Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta University

Calcutta University: বিশ্ববিদ্যালয়ে বাউন্সার নিয়োগের অভিযোগ, বিতর্ক

বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২১ ০৫:৩৯
Share: Save:

চলতি মাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট ভেঙে ক্যাম্পাসে ঢুকে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। এর কয়েক দিন পরে ফের ক্যাম্পাসে ঢুকে পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। ওই দুই ঘটনার পরেই নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে ‘বাউন্সার’ নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে।

কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলা ছাত্র-বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিটি’র আহ্বায়ক অনীক দে মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসে বাউন্সার রাখাটা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের পরিপন্থী। বাউন্সার দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রবেশ আটকাতে কর্তৃপক্ষের এই প্রচেষ্টার সমালোচনা করছি।’’ অনীক জানালেন, ইতিমধ্যেই সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়কে তাঁরা তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র পক্ষ থেকেও উপাচার্য, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং রেজিস্ট্রারকে প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রতিবাদ জানিয়েছে এসএফআই-ও। এসএফআই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি সুনেত্রা সমাজপতি বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা মেটাতে পারছেন না। ফর্ম পূরণের সমস্যা মেটানোর ক্ষমতা নেই। এ দিকে ছাত্র-বিক্ষোভ আটকাতে সাজো সাজো রব।’’ তাঁর দাবি, শুধু বাউন্সার নয়, ছাত্রছাত্রীদের আটকাতে বসছে পুলিশি ব্যারিকেডও।

তবে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পুলিশ না ঢোকারই ঐতিহ্য রয়েছে। নিকট অতীতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয় যাওয়ার পরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতেও উপাচার্য সুরঞ্জন দাস পুলিশ ডাকেননি। যাদবপুরে ‘হোক কলরব’ আন্দোলনটাই হয়েছিল তৎকালীন উপাচার্যের পুলিশ ডাকার বিরুদ্ধে। তাই এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ পোস্টিং এবং বাইরে থেকে নিরাপত্তারক্ষী ও বাউন্সার আনার বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে।

বাউন্সার নিয়োগ নিয়ে আপত্তি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদেরও। ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের অফিস ও নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও বাউন্সারের প্রয়োজন কী? আমাদের আশঙ্কা, আগামী দিনে কর্মচারী-শিক্ষক আন্দোলনের উপরেও এমন দমন-পীড়ন নেমে আসতে পারে।’’

উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘বাউন্সার কী, তা জানি না। ছাত্রেরা গেট ভেঙে ঢুকে পড়ছে, এক নিরাপত্তাকর্মীর হাত ভেঙেছে। ছাত্রেরা কন্ট্রোলারের ঘরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। কন্ট্রোলার বলছেন, তিনি বিপন্ন বোধ করছেন।’’ উপাচার্য জানান, এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা সংস্থাকে অনুরোধ করায় তারাই শক্তসবল ছ’জন নিরাপত্তাকর্মীকে পাঠিয়েছে। তাঁর আরও বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পুলিশ পোস্ট নেই। তারা টহল দিয়ে চলে যায়। তাঁর দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বেসরকারি এজেন্সির রক্ষীরা রয়েছেন।

রাজ্যের শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) অবশ্য মনে করছে, নিরাপত্তার স্বার্থে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো ঠিক সিদ্ধান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি নেতা অভিরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা শান্তির পক্ষে। কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখুন, সেটাই চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta University Bouncer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE