প্রতীকী ছবি।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভার কমাতে এ বার ৫০০ শয্যার সেফ হোম তৈরি হল হাওড়ায়। মেডিক্যালে গিয়ে শয্যার অভাবে ভর্তি হতে না-পেরে আর কোনও রোগী যাতে মারা না যান এবং কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও সেখানে যাতে শয্যা দখল করে কেউ না থাকেন, তা নিশ্চিত করতেই হাওড়ার বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালের অ্যানেক্স ভবনে গড়ে তোলা হয়েছে ওই সেফ হোম। কিছুটা সুস্থ হলেই সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে কোভিড রোগীদের।
এ দিকে, হাওড়ায় করোনা সংক্রমণ রোজ বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন ওই জেলার কোভিড হাসপাতালগুলিতে শয্যা কী ভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে চিন্তা শুরু করেছে। বাড়ানো হচ্ছে কোভিড পরীক্ষাও।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, যে কোভিড আক্রান্তেরা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি আছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেই বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে। রোগীদের মধ্যে যাঁরা উপসর্গহীন এবং যাঁদের টানা তিন দিন জ্বর আসেনি ও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিকঠাক আছে, তাঁদেরই বালিটিকুরিতে নিয়ে আসা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই ধরনের ১৫ জন রোগীকে নিয়ে এসে সেখানে ভর্তি করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, শুধুমাত্র করোনায় গুরুতর অসুস্থদেরই কোভিড হাসপাতালে রাখা হবে। বাকিদের প্রয়োজনে সেফ হোমে পাঠানো হবে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘এখন থেকে ঠিক হয়েছে, উপসর্গহীন রোগীদের ক্ষেত্রে দু’রকম বিকল্প খোলা রাখা হবে। শারীরিক পরীক্ষা করার পরে কিছু রোগীকে হোম আইসোলেশনে পাঠানো হবে। বাকিদের সেফ হোমে পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। প্রয়োজনে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, বিভিন্ন জায়গা থেকে কোভিড রোগীরা যাচ্ছেন বলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শয্যা ফাঁকা থাকছে না। এই চাপ কমাতেই এমন সিদ্ধান্ত। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ওই কর্তা বলেন, ‘‘বালিটিকুরি সেফ হোমে ভর্তির ক্ষেত্রে রোগী হাওড়া না কলকাতার, তা আমরা দেখছি না। যে কোনও জায়গা থেকে রোগী এলেই চিকিৎসা পাবেন।’’
অন্য দিকে, কড়া লকডাউন চলার মধ্যেই গত সাত দিনে এক হাজারেরও বেশি মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাওড়ার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রোগীর সংখ্যা এ ভাবে বাড়তে থাকায় হাসপাতালগুলিতে এখন শয্যা ফাঁকা পাওয়াই মুশকিল। বৃহস্পতিবারই ১৮৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, আগামী কয়েক দিনে এই সংখ্যা দ্বিগুণ বা তারও বেশি হবে। কারণ, দিনপিছু কোভিড পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে ৬০০ করা হয়েছে। শীঘ্রই তা এক হাজার করা হবে। সেই সঙ্গে হাওড়ায় যে সাতটি কোভিড হাসপাতাল আছে, সেগুলিতে শয্যা-সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। কারণ, গত সাত দিনের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বেসরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে সঞ্জীবনে ৩০০টির মধ্যে ২৮২টি শয্যা ভর্তি, গোলাবাড়ি আইএলএসে ৮৮টির মধ্যে সব ক’টিই ভর্তি। সত্যবালা আইডি-তে ২৫টির মধ্যে ১০টি ভর্তি। আর বালিটিকুরি ইএসআই কোভিড হাসপাতালে ২৩০টির মধ্যে ভর্তি ১৫৬টি শয্যা। টিএল জয়সওয়ালে ২৩০টি মধ্যে এখন খালি মাত্র ৩০টি শয্যা। উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে ২১৬টি শয্যার মধ্যে ১৫৬টি ভর্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy