎসক তাঁকে জানিয়েছিলেন, ওই সময়ে ওষুধ না খেলে জুলির অসুবিধা হবে না। তবে জুলিকে যে তিনি রেখে যাচ্ছেন, তা ছাত্রাবাসের নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া আর কাউকে জানিয়ে যাননি ওই ছাত্র।

১০ অক্টোবর পুরুলিয়া থেকে ফেরার পথে এক রুমমেটের থেকে আরিয়ান জানতে পারেন, জুলি মারা গিয়েছে। মৃত্যুর আগে দু’টি সন্তানের জন্ম দিয়েছে। ওই রুমমেট আরও জানান, আরিয়ানের ঘরের দরজা ছিল বাইরে থেকে বন্ধ। জুলির দেহের পাশে ছিল দুই সদ্যোজাত ছানা। তবে আরিয়ানের দাবি, পশু চিকিৎসক বাচ্চা দু’টিকে দেখে জানিয়েছেন ১০ অক্টোবরের আগেই তারা জন্মেছে। রক্ষীদেরও এক জন আরিয়ানকে জানিয়েছেন, ৮ অক্টোবর জুলিকে খাবার দেওয়া হয়েছিল। এর পরে জুলি ঘরের ভিতরে গেলে কেউ বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। তবে জুলির গর্ভে আরও দু’টি সন্তান ছিল, সেই তথ্য মানতে চাননি আরিয়ান।

ওই ছাত্র বলেন, ‘‘জুলির যথাযথ যত্ন আমি করতে পারিনি, এটা আমার ভুল। জুলি যে হস্টেলে আছে, তা আরও কয়েক জনকে জানিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কর্তৃপক্ষ শাস্তি দিলে আমি মেনে নিতে তৈরি। কিন্তু এই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত হোক। কে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করেছিল, তা সামনে আসুক।’’ জুলির দুই সদ্যোজাতেরও অবস্থা ভাল নয় বলে জানিয়েছেন আরিয়ান। গোটা ঘটনা নিয়ে শৌর্যদীপকে বারবার ফোন এবং এসএমএস করা হলেও উত্তর মেলেনি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, আবাসিকেরা হস্টেলে না থাকলে ঘর খোলা রাখার নিয়ম নেই। আরিয়ানের ঘর খোলা দেখে কেউ হয়তো দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সম্ভবত খেয়াল করেননি, জুলি ভিতরে রয়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব স্টুডেন্টস অরুণ মাইতি এ দিন জানান, জুলির মৃত্যু নিয়ে এক পড়ুয়ার অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এ দিনই পুজোর পরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।

Hindu Hostel Presidency University Dog
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy