Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

coronavirus: দুর্ভোগের দায় কার, প্রশ্ন ক্ষুব্ধ রেল যাত্রীদের

সংক্রমণ রুখতে রবিবার রাজ্য সরকার আরোপ করেছিল একাধিক বিধিনিষেধ। জানানো হয়েছিল, লোকাল ট্রেন চলবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত।

সকালের ব্যস্ত সময়ে বাস ধরার ভিড় হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন স্ট্যান্ডে। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

সকালের ব্যস্ত সময়ে বাস ধরার ভিড় হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন স্ট্যান্ডে। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৫
Share: Save:

দমবন্ধ করা ভিড় লোকালের কামরায়। তিন জনের আসনে গাদাগাদি করে বসে চার জন। দরজায় ঝুলছেন জনাকয়েক। তাঁদের ঠেলে ট্রেনের ভিতরে পা গলানোর চেষ্টা করছেন কয়েক জন। প্রায় কারও মুখেই মাস্কের বালাই নেই। সাতটার ‘শেষ’ ট্রেন ধরার তাড়ায় স্টেশনে থিকথিক করছে ভিড়। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে ভিড়ের এমনই ছবির সাক্ষী থেকেছে শহর ও শহরতলির একাধিক স্টেশন। ভিড়ের চাপে অবশ্য এ দিন সন্ধ্যায় শেষ ট্রেন ছাড়ার সময় সাতটা থেকে পিছিয়ে দশটা করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ভিড় সামলাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সারা দিনের ভোগান্তির জন্য দায়ী কে? এক যাত্রী বলেন, ‘‘এ ভাবে লোকাল ট্রেনে কোপ না মেরে প্রশাসনের উচিত মেলা-উৎসবের মতো ভিড়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করা।’’

সংক্রমণ রুখতে রবিবার রাজ্য সরকার আরোপ করেছিল একাধিক বিধিনিষেধ। জানানো হয়েছিল, লোকাল ট্রেন চলবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত। যাত্রীদের প্রশ্ন ছিল, ‘‘সকলের কাজ তো সাতটার মধ্যে শেষ হয় না। তাঁরা কী করে ফিরবেন?’’ এ দিন সন্ধ্যা সাতটার ‘শেষ’ ট্রেন ধরতে বিভিন্ন স্টেশনে তাই বিপুল ভিড় হয়েছিল। শিয়ালদহ, হাওড়া, বালিগঞ্জ, বিধাননগর, দমদম-সহ একাধিক স্টেশনে বিকেলের পর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে। ভিড়ের চাপে অনেকে পর পর কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। অনেকে আবার বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। স্টেশনে স্টেশনে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। এ দিকে, ভিড়ের চাপে কার্যত বাধ্য হয়েই সাতটার পরিবর্তে রাত দশটায় শেষ ট্রেন ছাড়বে বলে জানানো হয়। সরকারি এই সিদ্ধান্তে ভিড় কিছুটা সামলানো গেলেও ভোগান্তি নিয়ে সরব নিত্যযাত্রীদের একাংশ। অনেকেরই দাবি, ‘‘দশটা পর্যন্ত নয়, পুরনো নিয়মেই ট্রেন চালানো হোক।’’

শিয়ালদহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে বিরাটির বাসিন্দা সুমন্ত পোদ্দার বললেন, ‘‘প্রথমে সাতটা, পরে শুনলাম দশটা। দিনভর যে ভোগান্তি হল, তার দায় কে নেবে? স্টেশনে স্টেশনে এই ভিড়ের কারণে সংক্রমণ যে আরও বাড়বে না, তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবেন? সরকারের আরও দূরদর্শী হওয়া উচিত।’’ বিধাননগর স্টেশনে শ্যামনগরের বাসিন্দা ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এ তো সংক্রমণ আরও বাড়ানোর তোড়জোড়। স্টেশন তো নয়, যেন বড়দিনের পার্ক স্ট্রিট! যেখানে ট্রেন বাড়িয়ে ভিড় কমানোর কথা, সেখানে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ফেরার জন্য এই হুড়োহুড়ি তো হবেই।’’ বারাসতের বাসিন্দা শুভ্র সাহার কথায়, ‘‘ট্রেনের জন্য ভিড়ের মধ্যে দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে শেষে ট্যাক্সিতে ফিরলাম। সুযোগ বুঝে ট্যাক্সিওয়ালা বিশাল ভাড়া হাঁকলেন। বাড়ি ফিরে শুনছি, ট্রেন ১০টা পর্যন্ত চলবে।’’ বালি থেকে আসা প্রণয় হালদারের মতে, ‘‘দশটা পর্যন্ত কেন, আগের নিয়মেই ট্রেন চালানো উচিত। তাতেই বরং ভিড় নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কাল রাত দশটাতেও যে একই জিনিস হবে না, তা কে বলতে পারে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID19 Railway Service
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE