প্রতীকী ছবি।
সোমবার সকালে শেষ বারের মতো প্রৌঢ়কে দেখেছিলেন প্রতিবেশীরা। দু’দিন ধরে বাড়ি থেকে তাঁকে বেরোতে না দেখে সন্দেহ হয়েছিল তাঁদের। বুধবার সন্ধ্যায় খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ ঘরে ঢুকে দেখে, মৃত অবস্থায় ঘরেই পড়ে রয়েছেন সেই প্রৌঢ়। আর তাঁর দেহ আগলে পাশেই ছিলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত বৃদ্ধা মা। সামান্য হাত-পা নড়ছিল বৃদ্ধার। কিন্তু এর বেশি নড়ার ক্ষমতা না থাকায় কাউকেই ডাকতে পারেননি তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম কমল দে (৫৩)।
ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা পুরসভার ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ঠাকুরপুকুরের চন্দ্রপল্লি এলাকায়। পুলিশ ও পুরকর্মীরা রাতেই দেহটি উদ্ধার করেন এবং বৃদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কখনও কোভিড রোগীর দেহ দীর্ঘক্ষণ বাড়িতে পড়ে থাকার ঘটনা ঘটছে। কখনও আবার অ্যাম্বুল্যান্স বা অক্সিজেন না মেলার অভিযোগও উঠেছে। সেই তালিকায় আরও একটি সংযোজন চন্দ্রপল্লি এলাকার এই ঘটনা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, ওই বাড়িতে বছর পঁচাত্তরের বৃদ্ধা দুর্গারানি দে-র সঙ্গে থাকতেন তাঁর ছেলে কমলবাবু। তিনি ছোটখাটো কাজ করতেন। সম্প্রতি তিনি কয়েক জনকে জানিয়েছিলেন যে, তাঁরা মা ও ছেলে করোনায় আক্রান্ত। তার পরে পুরসভা থেকে বাড়ি জীবাণুমুক্ত করার কাজও হয়। সোমবার সকালে কমলবাবুর প্রতিবেশীরা শেষ বার তাঁকে বাড়ি থেকে বেরোতে দেখেন। তার পর থেকে দরজা-জানলা বন্ধই ছিল। এতেই সন্দেহ গাঢ় হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। বুধবার তাঁরা পুলিশে খবর দেন।
বৃদ্ধার অন্য দুই ছেলে আলাদা থাকেন। খবর দেওয়া হয় তাঁদের। এক ভাই চলেও আসেন। স্থানীয়দের একাংশ জানাচ্ছেন, তাঁর উপস্থিতিতে ওই রাতেই পুলিশ দরজা ভেঙে ঢোকে। দেখা যায়, কমলবাবুর দেহ পড়ে রয়েছে। পাশেই শুয়ে আছেন বৃদ্ধা।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, খবর দেওয়ার পরেও ৬-৭ ঘণ্টা সময় লেগেছে দেহটি সরাতে। স্থানীয় পুর কোঅর্ডিনেটর ঘনশ্রী বাগ জানান, দু’দিন ধরে ওই বাড়ি থেকে কাউকে বেরোতে দেখা যাচ্ছিল না। বুধবার কমলের এক ভাইকে খবর দিলে তিনি চলে আসেন। তাঁর উপস্থিতিতেই ঢোকে পুলিশ। কিন্তু প্রৌঢ়ের তত ক্ষণে মৃত্যু হয়েছে। বৃদ্ধাকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ সবের পরে ডেথ সার্টিফিকেট জোগাড় করে দেহ সৎকারের জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়। এতেই কিছুটা সময় লেগেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy